বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিতর্কিত সংগঠন ইসকন পূজামণ্ডপে হামলা ও বাড়িঘরে দুর্বৃত্তদের আগুন দেওয়ার ঘটনাকে পুঁজি করে হিন্দু সংগঠনগুলোর সাথে মিশে মাঠে নামায় ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুলিশ-প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পরও এই ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে মাঠ উত্তপ্ত করার প্রচেষ্টাকে উস্কানি হিসেবে দেখছেন অনেকে।
বিশেষ করে যখন দেশের মুসলমানরা কুরআন অবমাননা ইস্যুতে নিরবতা পালন করছে এবং পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযুক্তদের দ্রুত আটক করেছে তখনও সংগঠনটির এভাবে মাঠে নামার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, মূলত সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে দেশে-বিদেশে বেকায়দায় ফেলার কৌশল হিসেবে এ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরব আলোচনা-সমালোচনা চলছে নেট দুনিয়ায়।
‘ইসকন’ নামের সংগঠনটি বরাবরই বিতর্ক, সমালোচনা ও রহস্যের ধূম্রজালে হরেক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। ইসকনকে উগ্রবাদী, প্রকৃত অর্থেই ধর্মবিরোধী ও পেশীশক্তি প্রদর্শনকারী বলছে ক্ষোদ চট্টগ্রামের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী এবং সনাতনী হিন্দু প্রতিষ্ঠান প্রবর্তক সংঘ।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালন করে ইসকন ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ছাড়াও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন। দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা ও বাড়িঘরে দুর্বৃত্তদের আগুন দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদী কর্মসূচি হিসেবে এ অবস্থান ও অনশন পালন করা হয়। সরকারকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেকায়দায় ফেলতে ইসকনের ইন্ধনে এই ধরনের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে অভিযোগে ক্ষোভ ফুসছে সামাজিক মাধ্যম।
ফেসবুকে শিমুল আহমেদ লিখেছেন, ‘‘যখন মুসলিমরা নিরবতা পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে সামনে নিয়ে আসবে। সেখানে ওরা এতো সাহস পায় কোথায়। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর কি ওদের আস্থা নেই নাকি ওরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় এর সঠিক তদন্ত করা হোক।’’
ক্ষোভ জানিয়ে সাজেদুর রহমান শুভ লিখেছেন, ‘‘এসব কর্মসূচি বানচাল করতে সরকারের একরাত সময় লাগবে। সরকার যদি হিন্দুদের উপর হামলার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা না নিতে তাহলে এসব কর্মসূচির যৌক্তিকতা ছিল, কিন্তু সরকার যেখানে আন্তরিকতার সহিত এসব ব্যাপারে এ্যাকশেন নিচ্ছে তারপরও কেন এসব নাটক চলছে।’’
আলামিন মুহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘কথায় আছে, দুধ কলা খাওয়াই কাল সাপ পুষছে! যাদেরকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসানো হইছে .., আজ তারাই বুঝি গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে, মুসলমানরা আন্দোলন করলে বিশ্বে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়েনা, কিন্তু এরা আন্দোলন করলে অন্তত ইন্ডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। সরকারকে বসা উচিৎ, এই ক্রন্দল মিমাংশার জন্য।’’
হান্নান কবির লিখেছেন, ‘‘এই হিন্দুত্ববাদীতারা দুটি goals নিয়ে সামনে আগাচ্ছে। এক ; অখণ্ড ভারতের আর তা নাহলে দুই; পূর্ব তিমুর এবং দক্ষিণ সুদানের মত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভেঙ্গে আলাদা রাষ্ট্র করার। এখানে বর্তমান সময়ের পরিপেক্ষিতে প্রথমটি করা অসম্ভব তাই দ্বিতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চায়। এটি খুবই সহজ আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে। তাই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ইসকন তথা হিন্দুত্ববাদীতার বিষ দাত যদি সরকার এখনই ভেঙে না ফেলে তাহলে দেশকে চরম মূল্য দিতে হবে।’’
মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের আহ্বান, ‘‘এরা উগ্র হয়ে, মাথার উপরে উঠে নাচা শুরু করেছে, এদের মাথা থেকে নামানো জরুরি হয়ে গেছে। আমার প্রিয় নেত্রী ম্যাডাম শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে এদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সেই ব্যবস্থা করা হক।’’
মোঃ সাইদুর রহমান লিখেছেন, ‘‘এদের দাবি দাওয়া, শ্লোগান দেখে মনে হয় এরাই সম্প্রতি হামলা এবং ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত। এই সাম্প্রদায়িক সংগঠন ইসকন বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে অস্থিতিশীল দেশ হিসেবে পরিচিত করতে চাই।’’
মোঃ দুলাল লিখেছেন, ‘‘সরকার যদি ইসকনকে এতো লাই না দিতো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না, সামনে কি আছে আল্লাহ ভালো জানে,
এখনও সময় আছে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক।’’
মোহাম্মাদ সেলিম লিখেছেন, ‘‘সরকার এখন চুপ করে বসে থাকা চলবে না আসল মুখ উম্মোচন করে দিন তাহলে তারা থামবে। আমার মুসলমান ভাইদের প্রতি অনুরোধ আপনারা কোন উস্কানি মুলক কাজে নামবেন না। এখানে দেশী বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে সবাই সাবধান থাকুন। এরা শুধু সরকারকে বিপদে ফেলতে চায় তা নয়, এরা উগ্র সাম্প্রদায়িক, দেশে হাংগামা তৈরি করতে চায়।’’
গাজী শারাফাত লিখেছেন, ‘‘ভারত থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসা ১৫ লক্ষ হিন্দুকে এই মিছিল মিটিং আছে কিনা সেটা তদন্ত করে বাহির করা উচিত কারণ বাংলাদেশ থেকে যখন আমাদের সবার প্রিয় নায়ক ভারতে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েছিলেন তখন তাকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত ভারত নিয়েছিল এই জন্য এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার দেশের আন্দোলনে ভারত হতে আসা মানুষ বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে কিনা সেদিকে দৃষ্টি রাখা দরকার বলে আমি বিশ্বাস করি।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।