নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৫৩
ওমান : ২০ ওভারে ১২৭/৯
ফল : বাংলাদেশ ২৬ রানে জয়ী
একটা ম্যাচ হেরেই সব এলোমেলো! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘মূল মঞ্চ’ সুপার টুয়েলভে খেলতে পারবে তো বাংলাদেশ? সংশয়ের সঙ্গে প্রশ্নের দানা বাঁধতে থাকে। বিদায়ের শঙ্কাও তো চোখ রাঙাচ্ছিল। ওমানের কাছে হারলেই যে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লজ্জায় ডুবতে হবে। সব মিলিয়ে চাপের বোঝা মাথায় নিয়ে নামা বাঁচা-মরার লড়াইয়ে উতরে গেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ওমানকে ২৬ রানের হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে থাকলো মাহমুদউল্লাহরা।
গতকাল ওমানের আল আমিরাত স্টেডিয়ামে জয়ের এই ব্যবধানে অবশ্য বোঝা যাবে না কতটা চাপে ও অস্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাতের আগে উল্টো ওমানই চাপে রেখেছিল। যদিও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে আটকে দিয়েছে ওমানকে। ২০ ওভারে বাংলাদেশের করা ১৫৩ রানের জবাবে ওমান ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে করতে পারে ১২৭ রান।
বাংলাদেশ জিতলেও ‘বি’ গ্রæপের পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানেই রয়েছে। দুই ম্যাচে ২ পয়েন্ট (+০.৫০) মাহমুদউল্লাহদের। সমান ম্যাচে ওমানের পয়েন্টও ২। তবে নেট রানরেটে এগিয়ে ওমান (+০.৬১৩)। আর এই গ্রæপে টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে স্কটল্যান্ড। অন্যদিকে তিন ম্যাচে কোনও পয়েন্ট না পেয়ে পাপুয়া নিউগিনির বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আসে ১২ রান। তবে দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মুস্তাফিজ। আকিব ইলিয়াসকে ফিরিয়ে দেন প্রথম বলেই। উইকেট হারিয়েও হাল ছাড়েনি ওমান। ৫ ওভারে তুলে নেয় ৪০ রান। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই ফিরতে পারত যতীন্দর সিং। মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ ফেলে দেন মাহমুদউল্লাহ। তবে যতীন্দরকে না পারলেও একই ওভারে ফিজ ফিরিয়ে দেন কাশিয়াপ প্রজাপতিকে। ১০ ওভার শেষে ওমানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭০ রান। দলীয় ৮১ রানে ফেরেন জিশান মাকসুদ। ১২ রান করা জিশানকে ফেরান মেহেদী। নিজের তৃতীয় ওভারে সাকিব ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক হতে থাকা জিতেন্দরকে। ৩৩ বলে ৪০ রান করে আউট হন জিতেন্দর। ১৫ তম ওভারে এক শ ছাড়ায় ওমানের রান। তবে দ্রæত আরও তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন সাইফউদ্দিন ও সাকিব। তিন উইকেটের দুটিই নেন সাকিব। এমনকি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সাকিব। ১০৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ওমান। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয় ২৬ রানে।
এর আগে ওমানের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। একাদশে সৌম্য সরকারের জায়গায় দলে আনা হয় মোহাম্মদ নাঈমকে। ওমানের পেস আক্রমণের সামনে বেশ সতর্কভাবে শুরু করে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই লিটনকে ফিরিয়ে উল্লাসে মাতেন ওমানি পেসার কলিমুল্লাহ। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান লিটন। জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন লিটন। পরের ওভারে বিলাল খানের লেগবিফোরের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে লিটনকে বিদায় করে ওমান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আসে বাংলাদেশের প্রথম বাউন্ডারি। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন ফাইয়াজ বাট। দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে ফিরিয়ে দেন তিন নম্বরে উঠে আসা মেহেদী হাসানকে। রানের খাতায় খুলতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাবধানী হয়ে খেলতে শুরু করেন নাঈম ও সাকিব। তবে একের পর এক ডটে চাপ বাড়ছিল রানরেটে। প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ২৯। এরপর ব্যক্তিগত ১৮ রানে জীবন পান নাঈম। ক্যাচ মিস করে নাঈমকে ছয় উপহার দেন যতীন্দর সিং। বাজে ফিল্ডিং প্রদর্শনীতে পরের ওভারে দ্বিতীয়বার জীবন পান নাঈম।
বোলিংয়ে শুরু থেকে ছন্দে থাকলেও, ফিল্ডিং ও ক্যাচিংয়ে শুরু থেকেই ভালো করতে পারেনি ওমান। ওমানি ফিল্ডারদের ভুলের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস এগিয়ে নেন নাঈম-সাকিব। ১০ ওভারে এ দুজন দলকে নিয়ে যান ৬৩ রানে। ধীরে ধীরে রানের গতিও বাড়ান এ দু’জন। বিশেষ করে ব্যাট হাতে সাকিব ছিলেন বেশ সাবলীল। ১২ তম ওভারে চার-ছয়ে ১৭ রান নিয়ে স্ট্রাইক রেটও কিছুটা বাড়িয়ে নেন সাকিব-নাঈম। ১৪ তম ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ এক শ ছাড়ায়। একই ওভারে ফিরে যান সাকিব। শুরু থেকে বাজে ফিল্ডিং করা ওমান সাকিবকে ফেরায় দুর্দান্ত এক রান আউটে। আকিব ইলিয়াসের সরাসরি থ্রুতে ফেরেন ২৯ বলে ৪২ রান করা এই অলরাউন্ডার। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নুরুল হাসান সোহানও। ফিরছেন ৩ রান করে। তবে প্রান্ত আগলে ফিফটি পূরণ করে নেন নাঈম। ১ রান করে আউট হয়ে যান আফিফ হোসেনও। শেষ দিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান নাঈমও। ৪৯ বলে ৬৪ রান করেন এই ওপেনার। দলের সংগ্রহে তেমন অবদান রাখতে পারেননি মুশফিকও। ৬ রান করে ফিরেছেন ফাইয়াজ বাটের বলে নাসিম খুশিকে ক্যাচ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫৩ রান।
ব্যাটহাতে ২৯ বলে ৪২ রানের ইনিংস ও বলহাতে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার উঠেছে সাকিবের হাতে। আগামীকাল বিকেল ৪টায় গ্রæপের শেষ ম্যাচ খেলতে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। একই দিনে ওমানের মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ড
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।