বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তিন ইউপি নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারনে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের। একাধিকবার বৈঠক করে মনোনয়নবঞ্চিতদের বশে আনতে ব্যর্থ হচ্ছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন জেলা-উপজেলা নেতাকর্মীরাও। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা বিদ্রোহী প্রার্থীদের সরে দাঁড়াতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও তা মানেননি তারা। বরং তারা সক্রিয়ভাবে নিজ নিজ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন দলটির উপজেলা সভাপতি নুরুল আমিন মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক এডঃ নুরুল আমিন রাজু। এর পরেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো নিয়ে রয়েছে সংশয়। তারা মাঠ ধাবড়িয়ে মিছিল মিটিং গণসংযোগ ও মোটরসাইকেল শোডাউন করে ভোট চাচ্ছেন।এলাকায় এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপক জনসমর্থন থাকায় মাঠ ছাড়তে রাজি নয় তারা। আর তাতে নৌকার প্রার্থীরা অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়েন।
নির্বাচনী মাঠ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। বিদ্রোহী এসব প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ।বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা।
দলীয় সুত্রে জানাযায়,কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা চরমার্টিন ও চরলরেন্স ইউনিয়নে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন।
এতে চরকাদিরা ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম সাগর।এতে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফ উদ্দীন রাজু ও আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম বাবুল মোল্লা। এই দুই নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট করছেন। দুজনই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মিছিল মিটিং চালিয়ে ভোটারদের দারে দারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন।রয়েছে ব্যাপক জনসমর্থনও।
চরমার্টিন ইউনিয়নে নৌকার টিকেট পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউছুফ আলী মিয়া। তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন।তিনিও এলাকার একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
তবে চরলরেন্স ইউনিয়নে নৌকার একক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার নুরুল আমিন। ইতিমধ্যে ঋণখেলাপির দায়ে তার মনোনয়ন বৈধ হওয়া নিয়েও রয়েছে সংশয়। নির্বাচন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে নেতাকর্মী ও ভোটারদের মাঝে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। তবে তার সাথে আওয়ামীলীগের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। ঋণখেলাপির সমস্যা সমাধান করতে পারলে ঐ ইউনিয়নে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হবেন বলে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চরমার্টিন ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ইউছুফ আলী বলেন,বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছি। দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে বলছে হাইকমান্ড। না সরলে চরম খেসারত দিতে হবে তাকে।
বিদ্রোহী প্রার্থী আব্বাস উদ্দিন বলেন,এবারের নির্বাচনে আওয়ামীগের হাইকমান্ড নৌকা মনোনয়ন দিতে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি।টাকার বিনিময়ে জনবিচ্ছিন্ন ও বিতর্কিত লোককে মনোনয়ন দেওয়ায় জনগন ও ভোটারদের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি।
চরকাদিরা ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর বলেন,দল আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু মাঠে আরো দুইজন বিতর্কিত ব্যক্তি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে।নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করা মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। তাই দল এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশা রাখি।
বিদ্রোহী প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দীন রাজু বলেন,আমি নৌকার বিরুদ্ধে নই। আমি খন্দকার মোস্তাকের বিরুদ্ধে ভোট করছি।গত নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়ে পাঠিয়েছেন।তখন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম সাগর নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে আমাকে ও নৌকা মার্কাকে পরাজিত করেন।
দলের তৃনমুল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন,কোন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবেনা। সবাই তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নৌকার প্রার্থীর ভোট করবে।
একই বক্তব্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার নুরুল আমিনের। তিনি বলেন যারা নৌকার বিরুদ্ধে থাকবে,তাদেরকে দল থেকে চিরতরে বহিস্কার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।