মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ডাস্টবিনে নানা আবর্জনার ভিড়ে হারিয়ে যায়নি চিরতরে। হাতে লেখা যাবতীয় গাণিতিক সমীকরণ আর তাদের সমাধান, বহু অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি তো ডাস্টবিনেই ফেলে দিতেন তিনি। সেটাই ছিল তার অভ্যাস। আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের একেবারে শুরুর দিককার হাতে লেখা সেই পাণ্ডুলিপিটি কিন্তু বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছিল। ১০৮ বছর আগে।
আইনস্টাইনের এক অকৃত্রিম বন্ধুর সুবাদে। সেই পাণ্ডুলিপিই ছিল আইনস্টাইনের সাড়াজাগানো সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের উৎস। তার সেই হাতে লেখা বিরল পাণ্ডুলিপি মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে প্যারিসে ক্রিস্টিজ-এর নিলামে। রেকর্ড মূল্যে। ১ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ৫৪ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপিটির পুরোটাই হাতে লেখা। যার মধ্যে ২৬ পাতা ধরে লিখেছিলেন আইনস্টাইন। ২০১৩ সালের জুনে, জুরিখে বসে। আর ২৫ পাতা জুড়ে লিখেছিলেন তার অকৃত্রিম বন্ধু সুইৎজারল্যান্ডের প্রযুক্তিবিদ মিশেল বেসো।
সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ নিয়ে সেই সময় জুরিখে আইনস্টাইনের সঙ্গে বসে মিশেল বেসোও নানা গাণিতিক সমস্যার জট খোলার নেশায় বুঁদ হয়ে ছিলেন। তাদের যে সব গাণিতিক সমীকরণ ও সেগুলোর সমাধান রয়েছে সেই পাণ্ডুলিপিতে তা যদিও ছিল ভুলে ভরা। ফলে, সেই গাণিতিক সমীকরণগুলি যে তাকে লক্ষ্য পৌঁছে দেবে না তা বুঝতে পেরেছিলেন আইনস্টাইন। কিছুটা হতোদ্যম হয়ে ইটালিতে তার বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন বেসো। পরে জুরিখে বসেই অন্য পথ ধরে এগিয়ে অন্যান্য গাণিতিক সমীকরণের মাধ্যমে তার লক্ষ্যে পৌঁছে যান আইনস্টাইন। একাই। যার প্রেক্ষিতে ২০১৫-র নভেম্বরে প্রকাশিত হয় আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ। যা ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে সেই সময়ের যাবতীয় ধ্যানধারণাই বদলে দেয়। ছ’বছর পর ১৯২১-এ নোবেল পুরস্কার পান আইনস্টাইন।
ইটালিতে ফিরে গিয়ে গাণিতিক সমীকরণগুলির কোথায় ভুল তা খোঁজা আর সেগুলো শুধরনোর চেষ্টা করেছিলেন বেসোও। পারেননি। তিনি হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু সঙ্গে রেখে দিয়েছিলেন আইনস্টাইন ও তার হাতে লেখা সেই ৫৪ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি। মৃত্যুর আগে সেই পাণ্ডুলিপি তার পুত্র ভেরোর হাতে তুলে দিয়ে যান বেসো। ভেরো তা পরে তুলে দেন আইনস্টাইন ও বেসোর হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির সম্পাদক পিয়েরি স্পেজিয়ালির হাতে। পরে আইনস্টাইনের গবেষণাপত্রগুলোর সংগ্রহ প্রকাশের সময় স্পেজিয়ালি ওই পাণ্ডুলিপি তুলে দেন প্রকাশকের হাতে। ৭৬ বছর বয়সে ১৯৫৫-য় মৃত্যু হয় আইনস্টাইনের।
ক্রিস্টিজ-এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদের একেবারে শুরুর দিকের যে দু’টি হাতে লেখা পাণ্ডুলিপির হদিশ মিলেছে এটি তার একটি। নিলামে চড়ানোর আগে অনুমান করা হয়েছিল এর মূল্য দাঁড়াতে পারে ২৪ লাখ থেকে ৩৫ লাখ ডলারের মধ্যে। কিন্তু যাবতীয় অনুমান ভুল প্রমাণ করে তার চার গুণ বেড়ে যায় নিলামের অন্তিম পর্যায়ে। ফি-বাবদ পাণ্ডুলিপিটি বিক্রি হয় ১ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। আইনস্টাইনের লেখা আর কোনও পাণ্ডুলিপির নিলামে এতটা দর চড়েনি এর আগে। আইনস্টাইনের সেই বিখ্যাত ‘গড লেটার’ ২০১৮-য় নিলামে বিক্রি হয়েছিল বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ২৩ কোটি টাকায়। আর ২০১৯-এ আইনস্টাইনের লেখা ‘লেটার অ্যাবাউট দ্য সিক্রেট টু হ্যাপিনেস’ নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকায়। সূত্র: এনবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।