২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
জাতি সংঘ ১৯৫৪ সালে ২০ নভেম্বর দিনটিকে প্রতিবছর ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য ঘোষণা করেছিল। প্রথমদিকে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হতো সার্বজনীন শিশু দিবস হিসাবে। পরবর্তীকালে এটি বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে উৎযাপিত হয়ে আসছে।
শিশুর প্রতি শুধু মাত্র চিকিৎসা সেবাই সেবা না, কিছু আনুষঙ্গিক করনীয়ও শিশু যত্নের একটি অংশ। শিশুর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক আচরণ চিহ্নিত করেছে ইউনিসেফ। মূলত শৈশবের সব পর্যায়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে “ইউনিসেফ-২০২১” সামাজিক আচরণের একটা রূপরেখা তৈরি করেছে, যেখানে পরিবার ও সমাজে তাদের স¤পৃক্তির বিষয়ও রয়েছে। মূলত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইউনিসেফ নিন্মোক্ত বিষয়গুলো শিশুর যত্ন ও আচরণগত উন্নয়নে সহায়ক হিসেবে খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ।
১) নবজাতকের জীবন সুরক্ষা:
প্রান্তিক পর্যায়ে গর্ভধারণ কালে মায়ের চারটি স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি হাসপাতালে দক্ষ স্বাস্থ্য কর্মীর উপস্থিতিতে সন্তান প্রসব নিশ্চিত খুবই জরুরী। নবজাতকের আবশ্যিক যত্ন কীভাবে নিতে হয় সেদিকে দৃষ্টি প্রদানও জরুরী।
২) জীবন রক্ষায় পরিচ্ছন্নতা:
মৌলিক পরিচ্ছন্নতা পালনে বাংলাদেশের মানুষ বেশ পিছিয়ে, বিশেষকরে সঠিকভাবে হাত ধোওয়ার চর্চায়। অথচ এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, টয়লেটের পর, বাচ্চা পায়খানা করলে তাকে পরিষ্কার করানোর পর এবং শিশুকে খাওয়ানোর আগে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার প্রয়োজনীয়তা অতিগুরুত্বপূর্ন।
৩) শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করা:
বাড়ন্ত সময়ে আবশ্যিক পুষ্টির অভাবে শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। বাংলাদেশ থেকে এই সমস্যা দূর করতে জন্মের প্রথম ছয় মাস যেন শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো হয় এসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরি জরুরি এবং এটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। ছয় মাস পরে বুকের দুধের সঙ্গে ফল, শাকসব্জি আর প্রাণিজ আমিষ অর্থাৎ ডিম, মাংস খাওয়ানো শুরু করতে হবে।
৪) সময়মতো জন্ম নিবন্ধন:
জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যেই শিশুর জন্ম নিবন্ধন সেরে সনদটি সংরক্ষণ করে রাখতে বাবা, মা এবং অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৫) শৈশবের পরিচর্যা ও বিকাশ:
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য বাড়িতে শিক্ষনীয় পরিবেশ তৈরি ও শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করার দিকে দৃিষ্ট দেয়া প্রয়োজন। শিশুকে খেলনা দেওয়া, তাদের সঙ্গে কথা বলা ও খেলাধুলা করা, ভালো আচরণের প্রশংসা করতে হবে। মা, বাবা ও অন্যদের এবিষয়ে বিশেষ ভুমিকা রাথতে হবে। তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক শিশু বিকাশ (আরলি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট) এর জন্য এটা খুবই গুরুত্ব বহন করে।
৬) মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা:
ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, ছয় বা তার বেশি বয়সী শিশুকে যেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে তার লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়া হয় সেজন্য বাবা-মাকে উৎসাহিত করতে হবে। একই সঙ্গে মানসম্মত শিক্ষার গুরুত্ব ও অন্যান্য মৌলিক বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরী।
৭) শিশুর ওপর সহিংসতা রোধ:
স্কুল ও বাসায় যাতে শিশুর সঙ্গে ইতিবাচক আচরণ করা হয় তা নিশ্চিতে শিক্ষক ও বাবা-মায়েদের সচেতন হতে হবে।
৮) বাল্য বিবাহ বন্ধ:
বয়স ১৮ হওয়ার আগে মেয়েরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিয়ে এবং সন্তান জন্মদানের উপযুক্ত হয় না সে বিষয়ে কিশোর - কিশোরী সহ তাদের অভিভাবক এবং কমিউনিটি সদস্যদের সচেতন থাকতে হবে। শিশুর বিয়ে আয়োজন এবং তাতে অংশগ্রহণ না করতে লোকজনদের উৎসাহিত করা। ক্ষতিকর এইকাজের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কমিউনিটি সদস্যরা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন সে বিষয়গুলোও তাদের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন।
৯) কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষার সুযোগ:
লেখাপড়া অব্যাহত রাখার ওপর গুরত্বারোপ করে ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে তাদের বাবা-মা এবং কমিউনিটি সদস্যদের উৎসাহিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি তারা যাতে ঝামেলাহীনভাবে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারে তার অনুকুল পরিবেশ তৈরিও নিশ্চিত করতে হবে।
১০) বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য সেবা:
কিশোর-কিশোরীদের ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা, যথাযথ পুষ্টি, এইচআইভি/এইডস থেকে সুরক্ষা ইত্যাদি খুবই প্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে তাদের মা বাবাদের সচেতন থাকতে হবে।
অধ্যাপক (ডাঃ) মনজুর হোসেন
সভাপতি, বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি।
ডাঃ মনজুর’স চাইল্ড কেয়ার সেন্টার।
সাত মসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা।
প্রয়োজনে- ০১৭১১৪২৯৩৭৩।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।