গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
কুমিল্লায় মন্দিরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন আশিষ মল্লিক (৩০) নামে এক যুবক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন, গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বনানী থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়া ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন আশিষ মল্লিককে গ্রেফতার করে। র্যাব সাইবার টিম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পায়, কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে আসছে। তাদের সেই পোস্টের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলাসহ জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে সহিংসতার ইন্ধন দিয়ে আসছে।
গ্রেফতার আশিষকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেফতার আশিষ সাইবার অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ফার্মগেট এলাকায় কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে আসছিলেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক আরও বলেন, আশিষ মল্লিক গত ১৬ অক্টোবর একটি ফেসবুক পেজ খোলেন। সেই পেজ ও নিজেরর ব্যক্তিগত আইডি থেকে উসকানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে আসছিলেন। তিনি নিজেই সেই পেজের অ্যাডমিন এবং তার সমমনা আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে অ্যাডমিন হিসেবে নিযুক্ত করেন। খুব দ্রুত পেজটির সদস্য ও ফলোয়ার কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। সেই ফেসবুক পেজ থেকে কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়া হচ্ছিল। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহিংসতার বিস্তার ঘটাতে অপতৎপরতা চলছিল। ফেসবুক পেজটিতে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নৃশংস ঘটনার ভিডিও আপলোড করে জনমনে ভয়-ভীতি তৈরিসহ উসকানি দেওয়া হচ্ছিল। অভিযুক্ত আশিষ মল্লিক তার প্রতিটি পোস্টে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, তার ফেসবুক পেজ থেকে পার্বত্য জেলার একজন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়—সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের হুমকি দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। নোয়াখালীতে মারা যাওয়া এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে পুকুর ফেলে দিয়েছেন বলে অপপ্রচার করা হয় সেই পেজে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাকে আশিষ মল্লিকের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, আশিষ মল্লিকের মনে হতো, এ দেশে হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত। তাই তাদের নিয়ে নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উত্তেজিত হবে। এটাই তার মোটিভ ছিল বলে আমাদের ধারণা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।