Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানবন্ধনে নেতৃবৃন্দ : রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য গভীর উদ্বেগজনক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০২১, ৮:৫৭ পিএম

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের পর সমস্যাটি যে এতটা জটিল হয়ে উঠবে, তা অনেকের ভাবনায়ও ছিল না। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থানের ফলে নানা রকম আর্থসামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

আজ শনিবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত জাতীয় নেতৃবৃন্দ সংহতি প্রকাশ করে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মুহম্মদ আতাউল্লাহ খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম কমিটির পালংখালীর জনতার নেতা এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএলডিপি’র চেয়ারম্যান এম.নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম.গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় লীগের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, গর্জোর সভা প্রধান সৈয়দ মঈনুজ্জামান লিটু, সবুজ আন্দোলনের সভাপতি বাপ্পি সরদার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, রাজনীতিবিদ আব্দুল জলিল, জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেহানা আক্তার রেনু প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিমউদ্দিন আল আজাদ বলেন, রোহিঙ্গাদের অবস্থান আরও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের জন্য একটি নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। রোহিঙ্গা সমস্যাটি এখন বাংলাদেশের জন্য একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বলেন, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ খুনের ঘটনা কেবল একজন ব্যক্তি মানুষকে নিঃশেষ করে দেওয়ার বিষয় হিসেবে বিবেচনার সুযোগ নেই। এই হত্যাকান্ডের সাথে দেশীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত, যারা অস্থিরতা তৈরীর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহ বরাবর রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফিরে যাওয়ার পক্ষে জনমত তৈরি করেছেন। এই হত্যা রোহিঙ্গাদের অধিকারের পক্ষে ও সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলা আরও ঝুঁকিতে ফেলে দিল। মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনা প্রমাণ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর। মুহিবুল্লাহর হত্যারহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নিরাপদ প্রত্যাবর্তনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র স্থায়ী সমাধান। এত বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণের ভার বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল ও উন্নয়নশীল দেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বহন করবে, তা প্রত্যাশা করা যায় না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারকে দেশের ভিতর জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে মায়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে দাবী জানানো হয় যে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার হুমকি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে, এনজিওদের স্বেচ্ছাচারিতা ও প্রত্যাবাসন বিরোধী অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় রোহিঙ্গাদের যাতায়াত বন্ধ করতে হবে, ভোটার তালিকা হতে রোহিঙ্গাদের নাম বাদ দিতে হবে, নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরো কঠোর করতে হবে, রোহিঙ্গাদের হাতে লক্ষ লক্ষ অবৈধ মোবাইল ও সিম বন্ধ করতে হবে, এনজিওদের চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও প্রত্যাবাসন বিরোধী অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় রোহিঙ্গাদের অবাধে যাতায়াত বন্ধ করতে হবে, ক্যাম্পের বাহিরে অবাধে যত্রতত্র রোহিঙ্গাদের বিচরণ বন্ধ করতে হবে, ভোটার তালিকা হতে রোহিঙ্গাদের নাম বাদ দিতে হবে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পরিচালনা করতে হবে, এনজিও কর্তৃক রোহিঙ্গাদের অবৈধ সহায়তা প্রদান বন্ধ করতে হবে, রোহিঙ্গাদেরকে এনজিওতে চাকুরিতে নিয়োগ দেয়া যাবে না, অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের এনজিও চাকুরী হতে বাদ দিতে হবে, স্থানীয়দেরকে চাকুরীতে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে। সমাবেশ আয়োকজরা বলেন, এই জাতীয় দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবিলম্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হবার কথা ঘোষণা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানবন্ধন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ