পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
বাগেরহাটের ষাট গুম্বজ মসজিদ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাচীন মসজিদ। সাধারণভাবে ষাট গুম্বজ মসজিদ নামে পরিচিত হলেও এর উপর ৭৭টি গুম্বুজ এবং চার কোণার বুরুজগুলির উপর আরও ৪টি গুম্বজ রয়েছে। ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে খান জাহানের মৃত্যুর পূর্বে সম্ভবত ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়। এটি বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা বাজেয়াপ্তি মৌজার ১০৮ নং দাগে অবস্থিত।
সাধারণ বর্ণনা: চার কোণার বুরুজগুলি ব্যতিরেকে এই আয়তাকার ইমারতের পরিমাপ ১৪৬’-১১” ঢ ৯২’-০৪”। এই মসজিদের পূর্ব দিকে ১১টি প্রবেশপথ আছে। মধ্যবর্তী মিহরাবটি কিবলা প্রাচীরের মধ্য বরাবর বাইরের দিকে কিছুটা উদ্গত (projected)। এই ইমারতের উপর ৭৭টি গুম্বজ এবং প্রাচীরের উপর চতুর্দিকে ধনুকবক্র ছাদকিনারা (curved cornice) আছে। এই মসজিদের সম্মুখ ভাগের উপরাংশ গ্রিক পেডিমেন্টের (ঢ়বফরসবহঃ) অনুরূপ ছিল। মুহম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘গ্রিক অথবা রোমান স্থাপত্যকলার পেডিমেন্ট অপেক্ষা এই মসজিদের পেডিমেন্ট অধিক প্রশস্ত। এ কারণে এর উৎপত্তি সম্পর্কে গ্রিক উদাহরণ ব্যতিরেকে অন্য উৎসের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।’ তবে সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণের ফলে এই বৈশিষ্ট্য বিলুপ্ত হয়েছে।
মসজিদের উপরিভাগে ৭৭টি গুম্বজ স্থাপিত আছে। তবে পূর্ব-পশ্চিম সারিতে স্থাপিত মধ্যবর্তী ৭টি গুম্বজ কুঁড়েঘর সদৃশ (hut shaped))। কুঁড়েঘর আকৃতির এই গুম্বজগুলি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গৌড়ের উদাহরণ থেকে পৃথক। তবে ম্যাক্কাচিওন ভুলবশত এতদুভয়কে একইরূপ বলে উল্লেখ করেছেন।
সম্মুখ ভাগ (facade): পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই মসজিদের পূর্বদিকে ১১টি প্রবেশ পথ আছে। সমস্ত প্রবেশ পথগুলিই আয়তাকার রিসেসের (rectangular recess) মধ্যে আবদ্ধ। প্রত্যেকটি প্রবেশ পথের উপর একটি করে কৌণিক খিলান আছে। খিলানগুলির উপর পোড়ামাটির তৈরি পুষ্প অলংকরণ ও স্প্যান্ড্রেলে (spandrel) রোজেট (rosette) নকশা আছে। প্রধান প্রবেশ-পথটি বৃহৎ এবং তার উপর স্থাপিত পোড়ামাটির নকশাগুলি স্পষ্ট। প্রধান প্রবেশ-পথের দু’দিকে একটি করে বৃহৎ ও ৩টি করে ক্ষুদ্রাকার রোজেট আছে। এই ইমারতের সম্মুখ ভাগের কেন্দ্রস্থলের উচ্চতা ২৩’-০২”।
দক্ষিণ দিক: এই দিকের সাতটি প্রবেশপথই আয়তাকার রিসেসের মধ্যে স্থাপিত। দেওয়ালে উলম্ব (vertical) অফসেট (offset) ও রিসেস রয়েছে। পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় প্রবেশপথটি বন্ধ। পূর্ব দিকের প্রবেশপথগুলি থেকে এই দিকের প্রবেশপথগুলি সরু। প্রবেশপথগুলির উপর পোড়ামাটির অলংকরণ আছে।
উত্তর দিক: এই দিকটি দক্ষিণ প্রাচীরের বহির্ভাগের অনুরূপ। পোড়ামাটির পুষ্প ও অন্যান্য অলংকরণ এই দিকে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
মসজিদের অভ্যন্তর ভাগ: মসজিদের অভ্যন্তর ভাগের পরিমাপ ১৪৪’-০” উত্তর দক্ষিণ ঢ ৮৮’-০৬” পূর্ব-পশ্চিম। এটির অভ্যন্তর ভাগে ষাট (৬০)টি স্তম্ভ আছে। বেশির ভাগ স্তম্ভই হাল্কা ও মাত্র ছয়টি স্তম্ভ প্রকান্ড ছিল। পাঁচটি প্রকান্ড স্তম্ভ ইটের তৈরি ও একটি প্রকান্ড স্তম্ভ পাথরের তৈরি। স্তম্ভগুলির প্রস্তুতকালীন আসল রূপ ফিরিয়ে আনার জন্য হাল্কা স্তম্ভগুলি ইট দ্বারা আচ্ছাদন করা হয়েছিল। অবশ্য পরবর্তীতে হাল্কা স্তম্ভগুলির এই আচ্ছাদন পুনরায় অপসারণ করা হয়েছে। উত্তর-দক্ষিণে ছয় সারি স্তম্ভ আছে এবং প্রত্যেক সারিতে দশটি স্তম্ভ আছে। মসজিদের মধ্য বরাবর ছাদে পূর্ব-পশ্চিমে এক সারিতে ৭টি কুঁড়েঘর সদৃশ চৌচালা আছে। চৌচালাগুলির অভ্যন্তরে বাঁশের নক্শার চমৎকার অনুকৃতি দেখা যায়। মসজিদের প্রাচীর প্রায় ৮’-০” পুরু। মেঝে থেকে চৌচালার অভ্যন্তর ভাগের উচ্চতা ২৬’-১০” এবং গুম্বজের অভ্যন্তর ভাগের উচ্চতা ২৬’-০”। পূর্ব দিকের প্রধান প্রবেশপথটি ১৩’-১০” উচ্চ এবং ৬’-১” চওড়া। প্রবেশপথগুলির উপর পোড়ামাটির অনেক নকশা আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে পূর্ব দিকের বুরুজ দু’টির ভেতর দিয়ে ছাদে উঠার সিঁড়ি আছে। মসজিদের অভ্যন্তরের ভূমি নকশাটি দুই বাহুবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নেইভ-হযরত পান্ডুয়ার আদিনা মসজিদে সর্বপ্রথম দেখা যায়। দামেশ্ক মসজিদের অনুকরণে নির্মিত আদর্শ নক্শার অন্যান্য মসজিদ থেকে এর উৎপত্তি হয়েছে। ষাট গুম্বজ মসজিদের পেডিমেন্টও দামেশ্ক মসজিদের অনুরূপ ছিল।
খান জাহানের ইতিহাস পুনর্গঠনে বারবাজারের সাতগাছিয়া মসজিদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মসজিদটির সঙ্গে ষাট গুম্বজ মসজিদের স্থাপত্যিক সাদৃশ্য ছিল। বারবাজার থেকে বাগেরহাট যাওয়ার পথে খান জাহান এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ৩৫ গুম্বজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি সম্প্রতি গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ষাট গুম্বজ মসজিদের অনুরূপ সাতগাছিয়া মসজিদেও কেন্দ্রীয় মিহরাবের উত্তরে একটি প্রবেশ পথ ছিল। যদিও এটি পরবর্তীতে বন্ধ করা হয়।
পূর্ব দিক (অভ্যন্তর ভাগ): এই দিকের দেওয়াল প্রায় ৮’-২” পুরু। এই দিকে ১১টি প্রবেশপথ আছে, দুই দিকের প্রবেশপথগুলি থেকে মধ্যের প্রবেশপথটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত। প্রতিটি কৌণিক খিলানের উপর একটি করে রম্বস (rhombus) এবং দুই দিকে একটি করে রোজেট (rosette) আছে। তার উপরে কয়েকটি আনুভূমিক সারিতে পোড়ামাটির পুষ্প ও অন্যান্য অলংকরণ আছে। এই দিকের দেওয়াল গাত্রে কয়েকটি পিলাস্টার (pilaster) আছে।
দক্ষিণ দেওয়াল (অভ্যন্তর ভাগ): এই দিকে সাতটি প্রবেশপথ আছে। পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় প্রবেশ-পথটি আদিতে ইটের জালি (মৎরষষব) দ্বারা বন্ধ ছিল। পূর্ব দেওয়ালের অনুরূপ এই দিকের প্রবেশপথগুলিও আয়তাকার রিসেসের মধ্যে স্থাপিত। কৌণিক খিলানের কী-স্টোনের (key-stone) উপরে লজেঞ্জ (lozenge) ও খিলানের স্প্যান্ড্রেলের (spandrel) উপরে রোজেট আছে। তার উপর আনুভূমিক সারিতে পুষ্প ও অন্যান্য অলংকরণ আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ-পথগুলির দুই দিকে একটি করে ক্ষুদ্র কুলুঙ্গি আছে। কিন্তু, পূর্ব ও পশ্চিম দিকে অনুরূপ কোন কুলুঙ্গি নাই। এই কুলুঙ্গিগুলির সম্মুখে বহুখাঁজবিশিষ্ট খিলান (engrailled arch) রয়েছে। পূর্ব দিকের প্রবেশপথের নিকটে ছাদে উঠার সিঁড়ি রয়েছে। এটি কোণার বুরুজের অভ্যন্তরে স্থাপিত।
উত্তর দেওয়াল (অভ্যন্তর ভাগ): দক্ষিণ দিকের অনুরূপ। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, পূর্ব দিকের প্রবেশপথের নিকটে ছাদে উঠার সিঁড়ি রয়েছে। এটি কোণার বুরুজের অভ্যন্তরে স্থাপিত।
কিবলা প্রাচীর (অভ্যন্তর ভাগ): মিহরাব অংশটি বাহিরের দিকে উদ্গত (projected)। কিবলা প্রাচীরের অভ্যন্তর ভাগে দশটি অলংকৃত মিহরাব আছে। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি প্রস্তর নির্মিত এবং এটি অন্যান্য মিহরাবগুলি অপেক্ষা বৃহৎ। অন্যান্য মিহরাবগুলি ইষ্টকনির্মিত। প্রধান মিহরাবের উত্তর পার্শ্বে মিহরাবের পরিবর্তে একটি প্রবেশপথ আছে। এটি খান জাহানের আবাস গৃহের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। প্রত্যেকটি মিহরাবের অভ্যন্তরভাগ পোড়ামাটির নকশা দ্বারা অলংকৃত ছিল। মেহরাবগুলির অভ্যন্তরে শিকল ঘণ্টার অলংকরণ ছিল। মিহরাবগুলির খিলানের উপরিভাগেও পত্রপুষ্পের অলংকরণ ছিল।
হাবিবা খাতুন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মিহরাবের উত্তরের দরজাটি এই মসজিদের একটি বিশেষত্ব। বাংলার মসজিদগুলির মধ্যে কিবলা দেওয়ালে এই ধরনের প্রবেশ-পথ সেকান্দার শাহের আদিনা মসজিদে সর্বপ্রথম দেখা যায়। পরে এটি ষাইট গুম্বজ মসজিদ ও সাতগাছিয়া মসজিদে পুনরাবৃত্ত হয়। ভারত, কুফা, বসরা ও মিশরের মধ্যযুগীয় জামে মসজিদে এই ধরনের দরজা দেখা যায়। এই প্রবেশপথগুলি শুধুমাত্র এলাকার শাসনকর্তার জন্য নির্দিষ্ট ছিল।’ সকল মিহরাবই অর্ধবৃত্তাকার ও অবতল (semi-circular and concave) এবং এগুলির সম্মুখে আদিতে বহুখাঁজবিশিষ্ট খিলান ছিল। উত্তর দিক থেকে দ্বিতীয় মিহরাবে এই বৈশিষ্ট্য অদ্যাবধি বিদ্যমান। মিহরাবগুলির অভ্যন্তরভাগে পোড়ামাটির প্রচুর অলংকরণ ছিল। এইগুলির অভ্যন্তরভাগে শিকলঘণ্টার অলংকরণ ছিল। প্রতিটি মিহরাবের দু’দিকে একটি করে ক্ষুদ্রাকার স্তম্ভ ছিল। খিলানগুলির স্প্যান্ড্রেলে বৃক্ষাদির শাখা-প্রশাখা দ্বারা বেষ্টিত রোজেট ছিল। এর উপরিভাগে কয়েকটি আনুভূমিক সারিতে পোড়ামাটির অলংকরণ ছিল। যে আয়তাকার ফ্রেমের মধ্যে মিহরাবগুলি আবদ্ধ তার উপরে এখনও কয়েক সারি পোড়ামাটির নকশা দেখা যায়। বিভিন্ন মিহরাবে বিভিন্ন নকশা দেখা যায়। মিহরাবগুলির উপরে পোড়ামাটির একসারি মার্লন (merlon) আছে। এগুলির উপরে পোড়ামাটির তৈরি একটি বৃহৎ ও কয়েকটি ক্ষুদ্রাকার রোজেট আছে।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় মিহরাবটি প্রস্তর নির্মিত। এর দু’দিকে একটি করে পাথরের স্তম্ভ আছে। মিহরাবের উপরে বহুখাঁজবিশিষ্ট কৌণিক খিলান রয়েছে। মিহরাবের অভ্যন্তরে শিকল ঘণ্টার মোটিফ আছে। অভ্যন্তরে অনেক রোজেট আছে। মিহরাবের খিলানের স্প্যান্ড্রেলে পত্রপুষ্প শোভিত বৃক্ষাদির শাখাপ্রশাখা দ্বারা বেষ্টিত একটি রোজেট আছে। পুনরায় এটি একটি আয়তাকার ফ্রেমের মধ্যে আবদ্ধ। তার উপর আনুভূমিক কয়েকটি সারিতে বিভিন্নপ্রকার অলংকরণ আছে। তার উপর পুনরায় এক সারি মার্লন আছে।
ছাদ: মসজিদের ছাদ ৭৭টি গুম্বজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মধ্য বরাবর পূর্ব-পশ্চিমে এক সারিতে ৭টি গুম্বজ চৌচালা বা কুঁড়েঘর সদৃশ (hut shaped)। এই চৌচালাগুলির প্রত্যেকটির উপর একটি করে সমতল ক্ষেত্র আছে। এই সাতটি কুঁড়েঘর সদৃশ গুম্বজ ছাড়া আরও ৭০টি অর্ধবৃত্তাকার গুম্বজ আছে। এই ইমারতের ছাদের সমতল অংশ পার্শে¦র দিকে ঢালু।
বুরুজ: এই ইমারতের চারি কোণায় চারিটি বুরুজ আছে। পূর্ব দিকের বুরুজ দু’টি লম্বা এবং এ দু’টির অভ্যন্তর থেকে ছাদে উঠার সিঁড়ি আছে। এই বুরুজ দু’টির উপরিভাগে চারটি বাতায়ন পথ আছে। একটি বাতায়ন পথ দ্বারা ছাদে উঠা যায়। পশ্চিম দিকের বুরুজগুলি খাঁটো এবং এইগুলির অভ্যন্তরে কোনও সিঁড়ি নাই। এই দুইটি বুরুজের প্রত্যেকটিতে দুইটি করে বাতায়ন পথ আছে। (ছাদের দিকে একটি করে এবং উত্তর দিকে একটি করে)। চার কোণার চারটি বুরুজের প্রত্যেকটির উপর একটি করে গুম্বজ আছে।
শুধুমাত্র পূর্ব দিকের তোরণটি জীর্ণদশায় বিদ্যমান ছিল, যদিও এটির আদি বেষ্টনী প্রাকার অবশিষ্ট ছিল না। ‘বিদ্যমান চিহ্ন অনুসরণ করে যত দূর সম্ভব অলংকরণসহ তোরণটি মেরামত করা হয়েছে।’ পশ্চিম এবং উত্তরের প্রবেশ-তোরণ দু’টি খননের পর আবিষ্কৃত হয়েছে। তোরণগুলিসহ সম্পূর্ণ বেষ্টনী প্রাকারই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ দিকে সম্ভবত কোন তোরণ ছিল না। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ১টি ইষ্টকলিপি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
সুলতানি আমলের পুরাকীর্তিগুলির ন্যায় ষাট গুম্বজ মসজিদের পশ্চিমেও একটি দিঘি রয়েছে। বাগেরহাটে শুধুমাত্র মুসলমান আমলের দিঘি দেখা যায়। দিঘির যে স্থানে প্রাচীন ঘাট ছিল তার পরিবর্তে অন্য স্থানে একটি নতুন ঘাট তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে পুরাকীর্তির বৈশিষ্ট ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মনে হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মুসলমান-পূর্ব যুগের দিঘিগুলি উত্তর-দক্ষিণে লম্বা, কিন্তু মুসলমান যুগের দিঘিগুলি পূর্ব-পশ্চিম এবং উত্তর-দক্ষিণ- উভয় প্রকারের হতে পারে। বাগেরহাটে উত্তর-দক্ষিণে লম্বা কয়েকটি দিঘি দেখা যায়। বারবাজারের অধিকাংশ দিঘিই উত্তর-দক্ষিণ।
ষাট গুম্বজ মসজিদের অভ্যন্তরে দু’টি প্লাটফর্ম ছিল। এগুলি মিশরীয় ও উসমানীয় মসজিদে সচরাচর পরিদৃষ্ট দিক্কা-এর অনুরূপ। বারবাজারের মনোহর, সাতগাছিয়া ও পিরপুকুর মসজিদে এবং বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ের মানকালির কুন্ড ধাপের পার্শ্ববর্তী মসজিদে অনুরূপ প্লাটফর্ম দেখা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে খননের ফলে ষাট গুম্বজ এলাকায় কিছু রঙিন টালি পাওয়া গেছে। এর দ্বারা অনুমিত হয় যে, সুলতানি আমলের অন্যান্য ইমারতের ন্যায় এখানেও রঙিন টালির ব্যবহার ছিল।
লেখক: প্রত্নতত্ত্ববিদ, গবেষক
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।