মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রতিবছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার থ্যাংকসগিভিং ডে পালন করে যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার দিবসটি পালন করা হবে। এদিন বাড়িতে বাড়িতে টার্কি মুরগির রোস্ট খাওয়ার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত পর্যন্তও পৌঁছে গিয়েছিল দুই টার্কি মুরগি। তবে বাইডেন ক্ষমা ঘোষণা করায় শেষ প্রাণ রক্ষা পেয়েছে মুরগি দুটির।
থ্যাকসগিভিং ডে সামনে রেখে শুক্রবার ‘পিনাট বাটার’ ও ‘জেলি’ নামের দুই টার্কি মুরগির জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেছেন বাইডেন। আর এর মধ্য দিয়ে যেন দ্বিতীয় জীবন খুঁজে পেল মুরগি দুটি। হোয়াইট হাউসে প্রতিবছর থ্যাংকসগিভিং ডে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের টার্কি মুরগিকে ক্ষমা করার রীতি পালন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ইন্ডিয়ানার খামারে বড় হয়ে ওঠা টার্কি মুরগি পিনাট বাটার ও জেলিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয় গত সপ্তাহে।
ওয়াশিংটনে লুক্সে উইলার্ড হোটেলে রাখা হয়েছিল এগুলোকে। হোয়াইট হাউসে পাঠানোর আগে বৃহস্পতিবার মুরগিগুলো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিনাট বাটার ও জেলিকে প্রেসিডেন্টের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। সে অনুষ্ঠানেই তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর মধ্য দিয়ে এ ছুটির মৌসুমে রান্নাঘরের আগুনে ঝলসানো থেকে রেহাই পেল পিনাট বাটার-জেলি।
মুরগিগুলোকে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল সায়েন্সেস এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ফার্মে পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে সেখানেই থাকবে এগুলো। মজাচ্ছলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘মেজাজ কেমন, দেখতে কেমন—এগুলোর ভিত্তিতে পিনাট বাটার ও জেলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে তারা টিকা নিয়েছে কি না, সেটাও হয়তো যাচাই করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ, এখন আর এ টার্কি মুরগিগুলোকে আগুনে ঝলসানো হবে না।’ বাইডেন মজা করে আরও বলেন, ‘পিনাট বাটার ও জেলি এ দুটো নাম তো আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আপনাদের কাছে স্বীকার না করে পারছি না, যদিও আমার স্ত্রী চায় না আমি স্বীকার করি, তবু বলছি, মধ্যাহ্নভোজে এ খাবারগুলো খেতে আমি পছন্দ করি।’
অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের গুরুতর পরিস্থিতির মধ্যেও এ ধরনের ঐতিহ্যগুলো চালিয়ে যাওয়া জরুরি। এ ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের আঁধার কাটিয়ে আশার আলো দেখতে পাওয়ার অনুভূতি তৈরি করে। আমি মনে করি, এ বছরের থ্যাংকসগিভিং ডে তেমনই একটি অনুষ্ঠান।’ কোভিড-১৯–এর টিকা তৈরি ও এ–সংক্রান্ত গবেষণায় নিয়োজিত বিজ্ঞানী ও সম্মুখসারির কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাইডেন। জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্মী, ধর্মীয় নেতা এবং কৃষকদের প্রতিও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
১৯৪৭ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাড়িতে টার্কি মুরগি সরবরাহ করে আসছে দ্য ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন। অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উপহার হিসেবে টার্কি মুরগি গ্রহণের এ রীতি চালু হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের শাসনকাল থেকে। ট্রুম্যানই টার্কি ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে প্রথম টার্কি মুরগি গ্রহণ করেছিলেন। তবে তিনি কখনোই এ মুরগি ছেড়ে দেননি। বরং উপহার হিসেবে পাওয়া সে মুরগি দিয়ে ভোজন সারতেন প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যরা।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, প্রেসিডেন্টের ইতিহাসে আব্রাহাম লিংকন প্রশাসনই প্রথম উপহার হিসেবে পাওয়া টার্কি মুরগি ছেড়ে দিয়েছিরেন। থ্যাংকসগিভিং ডেতে ওই মুরগি দিয়ে প্রেসিডেন্ট পরিবারের নৈশভোজ করার কথা ছিল। লিংকনের ছোট ছেলে তার বাবাকে পোষা টার্কি মুরগি ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানানোর পর সে মুরগিকে আর ভোজের উপকরণ করা হয়নি। তবে এটি একেবারেই লোকমুখে প্রচলিত কথা, এর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
১৯৬৩ সালে জন এফ কেনেডির শাসন মেয়াদে হোয়াইট হাউসে উপহার হিসেবে পাওয়া টার্কি মুরগি ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। নথিভুক্ত থাকা প্রথম ঘটনা এটি। তবে সেটি কোনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমা ঘোষণার অনুষ্ঠান ছিল না। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে টার্কি মুরগিকে ক্ষমা করার আনুষ্ঠানিক প্রচলন শুরু হয় মূলত ১৯৮৯ সাল থেকে। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ প্রচলন শুরু করেছিলেন তখন। আর সে সময় থেকে হোয়াইট হাউসে এটি এক নিয়মিত আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে। সূত্র: সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।