মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সুদানে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে গ্রেফতারের পর সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সার্বভৌম কাউন্সিল এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে দেশটির আরও কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর বিক্ষোভকারীরা রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
বিবিসির স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, বিক্ষোভকারীদের বেসামরিক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করতে দেখা গেছে। এ সময় রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে।
এদিকে, রাজধানীতে সেনাবাহিনী ছাড়াও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে খার্তুম বিমানবন্দরের সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। দেশটিতে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- শিল্পমন্ত্রী ইব্রাহিম আল-শেখ, তথ্যমন্ত্রী হামজা বালৌল ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা ফায়সাল মোহাম্মেদ সালেহ।
এছাড়া দেশটির ক্ষমতাসীন সার্বভৌম পরিষদের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-ফিকে সুলিমান ও রাজধানী খার্তুমের গভর্নর আয়মান খালিদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সুদানের সার্বভৌম কাউন্সিলের প্রধান। সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির যৌথ কাউন্সিল এটি।
বিবিসি জানায়, বুরহান দেশের ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনৈতিক কোন্দলকে দায়ী করেছেন। টিভিতে এক ভাষণে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোন্দল, উচ্চাকাঙ্খা এবং সহিংসতায় উস্কানির কারণে তাকে বাধ্য হয়ে দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।
বুরহান আরও বলেন, সুদান এখনও আন্তর্জাতিক সব চুক্তি এবং বেসামরিক শাসনে ফিরতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে র্নির্বাচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই তা করা হবে।
এদিকে সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সুদান এবং দক্ষিণ সুদানে যুক্তরাজ্যের বিশেষ দূত অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইইউ এবং আরব লিগও অভ্যুত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সুদানের দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ২০১৯ সালে সরিয়ে দেওয়ার পর সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক গোষ্ঠীগুলোর নড়বড়ে এক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির মধ্য দিয়ে গত দুই বছর ধরে পরিচালিত হয়ে আসছিল পূর্ব আফ্রিকার দেশটি।
সেপ্টেম্বরে বশিরের অনুগত সেনাদের ব্যর্থ এক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর থেকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেসামরিক নিয়ন্ত্রিত জোট ফোর্সেস অব ফিডম অ্যান্ড চেইঞ্জের (এফএফসি) সংস্কার এবং মন্ত্রিসভায় রদবদলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অন্যদিকে, বেসামরিক নেতারা এ দাবিগুলোকে দেখে আসছিলেন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের ‘ক্ষমতা দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ হিসেবে।
শুক্রবার এক বক্তৃতায় দেশটির বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদক চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে একটি রোডম্যাপ দিয়েছিলেন এবং সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে তা দেশের ভবিষ্যৎকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে বলে হুঁশিয়ার করেছিলেন।
এর মধ্যেই এফএফসি জোটে থাকা সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত একটি অংশ গত শনিবার বিক্ষোভের ডাক দেয়। তাতে সাড়া দিয়ে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে জড়ো হয়ে ‘ভুখা সরকারের’ অপসারণের দাবিতে স্লোগান দেয় এবং সশস্ত্র বাহিনী ও সুদানের যৌথ সামরিক-বেসামরিক সার্বভৌম পরিষদের প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ অল-বুরহানকে ‘অভ্যুত্থানের মাধ্যমে’ ক্ষমতা নেওয়ার আহ্বান জানায়। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।