মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মাদকাসক্তি ছেড়ে ইসলামের ছায়াতলে ব্রিটিশ তরুণী পারসেফন রিজভি। যুক্তরাজ্যের হাডার্সফিল্ডে জন্ম ও বেড়ে ওঠেন পারসেফন রিজভি। পড়াশোনা, ক্যারিয়া গঠন ও জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহে বদলে যায় ২৭ বছর বয়সী এ নারীর বিশ্বাস। সম্প্রতি বিবিসি থ্রি তার বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশ করে।
এক সময় পারসেফন লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে হাডার্সফিল্ড ছেড়ে ম্যানচেস্টারে চলে যান। এরপর গত এক দশকের মধ্যে আর নিজ বাড়িতে আসেননি তিনি। নতুন মুখ ও নতুন পরিচয় নিয়ে পারসেফন পুরোনো পরিচিত লোকদের দেখতে আসেন। এরপর নিজেকে মানুষের সেবায় নিযুক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুরুর আগে একটি কল সেন্টারে সামার জবে যুক্ত ছিলাম। সেখানে হালিমা নামে আমার এক বান্ধবী ছিল। তার সঙ্গে প্রথমে রমজান রোজা রাখা শুরু করি। তখনও আমার মধ্যে ধর্মে যুক্ত হওয়ার মনোভাব তৈরি হয়নি। এটাই ছিল আমার প্রথম ইসলাম পালন। দুরন্ত সাহসী মনোভাবের কারণে আমি শুধু ভাবছিলাম, ‘এটা শুধুমাত্র ৩০ দিন। আমার জন্য তা কোনো কিছুই নয়।’
পারসেফন বলেন, ‘আমি খুবই অল্প বয়সেই মদ্যপান শুরু করি। ফলে আমার সঙ্গে কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে পরিবারের সবার সামনে আমার পেট ফুলে যাওয়া ছিল খুবই দুঃখজনক। এরপর ইসলামের সন্ধান আমাকে বদলে দিয়েছে। শুরুতে তা আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছিল। মদপান ও পার্টিতে অংশ নিলেও তা আমার জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। তাই এটিই ছিল অতীতের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাতের উত্তম সময় ছিল।’
প্রথমবার রোজা রাখার পরও আমার মদপান ও পার্টিতে অংশ গ্রহণের অভ্যাস বন্ধ ছিল না। তবে আমার আচার-ব্যবহারে পরিবর্তন শুরু হয়। আমার মনোভাব অনেকটা এমন ছিল, ‘আমি অমুকের চেয়ে ভালো আছি। আমাকে আরো ভালো হতে হবে।’ ত্যাগের মাসটি আমার মধ্যে নিঃস্বার্থতা ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতি বোধ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে আমি নিজের প্রতি যত্ন নেওয়ার প্যাকেজ পেয়েছি যা আমার খুবই প্রয়োজন ছিল। মূলত এটাই ছিল আমার ইসলাম গ্রহণের ‘কলিং কার্ড’ আমন্ত্রণপত্র।’
স্কুল জীবন থেকে পারসেফন খুবই সাহসী ও প্রাণবন্ত ছিলেন। জনপ্রিয় সব চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের সুযোগ হয়েছিল তার। ফলে অল্প বয়স থেকেই সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। পারসেফন বলেন, আমি কখনো কোনো কিছু বলতে ভয় পাইনি। এখনও কোনো কিছু ভয় পাই না।
‘পুরোনো পরিচিতদের সঙ্গে আমি পুনরায় যোগাযোগ শুরু করি। তাদের কী করছে, তাদের জীবন কেমন কাটছে এসব বিষয় জানার চেষ্টা করি। তারাও আমার সম্পর্কে জানতে খুবই কৌতুহলী ছিল। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ততা ছিল। কিন্তু তখন আমি সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মে খুবই অ্যাক্টিভ।’
ইসলাম গ্রহণের পরের ঘটনা বর্ণনা করে পারসেফন বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণের পর প্রথম দিকে খ্বুই চাপ বোধ করতাম। তবে ওই সময় নিজের ব্যাপারে খুবই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। আমি অনেকটা নতুন বস্তুর সন্ধান পাওয়া ব্যক্তির মতো ছিলাম যে নিজেকে গভীরে সঁপে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারি যে, আমাকে অনেক বিষয়ে সংযম করতে হবে এবং ধর্মীয় সীমারেখার মধ্যে থাকতে হবে। ধারাবাহিক সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে।’
আমি সানডে স্কুলে পড়ে বড় হয়েছি। আমার বাবা-মা চাইত আমি ও আমার বোন যেন বিশ্বাসী হই। আমার বাবা ছিলেন ব্ল্যাক ব্রিটিশ। তিনি নিয়মিত চার্চে যেতেন। আমার মা চেয়েছেন আমরা যেন ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে জানি। কিন্তু তাদের কেউ আমাদের বাধ্য করেননি। আমাদের পরিবারের কেউ প্রাক্টিসিং মুসলিম ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে আমি গুরুত্বসহ ইসলাম নিয়ে গবেষণা শুরু করি। মুসলিম হওয়ার কথাও ভাবছিলাম। সালফোর্ডের ইউনিভার্সিটি ও হাডার্সফিল্ডে আমার বাবা-মায়ের বাড়ির মধ্যেই আমার যাতায়াত ছিল। কিন্তু ইসলামের প্রতি আমার আগ্রহের কথা তারা জানত না। হঠাৎ একদিন আমি মাথায় স্কার্ফ দিয়ে ঘরে ঢুকে বললাম, ‘আমি এখন মুসলিম!’
আমার কথা শুনে বাবা-মা বেশ অবাক হলেও তারা অসন্তুষ্ট ছিলেন না। তারা আমাকে অনেক প্রশ্ন করে নিশ্চিত হতে চাইছিলেন যে, আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বাবা আমাকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখতে পান। প্রথম দিকে আমি পবিত্র কোরআনের ব্যাখ্যা সঠিকভাবে না বুঝেই অনেক কিছু করতে চেয়েছি। অনেক সময় কঠোর ও দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সবকিছু করতে চেয়েছি। সূত্র : বিবিসি থ্রি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।