পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসকনের বিরুদ্ধে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেছে প্রবর্তক সংঘ। সংঘের নেতারা বলেন, গেরুয়া বেশধারী ইসকন নামধারীরা পেশী শক্তি ব্যবহার করে প্রবর্তকের জমি দখল করছে। তারা জঙ্গিবাদি তৎপরতা সম্প্রসারণ করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মন্দিরে জড়ো করছে। এই আসুরিক শক্তির কড়াল গ্রাস থেকে প্রবর্তক সংঘকে রক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবর্তক সংঘের নেতারা ইসকনের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাট এবং বিদেশে পাচারেরও অভিযোগ করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ইসকনকে প্রবর্তক সংঘ মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করে। সেখানে মন্দির তৈরি করে তা পরিচালনা করবে ইসকন। কিন্তু এখন তারা চুক্তির সব শর্ত ভঙ্গ করে প্রবর্তক সংঘের জমি দখলসহ সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। ইসকন নামীয় জঙ্গিদের ক্রমবর্ধমান ভূমি আগ্রাসন চলছে। তারা প্রবর্তক মন্দিরের নাম ব্যবহার করে ধর্মপ্রাণ ভক্তদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে অন্যত্র পাচার করছে।
তিনি বলেন, তারা মন্দিরে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের জড়ো করে তাদের জঙ্গি কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ করার চেষ্টা করছে। ইসকন জঙ্গিরা নিজেরা বড় ধরনের কোন নাশকতামূলক ঘটনা ঘটিয়ে তা আমাদের নামে চালিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে ইসকনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় জিডি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনকড়ি চক্রবর্তী ইসকনের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার এবং মন্দিরের নামে কর রেয়াতে পাথর, কাঠসহ মূল্যবান নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে এসব ঘটনা তদন্তের দাবি জানান।
তিনি বলেন, সনাতন ধর্মে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। এরা ধর্মকে কলঙ্কিত করেছে। আমরা আগেই বলেছি এরা সাধুবেশে সন্ত্রাসী। ইসকনের সাথে প্রবর্তক সংঘের করা চুক্তি বাতিলের সকল আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চুক্তি বাতিল করব। তিনি বলেন বার বার তাদের বসার জন্য বলা হলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি। প্রবর্তক সংঘকে বাদ দিয়েই তারা মন্দির উদ্বোধন করেছে। জাল কাগজ সৃষ্টি করে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী তারা মন্দির বানাবে আর সেখানে পূর্জার আয়োজন করবে। কিন্তু এখন তারা ব্যবসা করছে। তাদের এমন জঙ্গিবাদি অপতৎপরতা জানা থাকলে তাদের সাথে কোন চুক্তি হতো না বলেও জানান তিনি।
দুদকে প্রবর্তক সংঘের পক্ষ থেকে ইসকনের বিরুদ্ধে গত ১৬ জুন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইসকন মন্দির নির্মাণে ১০০-১৬০ কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু এর কোন হিসাব তারা দেয়নি। প্রকৌশলীদের মতে, এই মন্দির নির্মাণে সর্বোচ্চ ২০-২২ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। ইসকনের নাম ব্যবহার করে তারা কোটি কোটি টাকা আয় করেছে,পাচার করছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবর্তক সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা, সহ-সভাপতি প্রফেসর রনজিৎ কুমার দে, ট্রেজারার ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, সদস্য অ্যাডভোকেট স্বভূপ্রসাদ বিশ^াস প্রমুখ।
ইসকনের বক্তব্য
প্রবর্তক সংঘ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে গতকাল ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসকন সম্পর্কে প্রবর্তক সংঘের দেয়া বক্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রীকৃষ্ণ মন্দির ও মন্দিরের সেবা পূজায় আত্মোৎসর্গিকৃত সাধু সন্ন্যাসীদের আশ্রম বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পেরে তারা ইসকনের নিরীহ সাধুদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করে ধর্মপ্রাণ মানুষদের বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস করছেন। ইসকন শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের বিগ্রহের নির্দিষ্ট ভূমির বাইরে প্রবর্তক সংঘের ভূমি দখল করেনি। বরং সংঘের কতিপয় অর্থলোভী ব্যক্তি একের পর এক সাধুদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। ইসকন সদস্যগণ সবসময় দেশের আইন, আদালত, সংবিধান ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পুর্ণ অনুগত এবং রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদিত অডিট ফার্ম কর্তৃক সমস্ত আর্থিক হিসাব নিকাশ নিয়মিতভাবে নিরীক্ষা করা হয়। মন্দিরের জন্য মার্বেল পাথর শতভাগ ব্যবহার করা হয়েছে। মন্দিরের আধ্যাত্মিক পরিবেশ বিনষ্ট করে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ইতিমধ্যে মন্দিরের বৈধ গ্যাস ও বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ ব্যবস্থ বন্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলেও প্রবর্তক সংঘের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।