Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার সংশয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভবিষ্যতে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডনের স্থানীয় সময় গত রোববার বিকেলে লন্ডনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেওয়া এক সংবর্ধনায় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি এ সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল ক্ল্যারিজ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দলের নেতৃত্ব সাজাপ্রাপ্ত আসামি, পলাতক সেই দলের অস্তিত্ব থাকে কিভাবে? সেই দলটির (বিএনপি) আজকে অবস্থা কি? আপনারা নিজেরা একটু বিবেচনা করে দেখুন।

তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে কে আছে? অস্ত্র স্মাগলিং কেস-এ সাজাপ্রাপ্ত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে সেই হত্যার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এতিমখানায় দেওয়ার জন্য টাকা পেল খালেদা জিয়া। সেই টাকা এতিমদের না দিয়ে ভোগ করতে যেয়ে সেও সাজাপ্রাপ্ত। আর তার ছেলে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, পলাতক- সে হলো একটা দলের নেতৃত্বে। তো সেই দলের অস্তিত্ব থাকে কিভাবে। যে দলের নেতৃত্বই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাও খুনের মামলা, অস্ত্র চোরাকারবারি মামলা থেকে শুরু করে দুর্নীতির মামলা। খালেদা জিয়ার সন্তানদের দুর্নীতির তথ্য জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে- পেলেদের দুর্নীতি এটা আমাদের না, এটা আমেরিকার এফবিআই খুঁজে বের করেছে। সেখান থেকে ধরা পড়েছে, সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত কিছু টাকা আমরা ফেরত আনতেও সক্ষম হয়েছি। এটাই হলো বাস্তবতা। ওদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু মনে করে, লুটপাটের ক্ষেত্র মনে করে। বেশ কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লন্ডনে পালিয়ে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান প্রবাসে বিলাসী জীবন যাপন করছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নিজেরাই এখন দেখতে পারেন। এই প্রবাসে থেকেও কিভাবে তারা জীবন যাত্রা করে। তাদের সোর্স অব ইনকাম কি? অর্থ কোথা থেকে উপার্জন করে? তারেক জিয়াকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় থেকে অর্থ পায়? কিভাবে চলে? জনগণের সম্পদ লুট করে তারা বিলাসিতা করে। আর আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে থাকে, জনগণের কল্যাণ চিন্তা করে।

২০০১ সাল পরবর্তী সময়ে বিএনপি আমলের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ এ আসলো খালেদা জিয়া ক্ষমতায়। বাংলাদেশকে পাঁচ পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করলো। লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করলো। হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া-খায়ি শুরু করে দিলো। দেশের মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা সব নষ্ট করে দিলো। বিএনপি-জামায়াত আমলে দেশ পিছিয়ে গিয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ সামনের দিকে এগোয়, কিন্তু পিছনে চলে যায় তা তো কখনো দেখিনি। তারা সেটাই দেখালো। জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে না জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবো, আমার বাবার আদর্শ বাস্তবায়ন করবো, স্বপ্ন পূরণ করবো। দুঃখী মানুষের মুখে হাঁসি ফোটাবো। বিগত আওয়ামী লীগ শাসন আমলে দেশের অগ্রগতির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। উন্নয়ন কাজের ৯০ শতাংশ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে করতে পারি। সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। পদ্মা সেতু ইস্যুতে একটি মহল দুর্নীতির অপবাদ দিতে চেয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর অপবাদ দিতে চেয়েছিল। আমার ছোট বোন রেহানা এখানে থাকে। খুব সাধারণ ভাবে চলাচল করে, জীবনযাপন করে, নিজে কাজ করে খায়। তাকেও পর্যন্ত জড়াতে চেয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম যে প্রমাণ করতে হবে দুর্নীতি হয়েছে। তারা প্রমাণ করতে পারেনি। কোন দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতি করতে আসিনি, আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসিনি, আমরা জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি, জনগণের ভাগ্য গড়াটাই আমাদের লক্ষ্য, আর সে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্যই আমরা কাজ করছি। এ সময় প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিয়োগ করতে চান সেখানে বিশেষ সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে আমাদের প্রবাসী যারা তাদের জন্য আলাদা ভাবে বিশেষ সুবিধা আমরা দিবো। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রবাসীদের সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। কারো যদি কোন অসুবিধা হয়, বিনিয়োগে অসুবিধা হয় আমাকে বলবেন কি কি অসুবিধা হচ্ছে, আমরা সেটা দেখবো। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ।



 

Show all comments
  • কাওসার আহমেদ ৯ নভেম্বর, ২০২১, ২:১৬ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে পদক্ষেপ নিন
    Total Reply(0) Reply
  • জাফর আহমেদ ভূঁইয়া ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:০৮ এএম says : 0
    বিএনপি নিয়ে আপনার টেনশন দেখে বুঝছি বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচনে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abu Bokkor ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:০৯ এএম says : 0
    বিএনপি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা। এদেশের মানুষের ভালোবাসায় বিএনপি এখনো টিকে আছে এবং অনন্তকাল টিকে থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Khalil mir ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১০ এএম says : 1
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিক কথা বলেছেন। ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপিকে আর খুঁজে পাওয়া নাও যেতে পারে। এদের অবস্থা বেশি ভালো নাই। তাদের নিজদের মধ্যেই দলীয় কোন্দল দিয়ে ভরে গেছে।
    Total Reply(1) Reply
    • ৯ নভেম্বর, ২০২১, ১০:০৩ এএম says : 0
  • Shohanur Rahaman Sabuj ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১১ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দেশ নিয়ে চিন্তা করুন,কারন যে হারে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে,তাতে জনগণ থাকবে কি না, সেটাই সন্দেহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Harun Rashid ৯ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১২ এএম says : 0
    আপনার যদি এতই বিশ্বাস থাকে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। বিএনপি যুগ যুগ ধরে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ