বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরকে (প্রিন্স মুসা) জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে ও স্ত্রী। মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ভুয়া অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার আব্দুল কাদেরের সঙ্গে মুখোমুখি করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুসা বিন শমসের বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া অতিরিক্ত সচিব আবদুল কাদের একজন মিথ্যাবাদী। আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব, তার বিরুদ্ধে মামলা করব।
এদিকে পুলিশের দাবি, অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী আবদুল কাদেরের প্রতারণার দায় মুসা বিন শমসের এড়াতে পারবেন না। তিনি (মুসা বিন শমসের) প্রতারক কাদেরকে তার আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তাকে ২০ কোটি টাকার চেক দিয়েছেন। তাকে ‘বাবা’, ‘সোনা’ বলেও ডাকতেন বলে জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে উনি (মুসা) অন্তঃসারশূন্য মানুষ। উনাকে একটা ভূয়া লোক মনে হয়েছে। উনার কিচ্ছু নাই। গুলশানে একটি বাড়ি আছে তাও স্ত্রীর নামে। বাংলাদেশে তার নামে আর কিছু পাইনি। তবে উনি মুখরোচক গল্প বলেন।’
অপরদিকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মুসা বিন শমসের বলেছেন, তার সুইস ব্যাংকে ৮২ মিলিয়ন ডলার আটকে আছে। সেই টাকা পেলে তিনি পুলিশকে ৫০০ কোটি টাকা দিতে চেয়েছেন। এছাড়া তিনি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও দুদকের ভবনও করে দিতে চেয়েছেন।
প্রিন্স মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ, পরবর্তীতের তার বক্তব্য ও পুলিশের বিবৃত নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘মুসা বিন শমসের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবিকে বলেছেন, সুইস ব্যাংকে তার ৮২ মিলিয়ন ডলার আটকে আছে অর্থাৎ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা এই টাকা ফেরত পেলে তিনি পুলিশকে দেবেন ৫০০কোটি টাকা, দুদককে দেবেন ২০০ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পদ্মাসেতু করে দেবেন। প্রশ্ন হল, পুলিশ ও দুদককে দিতেই তার ৭০০ কোটি টাকা শেষ হয়ে যাবে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর টাকা কোথায় পাবেন? আরো প্রশ্ন রয়েছে, সুইস ব্যাংকে তিনি যে এই বিপুল পরিমাণ টাকা রেখেছেন তা উপার্জনের উৎস কি? এখন পর্যন্ত তার যাপিত জীবনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, এরকম দাতা হাতেম তাই হওয়ার কোনো নজির রয়েছে কি? নাকি তিনি লোভ দেখিয়ে কাউকে প্রভাবিত করতে চাইছেন? একটা গল্প মনে পড়ছে। এক ভদ্রলোক ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছেন, ভগবান তুমি যদি আমাকে ১০০০ কোটি টাকা দাও তাহলে আমি ৮০০ কোটি টাকা গরিব মানুষকে বিলিয়ে দেব। যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয়, তাহলে গরিব মানুষের ৮০০ কোটি টাকা কেটে রেখে তুমি আমাকে ২০০ কোটি টাকা দাও।’
আতিকুর রহমান লিখেছেন, ‘ভালো করে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক।’
‘মুসার কিছু নেই’ পুলিশের এমন দাবি প্রসঙ্গে খালেদ সাইফুল্লাহ লিখেছেন, ‘কত বৎসর থেকেই শুনছি, উনি বিখ্যাত সম্পদশালী আর আজকে এক রাতেই সব খালি! কি আজবরে দেশ!’
সেলিম রেজা লিখেছেন, ‘যদি সত্যি ওনার টাকা থাকে তালে দেশে বিনিয়োগ করে দেশের বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যস্থা করুক। এদিক ওদিক টাকা খরচ করার কোন মানে হয় না।’
আলামিন হোসাইনের দাবি, ‘মুসা বিন শমসেরের যত অবৈধ টাকা আছে, তা দেশের সকল গরীব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক।’
শরীফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘কোন পক্ষের কথাই বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ মুসার কিছু না থাকলে সে এত বডিগার্ড, দামি গাড়ি, বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, পোশাক, আয়েশী জীবন-জাপনসহ এত কিছু করে কিভাবে? অপরদিকে এত টাকা আছে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ হচ্ছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।