Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোবেল শান্তি পুরস্কার : ওবামা, সুচিসহ যে ৬ জনকে নিয়ে বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২১, ৮:৪৭ পিএম

২০২১ সালের নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে আগামীকাল শুক্রবার। কিন্তু অতীতের অনেক সময়ের মতো এবারের মনোনয়ন নিয়েও বিতর্কের আশঙ্কা আছে কি-না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় নোবেল শান্তি পুরষ্কারকে। খবর বিবিসির।
সুইডিশ বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী ও মানবহিতৈষী আলফ্রেড নোবেল যে ছয়টি পুরষ্কারের প্রবর্তন করেছিলেন এটি তার একটি।
কিন্তু এর রাজনৈতিক প্রকৃতির কারণে এ পদক অন্য পাঁচটি ক্যাটাগরির চেয়ে অনেক বেশি বিতর্ক তৈরি করেছে বিভিন্ন সময়ে। এখানে তেমন কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো।
বারাক ওবামা : ২০০৯ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য বারাক ওবামার নাম ঘোষণায় ধাক্কা খেয়েছিলেন অনেকেই, যার মধ্যে ছিলেন স্বয়ং নোবেল বিজয়ী ওবামা নিজেও।
ওবামা এমনকি ২০২০ সালে নিজের স্মৃতিকথায় ওই ঘোষণা প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসেবে লিখেছেন “কিসের জন্য?”
তখন তার ক্ষমতায় আসার মাত্র নয় মাস ছিল এবং সমালোচকরা তাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্তকে ‘অপরিপক্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
সত্যি কথা বলতে মিস্টার ওবামার শপথ নেয়ার ১২ দিনের মধ্যেই পুরষ্কারের জন্য নাম জমা দেয়ার সময় উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
২০১৫ সালে নোবেল ইন্সিটিটিউটের সাবেক পরিচালক গের লান্ডেটস্ট্যাড বিবিসিকে বলেছিলেন, যে কমিটি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ইয়াসির আরাফাত : প্রয়াত এই ফিলিস্তিনি নেতাকে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয় ১৯৯৪ সালে। একই সঙ্গে পুরষ্কার দেয়া হয়েছিল তখনকার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন প্যারেজকে।
মূলত ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব অবসানে অসলো শান্তি চুক্তির জন্য তাদের যৌথভাবে পদক দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু এক সময়ে প্যারামিলিটারির সঙ্গে জড়িত থাকা ইয়াসির আরাফাতকে পুরষ্কার দেয়া নিয়ে বিতর্ক হয় ইসরায়েল ও এর বাইরে।
এমনকি এ মনোনয়ন নিয়ে বিভক্তি দেখা দেয় নোবেল কমিটির মধ্যেই। কমিটির একজন সদস্য প্রতিবাদে পদত্যাগও করেন।
অং সান সুচি : মিয়ানমারের এই রাজনীতিক দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৯১ সালে নোবেল পান। কিন্তু এর ২০ বছর পর তার দেশে রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
রাখাইনের ঘটনাকে জাতিসংঘ একে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। এমনকি তার পদক প্রত্যাহারের দাবিও উঠেছে যদিও নিয়মানুযায়ী সেটি করা যায় না।
আবি আহমেদ : ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদকে নোবেল দেয়া হয় ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সীমান্ত সংঘাত নিরসনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই এ পুরস্কারের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
কারণ নিজে দেশের টাইগ্রের উত্তরাঞ্চলে সেনা মোতায়েন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সেখানে লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয় এবং জাতিসংঘ একে ‘হৃদয় বিদারক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ওয়াঙ্গারি মাথাই : প্রয়াত এই কেনিয়ান পরিবেশবাদী ছিলেন প্রথম আফ্রিকান নারী, যিনি ২০০৪ সালে নোবেল জয় করেন। কিন্তু তার বিজয় নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন ওঠে যখন এইচআইভি ও এইডস নিয়ে তার একটি মন্তব্য সামনে চলে আসে।
ওয়াঙ্গারি মাথাই বলেছিলেন, এইচআইভি ভাইরাস জীবাণু অস্ত্র হিসেবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে- যার লক্ষ্য ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের শেষ করা। তার দাবির স্বপক্ষে কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল না।
হেনরি কিসিঞ্জার : ১৯৭৩ সালে নোবেল পান যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। কিন্তু কম্বোডিয়ায় বোমা বর্ষণ, দক্ষিণ আমেরিকায় সামরিক শাসনকে সমর্থনসহ আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির ইতিহাসে সবেচেয় বিতর্কিত অধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকা মিস্টার কিসিঞ্জারকে এই পুরষ্কার দেয়ায় অনেকের চোখ কপালে ওঠে।
প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন নোবেল কমিটির দুজন সদস্য। নিউইয়র্ক টাইমস পুরস্কারটিকে আখ্যায়িত করেছিলো ‘নোবেল ওয়ার প্রাইজ’ হিসেবে। সূত্র : বিবিসি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নোবেল পুরস্কার

১২ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ