রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
যশোর-খুলনা মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই সংস্কার করা হলেও দুই মাস না যেতেই ফের অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ৩শ’ ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোর-খুলনা মহাসড়ক ফের মরণফাঁদে পরিণত হতে চলেছে। কোন জোড়াতালিই যেন আর কাজে আসছে না। সড়ক সংস্কারের নামে জোড়াতালি দিলেও সে সকল স্থানে এবার একের পর এক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই পুনরায় সংস্কার করার পরও সড়কের কোথাও কোথাও ইটের জোড়াতালি লক্ষ্য করা গেছে। সড়কে ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্তের। দেশের অন্যতম ব্যস্ততম মহাসড়ক যশোর-খুলনা মহাসড়ক। দেশের বৃহত্তম নৌ- বন্দর মোংলা ও নওয়াপাড়ার সাথে সরাসরি সংযোগ ঘটেছে এ সড়কটির মাধ্যমে। নওয়াপাড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া এ সড়কটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ ততটাই যেন অবহেলিত যুগ যুগ ধরে। এ সড়কটি দিয়েই প্রতিদিন লাখ-লাখ মানুষ মানুষ যাতায়াত করে। দেশের ৭০ শতাংশ সার বিভিন্ন অঞ্চলে নওয়াপাড়া হতে এ সড়ক দিয়েই সরবরাহ করা হয়। হাজার হাজার কোটি টাকার কয়লা নওয়াপাড়া বন্দর হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ সড়ক দিয়েই সরবরাহ করা হয়। এছাড়া খৈল, ভূট্টা, ভুষি, মাছের খাবার, চাল-ডালসহ যাবতীয় পণ্য এ সড়ক দিয়েই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। বছরের পর বছর বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা এ সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সড়কটি উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সে মোতাবেক ৩শ’ ২১ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০১৮ সালের মে মাসে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করে ‘তমা কনস্ট্রাকশন’ ও ‘মাহাবুব এ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের জুন মাসে মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলে কাজ শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই তমা কন্সট্রাকশনের নির্মিত অংশে (পদ্মবীলা থেকে অভয়নগরের শেষ সীমানা) পর্যন্ত সড়কটি ফুলে ফেঁপে বেহাল দশায় পরিণত হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রীসহ সড়ক বিভাগে শুরু হয় তোলপাড়। সরব হয়ে ওঠে গণমাধ্যম। অতিরিক্ত তাপমাত্রার সময় সড়কে বিটুমিনের কাজ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এমন বক্তব্য দিয়ে দায় সারে সড়ক বিভাগ। ছুটে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি কঠোরভাবে ঘোষণা দেন বর্ষা মৌসুমের আগে সড়ক সংস্কার করে দ্রুত কাজ শেষ করার। এ সময় তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সড়ক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভৎসনা করেন। বিষয়টি নিয়ে নাখোশ হন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। গত দেড় মাস আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কের কাজ যথাযথভাবে দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে চারিদিকে তোলপাড় শুরু হলে সড়ক বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ও তমা কনস্ট্রাকশন সড়ক সংস্কারের নামে ফুলে ফেঁপে ওঠা অংশ গুলো ভারিযন্ত্র দিয়ে তুলে ফেলে সড়ক সমান করার কাজে লাগে। কোথাও কোথাও নামমাত্র বিটুমিন ছিটিয়ে দেয়। দায়সারাভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে ফুলে ওঠা অংশ তুলে ফেলায় সেসকল অংশগুলোতে এখন ধীরে ধীরে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়ক জুড়ে ইতোমধ্যে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া পিচ ওঠে একাকার হয়ে গেছে। ব্যস্তময় এই মহাসড়কে চলাচল করা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার যানবাহনসহ পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হচ্ছে। প্রায়ই এসব স্থানে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অতিদ্রুত মহাসড়কটি পুনঃমেরামত করা না হলে রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ইতোমধ্যে তমা কন্সট্রাকশন পদ্মবিলা থেকে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করেছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত শেষ হবে।
এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, এই গুরুত্বপূর্ন সড়কে যানবাহন এবং যাত্রী সাধারণ চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দীর্ঘদিন পরও এ সড়কে সমস্যা রয়েই গেল। সড়কটি চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।