গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে গুরুতর অসুস্থ এক রোগী নিখোঁজ হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল আটটার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। রোগীর নাম মো. মাঈনুদ্দিন, বয়স ২৮ বছর। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে রাতে এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রোগীর বাবা রবিউল হক।
মাঈনুদ্দিন কিডনি, লিভারের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ২৩ অক্টোবর মাঈনুদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডের ২৯ নম্বর শয্যায় ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালে তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছিল।
রোগীর বাবা রবিউল হক সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন, সকাল আটটার দিকে দুজন চিকিৎসক একটি পরীক্ষার জন্য ছেলে মাঈনুদ্দিনকে ছয়তলার ওই ওয়ার্ড থেকে ১০ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় মাঈনুদ্দিনের বড় ভাই জামাল উদ্দিনও সঙ্গে যান। মাঈনুদ্দিনকে কক্ষে রেখে তার জন্য নাশতা আনতে বাইরে যান জামাল। কিন্তু ফিরে এসে ওই কক্ষে তাকে পাওয়া যায়নি। দিনভর হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, ওয়ার্ড মাস্টার ও ওয়ার্ডের নার্সরা মাঈনুদ্দিনের সন্ধান পাননি। পরে থানায় ডায়েরি করেন।
মাঈনুদ্দিনের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে। দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান মাঈনুদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার সময় পরনে চেক লুঙ্গি ও গায়ে কমলা রঙের টি-শার্ট ছিল। প্রায় ছয় ফুট উচ্চতার মাঈনুদ্দিনের গায়ের রং শ্যামবর্ণ। তাঁর মুখমণ্ডল গোলাকার। রোগাক্রান্ত হওয়ার কারণে তার শরীর খুবই দুর্বল এবং স্বাভাবিক হাঁটাচলা করতে পারেন না।
চিকিৎসা করাতে ছেলে মাঈনুদ্দিনের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন মা ছালেহা খাতুন, বাবা রবিউল হক ও ভাই জামাল উদ্দিন। সারা দিন নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে হয়রান তিনজন।
রাতে শাহবাগ থানায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে রবিউল হক বলেন, ‘বলেন তো কোথায় গেলে আমার ছেলেকে পাব? তার মা হাসপাতালে কাঁদছে। এই রাতে আমরা কোথায় যাব।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে এ তথ্য জানিয়ে দিয়েছি। শিগগির তদন্ত শুরু হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসকেরা হাসপাতাল স্টাফদের সহযোগিতায় রোগী নিয়ে থাকেন এবং তারাই আবার ওয়ার্ডে রোগীকে দিয়ে যান। এই রোগী নিয়েছিলেন চিকিৎসক আশিক জামান। কিন্তু তিনি রোগীকে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেননি। বিষয়টি পরিচালক স্যারকে জানানো হয়েছে।’
রিয়াজ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘রোগীর স্বজনেরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি, এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা-ও দেখা হচ্ছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।