পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার চ্যালেঞ্জ উত্তরণে প্রযুক্তি হস্তান্তর, সম্পদের সংযোজন এবং দরিদ্র দেশগুলোর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে আরও তৎপর হওয়ার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জাপানের কাসিকজিমা দ্বীপের সিমাকানকো হোটেলে ‘জি-৭’ সম্মেলনের আউটরিচ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন ও দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখ করে জি-৭ সম্মেলনের আউটরিচ সভার প্রধানমন্ত্রী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন।
জি-৭ সম্মেলনের আউটরিচ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা নীতি প্রণয়ন ও রাজনীতিতে নারীদের গুরুত্ব দেয়া, সমাজে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা তথা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য পরিসেবা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়ার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রীর গতকালের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ২০০১ সালের পর ২য় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-৭ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। এটা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার সক্ষমতা ও বৈশ্বিক ভাবমর্যাদার প্রতি স্বীকৃতি।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায়ে মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে তার সরকারের প্রচেষ্টার বিষয়টি তুলে ধরেন। গ্রাম পর্যায়ে বাংলাদেশের কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো বিশ্বব্যাপী একটি ‘রোল মডেল’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নারীর প্রতিনিধিত্ব ও ক্ষমতায়ন, তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং তাদের অধিকার ও মর্যাদাকে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। শহীদুল হক বলেন, সভা শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, জাতিসংঘ মহাসচিব ও আইএমএফ প্রধানসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপ হয়েছে। জি-৭ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়া জি-৭-এর অন্য রাষ্ট্রগুলো বিভিন্ন আঞ্চলিক গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্যের জন্য শুধুমাত্র বাংলাদেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ জি-৭ আউটরিচের দুটি অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সম্পূরক এজেন্ডা, বিশেষত নারীর ক্ষমতায়ন, মানসম্মত অবকাঠামো, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন, যেসব ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০০১ সালে শেখ হাসিনার উত্থাপিত দারিদ্র্য বিমোচন ইস্যুটিকে জি-৭ নেতৃবৃন্দ একটি বড় এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী এবং জি-৭ সম্মেলনের আয়োজক শিনজো আবের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জি-৭ এর সদস্য ব্যতীত বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে এই আউটরিচ বৈঠকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। যার মধ্যে রয়েছেÑইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, শ্রীলঙ্কা, পাপুয়া নিউগিনি ও আফ্রিকার দেশ চাদ। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল মনেটরি ফান্ড (আইএমএফ) এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। দু’দিনব্যাপী জি-৭ সম্মেলন কেন্দ্রীয় জাপানের মনোরম শহর ইসে-শিমায় গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আউটরিচ বৈঠকের আয়োজনস্থল শিমা কানকো হোটেলের ব্যাঙ্কুয়েট হলে এসে পৌঁছলে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী আউটরিচ বৈঠকের দুটি পর্বের আলোচনায় অংশগ্রহণ করে স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, এশিয়া এবং বিশ্ববাসীর উন্নয়নে জাতিসংঘ নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন এবং উন্নত অবকাঠামো বিনির্মাণে সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতৃবৃন্দের সঙ্গে ফটোসেশন এবং মধ্যাহ্ন ভোজেও অংশগ্রহণ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার কারণেই জাপান বাংলাদেশকে এই বৈঠকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই আউটরিচ বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশগ্রহণ করবেন। তিনি গতকাল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্র : বাসস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।