মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সোমবার ছয় ঘণ্টা। ফেসবুকের ইঞ্জিনিয়ারদের যে এই দিনটা বহুদিন মনে থাকবে, তাই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী থমকে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম। তবে এতে শুধু ফেসবুকই গেরোয় পড়েছিল, তা কিন্তু নয়। বহু ছোটো এবং মাঝারি ব্যবসাই সম্পূর্ণ রূপে এই সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল। চলে বহু অনলাইন মার্কেটিং, সেলস, ভিডিও প্রোডাকশান, ইনফ্লুয়েন্সার সংস্থা।
‘কনফিগারেশান বদলের ত্রুটি’ এই অবস্থার জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে সংস্থা। নিজেদের ব্লগ পোস্টে এমনটাই উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট। এই কনফিগারেশান কাদের করা বা এটি অন্তর্ঘাত কিনা সে বিষয়ে কিছু জানায়নি ফেসবুক। বলা হয়, ‘আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম জানতে পেরেছে যে রাউটারগুলোতে কনফিগারেশন চেঞ্জে গলদের ফলে আমাদের ডেটা সেন্টারগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিকের সমন্বয়ে সমস্যা হচ্ছিল। এর ফলে কানেকশান ব্যাহত হয়। নেটওয়ার্ক ট্রাফিকের এই বিঘ্ন আমাদের ডেটা সেন্টারগুলির কানেকশানের পথে একটি ক্যাসকেডিং প্রভাব ফেলে। আমাদের পরিষেবাগুলি এই কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।’
ফেসবুকের সমস্ত পরিষেবা একসঙ্গে বন্ধ হওয়ার সবচেয়ে মূল কারণ হল, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম-সহ ফেসবুকের সমস্ত অ্যাপ একই ইনফ্রাস্টাকচারের উপর নির্ভরশীল। ফেসবুকের এতে সুবিধা প্রচুর। বৃহত্তর ক্ষেত্রে তারা সমস্ত ডেটা একই ছাদের তলায় আনতে পারছে। অ্যাডভার্টাজিং-এর ব্যবসা থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ফায়দা মেলে। কিন্তু এই ধরণের বিঘ্ন হলে তিনটিই একসঙ্গে বন্ধ হওয়ার প্রবল ঝুঁকিও রয়েছে।
প্রায় প্রতিটি অন্যান্য ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীর বিজিপি থাকে। ফেসবুকেরও নিজস্ব আছে। আপনি যখন ওয়েব ব্রাউজারে facebook.com এ ক্লিক করেন তখন ফেসবুক ডট কম খুঁজে পেতে আপনার ফোন বা কম্পিউটারের ওয়েব ব্রাউজার একটি মানচিত্র ব্যবহার করে। বিজেপি রাউটারগুলিতে কনফিগার করা হয়। এটি ফেসবুকের সার্ভারগুলোকে ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযোগ করতে এবং একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করে।
বাংলাদেশ সময়ে ৪ অক্টোবর রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ যখন ফেসবুকে কেউ এই বিজিপি-র আপডেট করেন। আপডেটের পরেই এই বিজিপি-তে গলদ দেখা যায়। ফলে ফোনে ফেসবুক অ্যাপ বা ওয়েব ব্রাউজারে যখন facebook.com খোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তখন ব্রাউজার মানচিত্র থেকে সেটা খুঁজে পাচ্ছিল না। আর সেই কারণেই সাইটে পৌঁছনো যাচ্ছে না বলে দেখাচ্ছিল ব্রাউজারে।
আপডেট কনফিগার বা অ্যাপ্লাই করার সময়ে হয় তো কোনও কর্মীর ত্রুটি, অথবা স্রেফ সফটওয়্যারের ত্রুটির কারণে সঠিকভাবে পরিকল্পনামাফিক আপডেটটি হয়নি। যেহেতু ফেসবুকের প্রতিটি ব্যবসা একত্রিত তাই এই একটি কারণেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম একইসঙ্গে থমকে যায়।
টুইটার, রেডিটে অনেকে স্ক্রিনশট দিতে শুরু করেন। ডোমেইন বিক্রয়কারী সংস্থার ওয়েবসাইটে দেখাচ্ছে, ‘Facebook.com আপ ফর সেল’। এতে অনেকেই ভেবে বসেন ফেসবুকের ডোমেইন বোধ হয় বিক্রির জন্য উপলব্ধ। এমনকী মজার ছলে অনেকে বিডিং-ও শুরু করে দেন। তবে এমনটা মোটেই নয়। এ বিষয়ে মজা করে একটি রিটুইট করেন টুইটারের প্রধান জ্যাক ডরসিও। তিনি লেখেন, ‘দাম কত?’
বিজেপি-তে গন্ডগোল হতেই ফেসবুক অফলাইন হয়ে যায়। ফলে তার ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) আনরিচেবল হয়ে যায়। ডিএনএস-কে ইন্টারনেটের ফোনবুক হিসেবে ভাবতে পারেন। অন্যদিকে বিজেপি হল সেই সূচীপত্র যা আপনাকে সঠিক পাতায় নিয়ে যাবে। বিজিপি ত্রুটির ফলে ফেসবুকের ডিএনএস এবং অ্যাপ কার্যত অদৃশ্য হয়ে যায়। পথ, এবং গন্তব্য, উভয়ই হাওয়া!
এর মানে হল, যে ওয়েবসাইটগুলি ডোমেইন নেম বিক্রি করে, এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্ক্রিয় ডোমেন নামগুলো অনুসন্ধান করে তারা অটোম্যাটিকালি বিক্রির জন্য facebook.com তালিকাভুক্ত করতে শুরু করে দেয়। যদিও ডোমেইন বিক্রয়কারী সংস্থাগুলো এটি ম্যানুয়ালি সংশোধন করে ফেলে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।