Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সেন্টমার্টিন না গিয়ে পতেঙ্গায় ফিরল বে-ওয়ান

গভীর রাতে ইঞ্জিনে আগুন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:২৩ এএম

মধ্যরাতে মাঝ সাগরে অগ্নিকাণ্ডের পর সেন্ট মার্টিন না গিয়ে ১৩ ঘণ্টা পর পতেঙ্গায় ফিরে এলো প্রমোদ তরী বে-ওয়ান ক্রুজ। জাহাজটির একটি ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় সেটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের শক্তিশালী টাগবোট ‘কাণ্ডারী ১০’ পাহারা দিয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুরে পতেঙ্গায় নিয়ে আসে। সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।

তার আগে বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৭ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সাগরে জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে আগুন লাগে। তখন থেকে জাহাজটি সাগরে নোঙর করা হয়। দ্রুত সময়ে আগুন নিভিয়ে ফেলায় বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেও বেশ কয়েকজন ভিআইপিসহ সাড়ে আট শতাধিক পর্যটক চরম ভীতি ও উদ্বেগ উৎকন্ঠায় পড়েন। তাদের স্বজনেরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। সেন্টমার্টিন ভ্রমণের আগ্রহ হারিয়ে তারা দ্রুত এবং নিরাপদে চট্টগ্রাম ফিরে আসতে চান। অবশেষে পতেঙ্গা এসে তারা স্বস্তি প্রকাশ করেন।

জাহাজের যাত্রীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে পতেঙ্গা ছেড়ে যায়। আধঘণ্টা চলার পর জাহাজের পঞ্চম তলায় ধোঁয়া দেখতে পান যাত্রীরা। তখন যাত্রীদের অনেকে ডেকে জড়ো হন। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। ক্ষণিকের মধ্যে আনন্দ আতঙ্কে রূপ নেয়। ধোঁয়ার কারণে ইঞ্জিন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান জাহাজে দায়িত্বরতরা। যাত্রীদের অভিযোগ, জাহাজ কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিনের সমস্যা, ধোঁয়া, আগুনের খবর ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড বা দায়িত্বশীলদের জানায়নি। যাত্রীরাই স্বজনদের দুর্ভোগের কথা জানান। আতঙ্কিত যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরানো হয়। এ সময় তারা দোয়া দরুদ পড়তে থাকেন।

গভীর সাগরে থাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কেও সমস্যায় পড়েন অনেকে। মহিলা ও শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয় জাহাজে ইঞ্জিন রুমে স্পার্ক থেকে আগুন লাগে। রাত ১টা ২০ মিনিটে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনার ব্যাপারে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বে-ওয়ান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের একজন কর্মকর্তা জানান, জাহাজের একটি ইঞ্জিনে এয়ার লক হয়েছে। আরেকটি ইঞ্জিন সচল ছিল। এসময় সব যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে জাহাজটিকে কুতুবদিয়ার কাছাকাছি জায়গায় নোঙর করে রাখা হয়। সেখানে জাহাজের পাশে কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজ অবস্থান নেয়। গতকাল সকাল ১০টায় জাহাজটি পতেঙ্গার পথে যাত্রা শুরু করে। বে-ওয়ানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই টিকিটে অন্য যেকোন সময় পর্যটকেরা এ জাহাজে ভ্রমণ করতে পারবেন। আর কেউ ভ্রমণ না করলে তাদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

গত বছর ১৪ জানুয়ারি ‘বে ওয়ান ক্রুজ’ চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। ৪৫০ ফুট দৈর্ঘের ও ৫৫ ফুট প্রস্থের জাহাজটির উত্তাল সমুদ্রে চলার সক্ষমতা রয়েছে। ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম জাহাজটি ৩০ বছর আগে জাপানে তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে ২৫ বছরের পুরনো জাহাজ সাগরে ভাসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাহাজটি ভাসানোর আগে গত বছর সংবাদ সম্মেলনে কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্রসের মালিক এম এ রশিদ বলেছিলেন, এই আইন শুধু আমাদের দেশে আছে। বিদেশে প্যাসেঞ্জার জাহাজ ৫৫-৬০ বছরের পুরনো হলেও চলে। কার্গো জাহাজ ২৫ বছরের পুরনো হলে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু প্যাসেঞ্জার জাহাজে সমস্যা হয় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেন্টমার্টিন না গিয়ে পতেঙ্গায় ফিরল বে-ওয়ান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ