Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এখনো জরুরি ওষুধের বাইরে দরিদ্র দেশগুলো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বিশ্বকে বিপর্যয়কর এক পরিস্থিতিতে ফেলে দেয় কভিড-১৯ মহামারী। সংক্রমণ প্রতিরোধে আরোপিত বিধিনিষেধে স্থবির হয়ে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। করোনা প্রতিরোধী টিকা এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আশা দেখাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নাগরিককে টিকার আওতায় আনার কাছাকাছি পৌঁছালেও পিছিয়ে রয়েছে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো। নতুন একটি সমীক্ষা বলছে, কেবল কভিড টিকা নয়, দরিদ্র দেশগুলো জরুরি অ্যান্টিবায়োটিকেরও বাইরে থেকে গেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। আমস্টারডামভিত্তিক একটি অলাভজনক গোষ্ঠী অ্যাকসেস টু মেডিসিন ফাউন্ডেশন বলছে, মহামারী সত্ত্বেও বিশ্বের বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো সুপারবাগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোর দিচ্ছে। যদিও ওষুধ প্রতিরোধী সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোর লাখ লাখ মানুষ এখনো জরুরি অ্যান্টিবায়োটিক প্রাপ্তির বাইরে থেকে গেছে। ফাউন্ডেশনের মূল্যায়ন করা ১৬৬টি ওষুধ ও টিকার মধ্যে মাত্র ৫৪টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ৫৪ পণ্যের বেশির ভাগই টিকা, যক্ষ্মাবিরোধী ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক। বিশ্বজুড়ে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এগুলোকে অগ্রাধিকার হিসেবে গণ্য করে। অ্যাকসেস টু মেডিসিন ফাউন্ডেশন ওষুধগুলোর সরবরাহ নিশ্চিতে কিছু কৌশলও তুলে ধরেছে। গোষ্ঠীটির মতে, দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তা করতে পারে এমন নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে কয়েক স্তরে মূল্য নির্ধারণ, সরবরাহ বাড়ানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবী লাইসেন্সিং চুক্তি, স্থানীয় উৎপাদন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ও অনুদান। ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জয়শ্রী আইয়ার বলেন, সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকি এবং ওষুধ প্রতিরোধী সর্বোচ্চ হারে থাকা মানুষরা কঠিন সময় পার করছে। কারণ তাদের নাগালের বাইরে থেকে গেছে জরুরি অ্যান্টিবায়োটিকগুলো। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ৫৭ লাখ মানুষ অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে চিকিৎসাযোগ্য সংক্রামক রোগে মারা যায়। মারা যাওয়া এসব মানুষের বেশির ভাগই প্রধানত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর। আইয়ার বলেন, জিএসকে ও ফাইজারের মতো নেতৃত্ব পর্যায়ের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম নিয়ে আমরা সত্যিই অনেক আশাবাদী। মহামারীর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন ওষুধ প্রস্তুতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। যদিও গবেষণা ও উন্নয়ন পাইপলাইন এবং বিশ্বজুড়ে সরবরাহ নিশ্চিতে বড় ধরনের ব্যবধান থেকে গেছে। এজন্য বলা যায়, আমরা এখানে কিছুটা পিচ্ছিল ঢালে আছি। ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালে থাকা ২০টির মধ্যে ১৮টি নতুন ওষুধ বিশ্বজুড়ে সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালে থাকা ১১টি টিকার সবগুলোই দরিদ্র দেশগুলোয় সহজলভ্য করতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ফাউন্ডেশনের প্রথম প্রতিবেদনের তুলনায় এটি অনেক বড় অগ্রগতি বলে জানিয়েছেন জয়শ্রী আইয়ার। ২০১৮ সালে কেবল হাতেগোনা কয়েকটি নতুন ওষুধ দরিদ্র দেশগুলোয় সরবরাহ পরিকল্পনার আওতায় ছিল। ওষুধ প্রতিরোধী সুপারবাগের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে গবেষণা ও উন্নয়ন পাইপলাইন ছোট থাকলেও প্রকল্পের সংখ্যা ৭৭ থেকে ৯২টিতে উন্নীত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধ প্রতিরোধী গনোরিয়া, ই কোলাই ও সি ডিফিসিলের মতো ব্যাকটেরিয়া পরীক্ষা করছে। এ ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রকে সংক্রমিত এবং ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং এমন সব রোগের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য এ ওষুধগুলো গেম চেঞ্জার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফাইজার অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ট্রায়াল করা ফসম্যানোগেপিক্সকে অধিগ্রহণ করেছে। সংস্থাটির অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধটি এমন একটি ছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করে, যা প্রায়ই একাধিক ওষুধ প্রতিরোধী। এটি হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়ে এবং গুরুতর বা প্রাণঘাতী সংক্রমণ ঘটায়। এপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ