Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুদানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১২ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ১০:৫৭ এএম

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করে আবারও ক্ষমতায় বসেছেন দেশটির বেসামরিক সরকারের ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক। এই সমঝোতার প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভ করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আবদাল্লাহ হামদক সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১২ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে আবদাল্লাহ হামদকের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে গতকাল মঙ্গলবার বলা হয়েছে, পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া মন্ত্রীদের তালিকায় রয়েছেন সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র, বিচার, কৃষি, সেচ, বিনিয়োগ ও জ্বালানি, উচ্চশিক্ষা, শ্রম, পরিবহন, স্বাস্থ্য, যুব এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা। তাঁদের মধ্যে দেশটির পররাষ্ট্র, বিচার, কৃষি, সেচ, বিনিয়োগ ও জ্বালানি বিষয়ক পাঁচ মন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে একযোগে পদত্যাগের এই তথ্য জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও সুদানের রাজনৈতিক শক্তিগুলো এই চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা জানান, এটি সামরিক অভ্যুত্থানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) তারা মন্ত্রিসভার বৈঠকেও অংশ নেননি। তবে কি কারণে তারা পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
গত ২৫ অক্টোবর সেনা অভ্যুত্থানের আগে সুদানে হামদকের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছিল। বর্তমানে পদত্যাগ করা মন্ত্রীরা ওই সরকারেরই অংশ হিসেবে এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত সুদানের প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদক গত রবিবার স্বপদে ফেরেন। দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের চুক্তির পর তাকে স্বপদে পুনর্বহালের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, সেনা অভ্যুত্থানের এক মাস পর রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ১৪ শর্তের ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে আব্দাল্লাহ হামদককে প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্বহালের কথা বলা হয়।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, চুক্তিতে সামরিক অভ্যুত্থানের সময় আটক রাজবন্দিদের মুক্তির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশটির রাজনৈতিক উত্তরণের ভিত্তি হিসেবে ২০১৯ সালের সাংবিধানিক ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়।
সুদানে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সাধারণ নাগরিকসহ বিরোধীরা বিক্ষোভ শুরু করে। আন্দোলন থামাতে সামরিক সরকার নাগরিকদের ওপর গুলি চালায়। পক্ষ দুটির মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন।
গত ২৫ অক্টোবর দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। সে সময় প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদককে গৃহবন্দি ও বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি।
অরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিন্দার ঝড় ওঠে। সুদানে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠায় সরব হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।
উল্লেখ্য, সুদানে তিন দশক যাবত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ছিলেন ওমর আল-বশির। ২০১৯ সালে ওমর আল-বশির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশ পরিচালনা করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার। সূত্র : আল জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুদান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ