নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তারকা ক্রিকেটারের তকমা পাওয়ার স্বপ্ন ছিল ছোটবেলা থেকেই। স্বপ্নপূরণের সিঁড়ি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে (বিকেএসপি)। বড় খেলোয়াড় হতেই ভর্তি হয়েছিলেন সেখানে। তার নাম আফিফ হোসেন ধ্রুব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন প্রজন্মের তারকা। যে কোন অবস্থায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার দারুণ ক্ষমতা যার। বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিকেএসপিতে ভর্তি হলেও আইন ভঙ্গের অপরাধে সেখান থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। তবে রক্তে যার ক্রিকেট তাকে আটকানো সাধ্য কার? বিকেএসপি থেকে বহিষ্কার হলেও ব্যাট-বলের মধুর প্রেমে আচ্ছন্ন আফিফ কিন্তু হাল ছাড়েননি। জরিমানা দিয়ে আবার ভর্তি হন বিকেএসপিতেই। বাকিটা ইতিহাস। যে ইতিহাস সবারই জানা। বিকেএসপির বহিষ্কৃত সেই ছেলেটিই এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপরিহার্য এক অংশ। জ্বলজ্বলে এক ধ্রুবতারা!
বাংলাদেশের ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডবের অবদান অনস্বীকার্য। তবে বয়সের ভারে কিংবা বাস্তবতা মেনে ধীরে ধীরে পঞ্চপান্ডব অধ্যায় কিন্তু গোধূলি লগ্নে। মাশরাফি বিন মর্তুজা তো অঘোষিত অবসরে। প্রকৃতির নিয়ম মেনে ধীরে ধীরে একই পথে হাঁটবেন সাকিব, তামিম, মুশফিক মাহমুদউল্লহরাও। ঘটনাবহুল পঞ্চপান্ডব অধ্যায় শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাল ধরবেন, সামনের কাতারে থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন যারা তাদের মধ্যে প্রথম দিকেই যার নাম আসে তিনি তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব। পঞ্চপান্ডবের ছায়ায় থেকে যিনি এখন অনেকটাই পরিণত। বলা যায় প্রতিষ্ঠিতও। এবারই প্রথম বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের গর্বিত সদস্য হলেন আফিফ। দলের সঙ্গে পাড়ি জমালেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে।
জন্মস্থান খুলনা হলেও বিকেএসপিতেই বেড়ে ওঠেছেন এই বাঁ-হাতি। জাতীয় পর্যায়ে দেশের ক্রিকেটে আলো ছড়ানোর আগে খেলেছেন বিকেএসপির বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে। যদিও বয়সভিত্তিক অনূর্ধ্ব-১৪ দলে খেলেছিলেন খুলনা জেলার পক্ষে। পরে খুলনা বিভাগীয় দল, বাংলাদেশ যুব দল এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নজরকাড়া পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান আফিফ। দেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি দিয়েই তার অভিষেক। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই ডাক উপহার পেয়েছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচের পর বাদও পড়েছিলেন জাতীয় দল থেকে। তবে ফের যখন ফিরলেন জাতীয় দলে, নিজের জায়গা একদম পাকাপোক্ত করেই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত আফিফের সেরা ইনিংস জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৯ সালে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে মারাত্মক চাপের মুখে মাত্র ২৬ বলে ৫২ রানের দুর্দান্ত ওই ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে মাত্র ৬০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল। ম্যাচটি জিততে তখনো স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ৮৫ রান। ওই মুহূর্তে জ্বলে ওঠেছিল আফিফের ব্যাট। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পারলেও তার ওই ইনিংস বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছিল।
ব্যাট হাতে পরীক্ষিত হলেও বল হাতেও খারাপ নন আফিফ। পার্ট-টাইম অফ-স্পিনার হলেও, দলকে ব্রেক-থ্রু এনে দিতে পারেন, পারেন প্রতিপক্ষের রানরেট চেপে ধরতেও। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবেই নিজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আফিফ। টি-টোয়েন্টিতে ২৮ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত আফিফের রান ৩৭৩। যার গড় ১৮.৬৪। ১২৩.৫০ স্ট্রাইক রেট মন্দ নয়। তবে এসব সংখ্যা পুরোটাই ম্লান তার ব্যাটিং অ্যাপ্রোচের কারণে। তিনি সাহসী ব্যাটসম্যান। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটাও সাহসীদের জন্যই। পাওয়ার কিংবা পিঞ্চ হিটিংয়ে দর্শকরা মুগ্ধ হন। আফিফ সেরকমই। দেখতে লিকলিকে, ছোট-খাটো হলেও তার মধ্যে আছে বড় শট খেলার দারুণ এক ক্ষমতা। যেকোনো মূহূর্তে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। বিশ্বমঞ্চে সেই ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ এসেছে আফিফের সামনে। বিকেএসপির বহিষ্কৃত সেই ছেলেটির অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। তিনি পারবেন কি ওমানে জ্বলে উঠতে?
আফিফ হোসেন ধ্রুব
জন্ম : ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯,
ব্যাটিং : বাঁহাতি মিডল অর্ডার,
বোলিং : ডানহাতি অফব্রেক
টি-২০ অভিষেক- ২০১৮ সালের
১৫ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।