Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কমলনগরে তিন ইউপিতে নির্বাচনঃ নৌকার দুশ্চিন্তা বিদ্রোহী প্রার্থী, হাতপাখার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ পিএম | আপডেট : ১২:৫৯ পিএম, ১ নভেম্বর, ২০২১

আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তিন ইউপি নির্বাচন।নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে জমজমাট প্রচারণা। প্রার্থীরা দিচ্ছে নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। পোস্টারে পোষ্টারে চেয়ে গেছে পুরো এলাকা। সমানতালে চলছে মাইকিং।উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে নির্বাচনের প্রচারণা চললেও চরলরেন্স ও চরমার্টিন ইউনিয়নে নির্বাচনের কোন আমেজ বা উৎসব দেখা যাচ্ছেনা।অনেকটা নিরব ভাবেই চলছে এ দুই ইউপির নির্বাচন। তবে উপজেলাবাসীর চোখ এখন চরকাদিরা ইউনিয়নের দিকে। এখানকার নির্বাচনের পরিবেশ দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে ব্যাতিক্রম।আওয়ামীলীগ,বিএনপি,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ ছোট বড় সব দল ও মতের মানুষ প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।এ ইউনিয়নে চারজন হেভিওয়েট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ,নৌকা প্রতিক নিয়ে নুরুল ইসলাম সাগর, মটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে আঃলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দীন রাজু,আনরস প্রতিক নিয়ে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন হাওলাদার ও আওয়ামীলীগ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হন ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন মহিন হাওলাদার (ঘোড়া ) ও শরিফুল ইসলাম (অটোরিকশা)

তবে চরকাদিরা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহকে নিয়ে চলছে ভোটের হিসাব নিকাশ। তিনি হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।গত নির্বাচনেও মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নৌকার প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দীন রাজুকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান হন। এবারো তিনি ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তাও। ৫ বছরে তিনি ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে জনগন ও ভোটারদের নিকট একজন জনপ্রিয় নেতা ও সফল চেয়ারম্যান হিসেবে জনগনের আস্থা অর্জন করেন। একজন নিরহংকার ও নির্ভেজাল আলেম চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি সবার নিকট বিশ্বাস যোগ্য চেয়ারম্যান।

এদিকে মাওলানা খালেদ সাইফুল্লার হাতপাখা ঠেকাতে বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন হাওলাদার। তিনি আনারস প্রতিক নিয়ে লড়ছেন। আবার তারও প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে মাঠ দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন একসময়ের বিএনপির ডোনার,বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা। তিনি চশমা প্রতিক নিয়ে লড়ছেন। ব্যাপক টাকার মালিকও তিনি। যুবদল ছাত্রদল ও বিএনপির একাংশ ইব্রাহিম বাবুলের চশমা প্রতিকের নির্বাচন করছেন।আরেক অংশ হোসেন হাওলাদারের নির্বাচন করলেও তৃণমূলের বিশাল একটি অংশ ও সাধারণ মানুষ হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী খালেদ সাইফুল্লাহর নির্বাচন করছেন।তবে এখন পর্যন্ত চরকাদিরা ইউনিয়নে হাতপাখার নিরব বিপ্লব চলছে।বিএনপি আঃলীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দীন রাজুর সমর্থকদের মধ্যে একাংশ নিরবে হাতপাখার পক্ষে রয়েছেন।এই নিয়ে সকল প্রার্থী অনেকটা দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে।

অন্যদিকে চশমার প্রার্থী ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা বিএনপি জামায়াতের এক অংশকে আঁকড়ে রেখেছেন। এতে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন হাওলাদারের ভোট ব্যাংক অনেকটা কমে যাচ্ছে।হাতপাখা ঠেকানোর যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন হাওলাদার প্রার্থী হয়েছেন তার সেই সপ্ন অনেকটা বাটা পড়ে গেছে।

এদিকে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম সাগরকে ঠেকাতে বিদ্রোহী প্রার্থী হন সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দীন রাজু। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে লড়ছেন।আঃলীগের বিশাল অংশ রাজু চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেল নিয়ে নির্বাচন করাই নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর অনেকটাই দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন।

সবমিলিয়ে চরকাদিরা ইউনিয়নে হাতপাখা-মটরসাইকেল-নৌকা ও আনারস মার্কার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তৃণমুল বিএনপির বিশাল একটি অংশ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় আনারস প্রতিকের প্রার্থী হোসেন হাওলাদারকে সমর্থন দিতে রাজি নয়। তারা কেউ হাতপাখা আবার কেউ বিএনপির ডোনার হিসেবে খ্যাত ইব্রাহিম বাবুল মোল্লার চশমার দিকে রয়েছেন।

চরলরেন্স ইউনিয়নে আঃলীগের একক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার নুরুল আমিন বিনাপ্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হন।

চরমার্টিন ইউনিয়নে আঃলীগ থেকে নৌকা প্রতিক নিয়ে ইউছুফ আলী মিয়া,ইসলামী আন্দোলন থেকে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মাওলানা আব্দুল কাদির ও বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন জাহাঙ্গীর।

তবে সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া নিয়ে ভোটাররা রয়েছে এক ধরনের আতংকে। শেষ ফলাফল দেখতে আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ভোটারদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউপি নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ