নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যে মাঠে বাংলাদেশ রান তুলতে খাবি খেয়েছে, করেছে মাত্র ১২৪ রান, সে মাঠে একই লক্ষ্য পেরোতে ইংল্যান্ডের অনায়াস ব্যাটিং দেখে মনে হতে পারে, ইংল্যান্ড শুধু জেতেইনি, টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংটা কীভাবে করতে হয়, সেটি বুঝিয়ে দিয়েছে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে দারুণ করেও শেষ পর্যন্ত বোলিংয়ে গিয়ে খেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ, সেদিন ম্যাচটা হেরে গিয়েছিল ৫ উইকেটে। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং বিভাগের জন্য কাজটা আরও কঠিন করে রেখে গেলেন ব্যাটসম্যানরা। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ‘মাত্র’ ১২৪ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড ম্যাচটা ৩৫ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে নিয়েছে।
ক্রিকইনফোর হিসাব, আবুধাবির এই মাঠে বিশ্বকাপের আগপর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ওভারপ্রতি গড়ে ৭.১ করে রান উঠেছে। সে হিসাবে বাংলাদেশের জন্য ‘পার স্কোর’ ছিল ১৪২। এরই মধ্যে ১৮ রান কম নিয়ে বোলিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ দল। দল হেরে গেলে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে ‘আমরা আরও ১০-১৫টি রান করতে পারলে ম্যাচটা অন্য রকম হতো’–জাতীয় কথা শোনার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
আরও ১০-১৫ রান যে হয়নি, সেটি বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের ধরনের দায়। এই ব্যাটিং যে টি-টোয়েন্টির সঙ্গেই কোনোভাবে যায় না।
সাদাচোখের বিশ্লেষণেই যান, টি-টোয়েন্টি মানে তো চার-ছক্কার বিজ্ঞাপনই। বাংলাদেশ ইনিংসে ছক্কা তো ইনিংসের ১৯তম ওভারের আগপর্যন্ত দেখাই যায়নি, ১৯তম ওভারে ৯–এ নামা নাসুম আহমেদ টানা দুটি ছক্কা মেরেছেন বলে রক্ষা! পুরো ইনিংসে চারই দেখা গেছে সাকল্যে ১০টি। প্রতি দুই ওভারে একটি করে চার! ছক্কা প্রতি দশ ওভারে একটি করে।
যে ছয় ওভারে ফিল্ডার ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যে থাকে, পাওয়ারপ্লের সে ছয় ওভারে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে বাংলাদেশ এমনভাবেই পিছিয়ে পড়েছে যে পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে রান হয়েছে ৩ উইকেটে মাত্র ২৭! সে সময়ে বাউন্ডারি এসেছে মাত্র তিনটি, তার দুটি আবার লিটন দাস মেরেছেন ইনিংসের প্রথম ওভারে।
চার-ছক্কা হয়নি, সেটির প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রাইক রেটে পড়বে। আহা, স্ট্রাইক রেট! টি-টোয়েন্টিতে অনেক ব্যাটসম্যান হয়তো ১১০-১২০ স্ট্রাইক রেটেও সন্তুষ্ট হতে পারেন না, সেখানে আজ বাংলাদেশের ইনিংসে ১০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেট গেল তিনজন ব্যাটসম্যানের।
এর মধ্যে একজনের অবশ্য স্ট্রাইক রেট ২০০-এর ওপরেও আছে—৯ বলে ১৯ রান করা নাসুম আহমেদের। সত্যি বলতে ১৯তম ওভারে আদিল রশিদকে নাসুমের দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকানোর বাইরে পুরো ইনিংসে একবারও মনে হয়নি, বাংলাদেশ ‘টি-টোয়েন্টি’ খেলছে।
নাসুমের ওই ইনিংস একপাশে রাখুন, বাকি যে দুই ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট ১০০-এর ওপরে, তাঁদের একজন কোনোরকমে দুই অঙ্কে উঠেছেন, অন্যজন উঠতেই পারেননি। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন দাস ৮ বলে করেছেন ৯ রান, আটে নামা মেহেদী হাসানের রান ১০ বলে ১১। এই তিনজনের বাইরে আর কোনো ব্যাটসম্যানের রান বলের চেয়ে বেশি নয়! ভাবা যায়!
পুরো ইনিংসে ২০ ওভারের মধ্যে মাত্র ৫টিতে বাংলাদেশ ১০-এর বেশি রান নিতে পেরেছে। ১৫-এর বেশি রান দেখেছে শুধু নাসুমের দুই ছক্কা মারা ১৯তম ওভারটিই।
ইনিংসে বাংলাদেশের বাউন্ডারি এসেছেও অনেক লম্বা বিরতি দিয়ে দিয়ে। প্রথম ওভারে লিটন দাসের দুই চারের পর বাউন্ডারির দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে পুরো চারটি ওভার! এরপর মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর জুটির সময়ে অষ্টম, নবম ও দশম ওভারে টানা তিন চার দেখা বাংলাদেশের ইনিংসে পরের ৩৫ বলে চার মাত্র একটি! মরুর বুকে খরাটা শুধু বাংলাদেশের বাউন্ডারিরই হলো!
বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চাপে পড়লে এক-দুই নিয়ে রান বের করার দক্ষতা একটু কমই দেখা যায়। আজ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সেভাবে এক-দুই রান নিয়ে চাপমুক্ত হওয়ার চেষ্টা একেবারে ছিল না, তা নয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাতে সাফল্য আসেনি। বরং নিজেদের ভুলে আরও বিপদ বেড়েছে।
প্রতিপক্ষের ফিল্ডিংয়ের ভুলের সুবিধা নিয়ে এক রানের বদলে দুই রান নিতে গিয়ে উল্টো রানআউট হয়ে গেলেন আফিফ হোসেন, এর আগে-পরে দলের ‘রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেট’ সমস্যাটা দৃষ্টিকটুই লেগেছে।
আরও দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার কী, জানেন? চার-ছক্কার তীব্র খরায় ভোগা বাংলাদেশের ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের আউটগুলোর এক-দুটিতেই শুধু ইংলিশ বোলারদের ভালো বল করতে হয়েছে!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।