মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের জাতীয় কবি আল্লামা স্যার মুহাম্মদ ইকবালের সাথে তার শেষ জীবিত সন্তান করুণা এবং ভদ্রতার প্রতীক মুনিরা সালাহুদ্দিন (৯১)-এর প্রাণবন্ত স্মৃতি রয়েছে। উর্দু এবং ফার্সি ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, যার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আদর্শ দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক দেশের ধারণা তৈরি করেছিল, সেই ইকবাল ১৯৩৯ সালে মারা যান, যখন মুনিরার বয়স ছিল মাত্র সাত বছর।
মাথার পেছনে বাঁধা ধূসর চুল, শালোয়ার কামিজ পরিহিত, লাহোরে বসবাসকারী মুনিরা তার বাবাকে স্মরণ করার চেষ্টা করেন, যিনি তুর্কিদের খুব পছন্দ করতেন এবং তাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমর্থক ছিলেন। আনাদোলু এজেন্সির সাথে কথা বলার সময়, তার ছেলে ইকবাল সালাহুদ্দিন বলেন যে, তার মা তার বয়সের কারণে বিশদ বিবরণ ভুলে যান।
‘আপনার বয়স যতই হোক না কেন, আপনাকে সবসময় আপনার পিতামাতার প্রয়োজন হয়। তার বয়স তখন মাত্র চার বছর যখন তার মা ইন্তেকাল করেন এবং সাত বছর বয়সে আল্লামা পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। তিনি তাকে তার জনগণের অধিকারের জন্য লড়াই করতে দেখেছেন। আল্লামার মৃত্যুর পর, তাকে তার খালা এবং একজন জার্মান ভদ্রমহিলা মিসেস ডরিস লালনপালন করেন। কিন্তু এই বয়সে তিনি তার বাবা-মাকে সবচেয়ে বেশি মিস করেন’ -বলেন সালাহুদ্দিন।
১৮৭৭ সালের ৯ নভেম্বর একটি জাতিগত কাশ্মীরি মুসলিম পরিবারে বর্তমানে উত্তর পাকিস্তানের শহর শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন। আল্লামা ইকবালকে ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে তার বিপ্লবী কবিতার কারণে প্রাচ্যের কবি হিসাবেও উল্লেখ করা হয়।
ইকবাল সালাহুদ্দিন লাহোরে দাবিস্তান-ই-ইকবাল (ইকবালের বাগান) নামে একটি ইনস্টিটিউট পরিচালনা করেন যেখানে তিনি বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে তার দাদার দর্শন শেখান।
সালাহুদ্দিন বলেন, ‘আমি আমার মামা জাভেদ ইকবালের কাছ থেকে ইকবালের দর্শনের ওপর আমার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ পেয়েছি এবং এখন ইকবালকে পড়ার এবং বোঝার পরে আমি মনে করি ইকবালের এসব ধারণা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়া আমার সর্বোচ্চ দায়িত্ব’। ইকবাল ছিলেন খ্যাতিমান তুর্কি আলেম মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমির ভক্ত। ইকবাল নিজেকে মুরিদ-ই-হিন্দ (ভারতভক্ত) এবং পীর-ই-রুমি (রোমের সাধু) হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
আল্লামা ইকবালের পরিবারের কাছে ইকবাল তার বন্ধু মহারাজা কিষাণ প্রসাদকে লেখা একটি মূল্যবান চিঠি রয়েছে যা তিনি আসরার-ই-খুদি (নিজের রহস্য) লিখছিলেন। এটি ১৯১৫ সালে ফার্সি ভাষায় প্রকাশিত এবং তার প্রথম দার্শনিক কবিতার বই। চিঠিতে আল্লামা ইকবাল এবং মাওলানা রুমির মধ্যে তার কল্পনায় ঘটে যাওয়া অনেক গোপন কথোপকথন রয়েছে।
সালাহুদ্দিন বলেন, ‘তিনি (ইকবাল) তার বন্ধু প্রসাদকে চিঠির একটি নির্দিষ্ট অংশ পুড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, কারণ তিনি মাওলানার সাথে তার কল্পনাপ্রসূত কথোপকথন গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি (প্রসাদ) এটি পোড়াননি এবং এটি রেকর্ডে রয়েছে। ইকবাল আরো উল্লেখ করেছেন যে, তিনি তার স্বপ্নে রুমিকে কোথায় দেখেছিলেন এবং মসনভি লেখার নির্দেশনা পেয়েছিলেন’।
মসনভি হল ছন্দময় লেখা এক ধরনের কবিতা, বা আরো নির্দিষ্টভাবে স্বাধীন, অভ্যন্তরীণভাবে ছন্দবদ্ধ লাইনের ওপর ভিত্তি করে লেখা একটি কবিতা। ইকবালের নাতি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে এ যুগে অনুপ্রেরণা পেতে ইকবালের দর্শন শিখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার মা সর্বদা আমাদের বলেছেন যে, কীভাবে আল্লামা সর্বদা সাফল্যের পথে যেতে জাতির তরুণদের কাজে লাগানোর ওপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ প্রজন্ম ইকবাল সম্পর্কে জানার অনেক দূরে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সিলেবাসে ইকবাল সম্পর্কে আরও অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করতে হবে’। সূত্র : আনাদোল এজেন্সী, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।