নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্ষুদ্র ফরম্যাটের প্রথম বিশ্বআসরেই পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হারিয়ে বিশ্বকে ভাবতে বাধ্য করেছিল- এই ফরম্যাটটি তাদের জন্যই। তারপর থেকে প্রতিটি আসরে নাম লিখিয়েও লাল-সবুজদের আক্ষেপ হয়ে আছে একটি পরিসংখ্যান- বাংলাদেশই একমাত্র দল যারা ৬টি আসরে খেলেও সেমির গণ্ডিতে পা রাখতে ব্যর্থ। সেই আক্ষেপ এখন রূপ নিয়েছে হৃদয়ের রক্তক্ষরণে
চার-ছক্কার ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। ক্ষুদ্র ফরম্যাটের প্রথম বিশ্বআসরেই পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হারিয়ে বিশ্বকে ভাবতে বাধ্য করেছিল- এই ফরম্যাটটি তাদের জন্যই। তারপর থেকে প্রতিটি আসরে নাম লিখিয়েও লাল-সবুজদের আক্ষেপ হয়ে আছে একটি পরিসংখ্যান- বাংলাদেশই একমাত্র দল যারা ৬টি আসরে খেলেও সেমির গণ্ডিতে পা রাখতে ব্যর্থ।
সেই আক্ষেপ এখন রূপ নিয়েছে হৃদয়ের রক্তক্ষরণে। হাঁটি হাঁটি পা-পা করে দীর্ঘ পথ মাড়িয়ে এসেও নতুন হতাশা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। নেই একজন পাওয়ার হিটার, নেই কোনো এক্সপ্রেস গতির পেসার, এমনকি নেই একজন মোড় ঘুড়িয়ে দেওয়া লেগ স্পিনারও। তাই তো টি-টোয়েন্টিতে খুব একটা সুখস্মৃতিও সঙ্গ দেয়নি দলটির। তবে সাম্প্রতিক কয়েকটি সিরিজে টাইগারদের পারফরম্যান্স আশার পালে হাওয়া দিচ্ছে। জিম্বাবুয়েতে গিয়ে অনভ্যস্ত কন্ডিশনে সিরিজ জিতে আসার পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে হারানো নতুন সম্ভাবনা জাগাচ্ছে।
টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইতিহাস খুব একটা স্বস্তির নয়, ২৫ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র পাঁচটি। ২০০৭ বিশ্বকাপে উইন্ডিজের বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ের পর কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে বড় কোনো দলকে হারাতে পারেনি তারা। হংকংয়ের মতো দলের কাছে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবার দেশ ছাড়ার আগে অসংখ্য সাক্ষাৎকারে ভালো কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে বাংলাদেশের ভালো করতে হলে দল হিসেবে খেলতে হবে। পুরো দলের পারফরম্যান্স এক সুতোয় গাঁথতে পারলেই কেবল বিশ্বমঞ্চে ভালো কিছু সম্ভব। রাসেল, গেইল বা পান্ডিয়ার মতো কেউ বাংলাদেশ দলে নেই যে, মুহূর্তের মধ্যে চার-ছয় মেরে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেবেন। তাই দল হিসেবে খেলাটাই একমাত্র ভরসা। আর এই দল হয়ে ওঠার পেছনে বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ব্যাটিং। সম্প্রতি সফলতা এলেও ব্যাটিং মোটেই ক্লিক করেনি। যদিও সাকিবসহ অনেকেই বলেছেন, মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং পারফরম্যান্সকে হিসাবে না ধরতে। তার পরও বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে সমস্যাটা পুরোনো। লিটন মাঝেমধ্যে ঝলক দেখালেও ধারাবাহিকতা নেই। নাঈম শেখের মধ্যে ধরে খেলার প্রবণতা দেখা যায়। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও ছন্দে নেই। তারা ছন্দে না থাকলে পাওয়ার প্লে কাজে লাগানো যাবে না। আর টি২০-তে বড় স্কোর করতে হলে পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতেই হবে। এজন্য দুই ওপেনারের পাশাপাশি তিনে ব্যাট করতে নামা সাকিব আল হাসানকে জ্বলে উঠতে হবে।
মিডল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ পরীক্ষিত। এখানে খানিকটা আস্থা আছে। দলের প্রয়োজনে বহুবার জ্বলে উঠেছেন তারা। যদিও মুশফিক কিছুদিন ধরে খেলার বাইরে ছিলেন। তবে দেশ ছাড়ার আগে ‘এ’ দলের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে তিনি রান পেয়েছেন। এই পোড় খাওয়া ক্রিকেটারের সঙ্গে আছেন তিন তরুণ আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। এই তিনজনই দ্রুত রান তোলা ও ফিনিশিংয়ে বেশ দক্ষ। বড় স্কোর করতে হলে দারুণ শুরুর পাশাপাশি ফিনিশিংটাও দুর্দান্ত হতে হবে।
সে তুলনায় বাংলাদেশের বোলিংটা বেশ আস্থার জায়গা। এর সবচেয়ে বড় কারণ মুস্তাফিজ ও সাকিব। মুস্তাফিজের কথা আলাদা করে বলতেই হবে। বল হাতে তিনি কী করতে পারেন, সেটা এরই মধ্যে প্রমাণিত। বাঁহাতি এ পেসার এখন ছন্দেও আছেন। জাতীয় দলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করছেন। আইপিএলেও বেশ ভালো বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। দারুণ ফর্মে আছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদও। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার বোলিং করেছেন তিনি। কিউইদের বিপক্ষে হয়েছেন সিরিজসেরা। পেসার তাসকিনও এখন অনেক পরিণত। গতি বেড়েছে, বলের ওপর নিয়ন্ত্রণও এখন তার বেশ ভালো। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতে আসা তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম যদি এই মঞ্চেও প্রতিভার ঝলক অব্যাহত রাখতে পারেন তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে। সে সঙ্গে আছেন শেখ মেহেদী, যিনি কিনা কার্যকরী অফস্পিনের পাশাপাশি মারকুটে ব্যাটিংও করতে পারেন, সব কথার শেষ কথা, সবার পারফরম্যান্সকে এক সুতোয় গাঁথা, যেটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
ছয়টি টি২০ বিশ্বকাপ খেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পেরেছে একবার। ২০০৭ সালের প্রথম আসরে ডমিনেট করে খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সুপার এইটে উন্নীত হয়েছিল। বাকি বিশ্বকাপে বড় কোনো দলের বিপক্ষে জয় নেই। এবার সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচ জয়ের আশা করতেই পারি। তবে কাটুক সেমির গেরো!
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচ
তারিখ সময় প্রতিপক্ষ ভেন্যু
১৭ অক্টোবর রাত ৮টা স্কটল্যান্ড মাসকাট, ওমান
১৯ অক্টোবর রাত ৮টা ওমান মাসকাট, ওমান
২১ অক্টোবর বিকেল ৪টা পাপুয়া নিউগিনি মাসকাট, ওমান
তারিখ সময় প্রতিপক্ষ ভেন্যু
২৫ অক্টোবর রাত ৮টা আফগানিস্তান শারজাহ
২৭ অক্টোবর রাত ৮টা নির্ধারিত হয়নি আবু ধাবি
৩ নভেম্বর বিকাল ৪টা নিউজিল্যান্ড দুবাই
৫ নভেম্বর রাত ৮টা ভারত দুবাই
৭ নভেম্বর রাত ৮টা পাকিস্তান শারজাহ
তারিখ সময় প্রতিপক্ষ ভেন্যু
২৪ অক্টোবর বিকাল ৪টা নির্ধারিত হয়নি শারজাহ
২৭ অক্টোবর বিকাল ৪টা ইংল্যান্ড আবু ধাবি
২৯ অক্টোবর বিকাল ৪টা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শারজাহ
২ নভেম্বর বিকাল ৪টা দক্ষিণ আফ্রিকা আবু ধাবি
৪ নভেম্বর বিকাল ৪টা অস্ট্রেলিয়া দুবাই
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।