পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চীনের তৈরি কৃত্রিম ডিমে উপমহাদেশের বাজার ছেয়ে গেছে। এগুলোকে কৃত্রিম একারণে বলা হচ্ছে যে, এই ডিম কোন হাঁস-মুরগির নয়। কেমিক্যাল, ক্যালসিয়াম, কার্বেনেট দিয়ে তৈরি হয়েছে এই ডিমের খোসা। সোডিয়াম, অ্যালজিনেট, অ্যালাম, জিলেটিন, ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড এবং পানি ও রং দিয়ে তৈরি হয়েছে কুসুম। দেখতে অনেকটা আসল ডিমের মত হলেও এর কোন খাদ্যগুণ নেই। দু’টি প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত এলাকায় নকল ডিমের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কৃত্রিম ডিমের খোসা বাদামী রংয়ের। ডিম ফাটিয়ে এর ভিতরে হলুদ অংশটি বের করে কোন পাত্রে রেখে দিলে মাছি বা পোক-মাকড় সেটিতে আকৃষ্ট হয় না এবং তাতে পচনও ধরে না। এই ধরনের ডিমের খোসা আসল ডিমের চেয়ে একটু বেশি চকচকে হয়। হাত দিয়ে স্পর্শ করলে তা আসল ডিমের তুলনায় একটু বেশি খসখসে মনে হয়। এই ধরনের ডিম ভেঙে পাত্রে রাখা হলে হলুদ অংশটি ও সাদা অংশটি মিশে যায়। আসল ডিমের মতো আঁশটে গন্ধ কৃত্রিম ডিমে থাকে না। কৃত্রিম ডিম কানের কাছে ঝাঁকালে হালকা আওয়াজ পাওয়া যায়। সর্বোপরি এই ধরনের ডিম ভাজার জন্য ফ্রাইং প্যানের উপর ফেললে কুসুম অংশটি সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে যায়।
ঢাকাসহ সারাদেশে নকল ডিম নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ডিমদিবসের এক আলোচনা সভায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। কনজুমার্স এসোসিয়েশনের সভাপতিও এব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, নকল ডিমের কোন অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি। এদিকে বাজারে ডিমের দামে হেরফের রয়েছে। ডিমের দাম দোকানে ৩৫ টাকা হালি হলেও ফুটপাথে ২০ টাকা হালি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব ভোক্তারা তা বুঝতে পারছে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, ডিম নিয়ে অনেকদিন ধরেই নানা জাল-জালিয়াতি চলছে। যেহেতু পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে ডিমের ব্যবহার জনপ্রিয় সে কারণেই ডিম নিয়ে প্রতারণার সুযোগও অনেক বেশি। কিছুদিন আগে খবর বেরিয়েছিল, হাঁস বা মুরগির ডিমের পরিবর্তে কচ্ছপের ডিমসহ নানা প্রাণীর ডিম বাজারে পাওয়া যায়। তখনও বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকা দিয়ে এসব ডিম বাজারে প্রবেশ করছে। বর্তমান অবস্থাও অনেকটা তদ্রƒপ। সংশ্লিষ্ট সকলেই বলছেন, তারা শুনেছেন। বলা হচ্ছে, অভিযোগ পাননি অর্থাৎ কেউ তাদের কাছে কৃত্রিম ডিম নিয়ে হাজির হয়নি। এর আগে কৃত্রিম দুধ খেয়ে মানুষের মৃত্যুর খবর বের হয়েছে। বাজারে কৃত্রিম চালের খবরও রয়েছে। সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন জাগে, এসব সম্পর্কে জনগণকে অবহিতকরণের দায়িত্ব কাদের? অফিসিয়ালি বর্তমানে দেশে ডিম আমদানি বন্ধ রয়েছে। সে বিবেচনায় চীনা ডিমের স্বাভাবিক পথে আসার কোন সুযোগ নেই। সব সময়ই এ ধরনের অবৈধ ব্যবসার সাথে প্রভাবশালী মহলের এক ধরনের সম্পর্ক থাকে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সহজলভ্য প্রোটিন হিসেবে মুরগি ও হাঁসের ডিম অপরিহার্য খাদ্যে পরিণত হয়েছে। এই ডিমের যদি ভেজাল হয়, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে?
দোকানে খোলাবাজারে রাস্তা-ঘাটে যেসব ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে তার কতটা আসল কতটা নকল তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝার কোন উপায় নেই। এ দায়িত্ব অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের। কে তাদের কাছে অভিযোগ করল কে করল না তার অপেক্ষায় বসে না থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়া জরুরি। জনমনে ইতোমধ্যে সৃষ্টি হওয়া আতঙ্ক দূর করা দরকার। জনমনে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দূরীকরণে পোলট্রিফার্মের মালিকদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। কৃত্রিম ডিম প্রতিরোধে তাদেরও সচেতন হতে হবে। জনস্বাস্থ্যের জন্য এই মারাত্মক হুমকি কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।