পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সৈকতের ইনানী রয়েল টিউলিপ হোটেল পয়েন্টে স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে দ্বিখণ্ডিত করা হয়েছে দেশের গর্ব দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতকে। জেটি নির্মাণের প্রতিবাদ ও অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ক্ষুব্ধ কক্সবাজারবাসী। গতকাল রোববার দুপুরে সৈকতের ইনানী হোটেল রয়েল টিউলিপ সংলগ্ন জেটি পয়েন্টে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কক্সবাজারবাসী ও নাগরিক ফোরাম নামের সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, নাগরিক ফোরাম এর সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন, নাগরিক ফোরাম এর উপদেষ্টা দৈনিক বাঁকখালীর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, নাগরিক ফোরাম এর মহাসচিব অধ্যাপক এ এম আনোয়ারুল হক, আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের মহাসচিব নাজিম উদ্দীনসহ প্রমুখ।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৩৫ দেশের নৌবাহিনীর যৌথফ্লিট শো হওয়ার কথা জানা গিয়েছিল কক্সবাজারে। এটি উদ্বোধন করার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রীন। করোনার কারণে এই ফ্লিট শো বাতিল হয়ে যায় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। কিন্তু ওই অস্থায়ী জেটিটি এখন স্থায়ী কনক্রিটের জেটিতে রূপান্তরিত হয়। প্রকাশ্যে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে স্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হলেও টনক নড়েনি স্থানীয় প্রশাসনের। এই ঘটনায় ফুঁসে উঠে কক্সবাজার এর পরিবেশবাদী ও সচেতনমহল।
এ প্রসঙ্গে নাগরিক ফোরামের উপদেষ্টা সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন ২০১১ সালে প্রণীত কক্সবাজারের মাস্টার প্ল্যানে বালুচর নো ডেভলপমেন্ট এর পর্যায়ভুক্ত। সে অনুসারে সৈকতে কোন ধরনের স্থাপনা করা যাবে না। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ আইনে যেসব মৌজাকে নিয়ে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এলাকা বা ইসিএ ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইনানী ও তার আশপাশের মৌজা। এছাড়াও ইসিএ এলাকায় পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া কোনো স্থাপনা করা নিষেধ।
ইতিপূর্বে আইন অমান্য করে ওই এলাকায় যে হোটেলগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোও ভেঙে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তিনি বলেন, এছাড়াও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের দীর্ঘতম একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। সুতরাং সৈকতকে দ্বিখণ্ডিত করে জেটি নির্মাণ করা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি অবিলম্বে অপসারণ করা হোক।
এ বিষয়ে নাগরিক ফোরামের সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন বলেন, এই অনুমোদিত জেটি কার স্বার্থে এবং কেন নির্মাণ করা হল। এ বিষয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের ভূমিকা কি? তারা নীরব কেন? আমাদের গর্ব বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের গর্বকে খর্ব করেছে। তাই এই জেটি অতিদ্রুত অপসারণের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, একটি ফ্লিট শো সফল করতে ইনানী সৈকতের হোটেল রয়েল টিউলিপ পয়েন্টে অস্থায়ীভাবে একটি জেটি নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু তথ্য গোপন করে কোন ধরনের মেরিন সমীক্ষা ছাড়া (ইসি) ইক্লোজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়াতে সৈকতের একশত ফুট গভীরে কনক্রিটে ঢালাই দিয়ে প্রায় এক হাজার ফুট স্থায়ী পাকা জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশবাদী ও স্থানীয় সামাজিক সংগঠন এবং সচেতন মহলের প্রশ্ন কে বা কাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য দেশের গর্ব বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতকে দ্বিখণ্ডিত করে এই জেটি নির্মাণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা নুরুল আবছার বলেন, প্রকৃতি প্রেমী ও ইতিবাচক দৃষ্টভঙ্গির অগনিত মানুষের কামনা ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও কক্সবাজার সৈকতের হোটেল রয়েল টিউলিপ পয়েন্টে জেটি নির্মাণ প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে। যতদূর জানা যাচ্ছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংস্থা সমুহের নাম বিক্রি করে কিছু মুনাফা লোভী স্বার্থ সিদ্ধির করা এই সকল অপতৎপরতার মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, সংবেদনশীল মানুষের সন্দেহ আন্তর্জাতিক মানের সমাবেশের সিদ্ধান্তের কথা বলে একটি বিশেষ হোটেলকে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন ও খুলনা পর্যন্ত সমুদ্র যাত্রা ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই সমস্ত কর্ম পরিচালিত হচ্ছে কি না?
তিনি বলেন, ব্যবসায়িক মুনাফার জন্য রাষ্ট্রের এইরকম অপব্যবহার আগে কখনো হয়েছে বলে জানা নেই। তথাকথিত জেটি নির্মাণের ফলে উপসাগরীয় জলস্রোত মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে যা জাতীয় আন্তর্জাতিক গুরুতর অপরাধ। এছাড়াও উপসাগরীয় জলরাশিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে কোনো কাঠামো নির্মাণে অনুমতি কোনো দেশের সরকার দিতে পারে কি না এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়াা জরুরি। এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।