২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
শীতের আগমন ঘটেছে। এই আগমনে ত্বকের যত্নে সতর্ক থাকতে হবে। আর ত্বককে সুন্দর তরতাজা আর উজ্জ্বল রাখতে হলে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি অর্থাৎ অতিবেগুনি রশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। তা না হলে ত্বক বুড়িয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে একটি ছাতা বা টোকাজাতীয় টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা এগুলোকে রুচিসম্মত মনে না করেন তারা যে কোনো একটি উৎকৃষ্ট সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। প্রশ্ন আসতে পারে, কোন সানস্ক্রিন আপনি ব্যবহার করবেন? এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনার ত্বকের রং বিবেচনায় আনতে হবে। যে ত্বকের রং যত সাদা, সে ত্বক সূর্যালোকে তত বেশি নাজুক। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে ত্বকের নানাবিধ সমস্যা। তাই এখন থেকেই শুরু হোক ত্বকের বাড়তি যত্ন। এতে শীতের শুষ্কতা কমিয়ে ত্বককে করবে মসৃণ এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। আর শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় তাই বাইরের পরিবেশ আমাদের ত্বক থেকে পানি শুষে নেয়। এজন্য আমাদের ত্বক, ঠোঁট ও হাত বা পায়ের তালু ফেটে যায়। চলুন শীতে ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা হতে বাঁচতে অর্থাৎ ত্বকের সঠিক পরিচর্যা করার কৌশল সম্পর্কে জেনে নিই।
শীতে আমাদের ত্বক ফেটে যায় কেন?
আমাদের শরীরের শতকরা ৫৬ ভাগই পানি দ্বারা গঠিত যার মধ্যে ত্বক নিজেই ধারণ করে শতকরা ১০ ভাগ। ত্বকে যে ঘমগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থি রয়েছে তা থেকে অনবরত তেল আর ঘাম বের হয়। সাধারণত শরীরের ঘাম আর তেল মিলে দেহের ওপর তেল ও পানির মিশ্রণের একটি আবরণী তৈরি করে, যা আমাদের দেহকে শীতল রাখে। এছাড়া এটি আমাদের ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষাসহ ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে। যেহেতু শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে তাই পানি ত্বক থেকে বেরিয়ে আবহাওয়ায় চলে যায় ফলশ্রুতিতে ত্বক দুর্বল আর অসহায় হয়ে পড়ে। ত্বক দুর্বল হওয়ায় চামড়ায় অবস্থিত ঘমগ্রন্থি হতে তেল আর পানি বের হয়ে যায় এবং সেগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারেনা। এর ফলে ত্বক আগের মতো ঘাম বা তেল কোনোটাই তৈরি করতে পারে না। এজন্য ত্বক ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে এবং শরীরের চামড়ার বিভিন্ন অংশ ফেটে যায়।
শীতের সময় ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায়সমুহঃ-
শীতের সময় ঠোঁটের যত্ন
শীতের সময় কমবেশি সবারই ঠোঁট ফাটে। জীবের আদ্রতা বাড়াতে জিহবা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো উচিত নয়। এর ফলে ঠোঁট ফাটা আরো বেড়ে যেতে পারে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তৈলাক্ত প্রলেপ যেমন ঠোঁটে গ্লিসারিন, লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ইত্যাদি ব্যবহার করলে সহজেই ফাটা নিয়ন্ত্রণ করে ঠোঁট ভালো রাখা যায়।
শীতে সময় পায়ের যত্ন-
শীত এলে অনেকেরই পা ফাটার প্রবণতা বেশী লক্ষ্য করা যায়। যাদের এই সমস্যা বেশী হয় তারা তাদের পা কিছুক্ষণ অ্যাক্রোফ্লেভিন দ্রবণে ভিজিয়ে রেখে তারপর পা ভালোভাবে শুকিয়ে যাওয়া মাত্রই ভেসলিন মাখলে অনেক উপকার পেতে পারেন। বর্তমানে বাজারে অনেক অনেক প্রকারের ময়েশ্চারাইজার ক্রিম পাওয়া যায় যা আসলে তেল আর পানির একটি মিশ্রণ। এছাড়া গ্লিসারিন ও পানি মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মাখলেও পায়ের ফাটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আর পায়ের ফাটা যদি অপেক্ষাকৃত কম থাকে তাহলে পায়ের ফাটা স্থানে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল ব্যবহার করলেও অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়।
শীতকালে ত্বকের যত্নে কিছু জরুরী টিপস
১। নিয়মিত হাল্কা গরম পানিতে গোসল করুন
এমনিতেই শীতের সময় ঠান্ডা ব্যবহার অনেক কষ্টকর। এছাড়া হালকা গরম পানি যা ত্বকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে তৈলাক্তভাব বজায় রাখতে সহায়তা করে। তাই শুধু মুখ বা শুধু হাত ধোয়া নয়, গোসল করতে হালকা গরম পানি ব্যবহার করা উচিত।
২। নিয়মিত ত্বকে ক্রিম বা লোশন লাগান
শীতে যখন তখন শরীরে ক্রিম না মেখে বরং গোসলের পর ক্রিম মাখুন। গোসলের পর ক্রিম ম্খালে তা শরীরে অনেকক্ষণ আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। তাই ত্বক সুস্থ রাখতে নিয়ম করে গোসলের পরই ক্রিম লাগান।
৩। শীতের উপযোগী ও সঠিক ক্রিম বেছে নিন
শীতের সময় অনেককেই বারবার পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে দেখা যায়। এই পেট্রোলিয়াম জেলি কিছু সময় পর পর ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। তাই শীতকালে অয়েল বেসড বা তৈলাক্ত ক্রিম মাখাই ভালো। এতে ত্বক আদ্র থাকবে।
৪। শীতে শরীরকে যথা সম্ভব আদ্র রাখুন
অনেকেই শীতকালে ঠান্ডার প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে ঘরে হিটার ব্যবহার করে থাকেন যা পরিবেশকে গরম করলেও বাতাসকে অনেক খুব শুষ্ক করে দেয়। তাই ঘরকে উষ্ণ ও আর্দ্র রাখতে হিটারের বদলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। তীব্র রোদের মধ্যে বের হওয়ার আগে মুখে অবশ্যই সানস্ক্রিন মাখা উচিত। এছাড়া অতিরিক্ত ঠান্ডায় হাতে হাতমোজা ও মাথায় রুমাল ব্যবহার করা উচিত।
৫। নিয়মিত পানি পান করুন
শীতকালে ঠান্ডার জন্য আমরা খুব কম পানি পান করি। তবে কম পানি পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট পানি পান করা খুবই জরুরি। তাই শীতের সময় পানি কিছুটা গরম করে পান করা যেতে পারে। পানির সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
৬। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম মাখুন
শীতকালে শরীর আদ্র রাখতে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। শীতে তাই হবে। আমাদের শরীরের যেসব অংশ বেশি শুষ্ক থাকে যেমন হাত, পা, হাঁটু, কপাল ইত্যাদিতে রাতে শোয়ার আগে ভালো করে ক্রিম মেখে তারপর মোজা পড়ে নিলে সকাল পর্যন্ত শরীরে আদ্রতা বজায় থাকে। এছাড়া শীতে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং সব্জিও খাওয়া উচিত।
হোমিওপ্রতিকারঃ- রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। ত্বকের সমস্যার রোগীদেরকে একজন অভিজ্ঞ অর্গাণন অনুসরনকারী চিকিৎসক নির্বাচন করতে হবে যিনি সঠিক লক্ষন অথবা “মাইজমেটিক” অনুসরন করে চিকিৎসা সেবা প্রধান করে, তাহলে হোমিওপ্যাথিতে আরোগ্য হওয়া সম্ভব। নিজেদেরকে যদি হ্যানিমেনের উত্তরসূরী দাবি করে থাকি তাহলে সঠিক লক্ষণ দিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।
মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
হোমিও চিকিৎসক,
সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য।
স্বাস্থ্য পাতার সম্পাদক, দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা।
ইমেইল- [email protected]
মোবাইল-০১৮২২৮৬৯৩৮৯
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।