মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন কি না অনেকটা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গতকাল বাক্সবন্দি হল ভবানীপুর কেন্দ্রের হাইভোল্টেজ ভোট। আগামী ৩ অক্টোবর রোববার সেটা উন্মুক্ত করলেই জানা যাবে ফল। গতকাল নির্বাচন চলাকালে প্রতিটি বুথে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারি, আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা। মমতার প্রতিদ্ব›দ্বী বিজেপির প্রার্থী দিনভর নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়ালেও কার্যত আড়ালেই ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষলগ্নে মিত্র ইনস্টিটিউট গিয়ে ভোট দিলেন তিনি।
একুশের বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলায় ফের ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। কিন্তু নন্দীগ্রামে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। ভোটের হারলেও মুখ্যমন্ত্রী হওয়া আটকায়নি। তবে, নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে বিধায়ক নির্বাচিত হতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্য সরকারের ‘অনুরোধে’ পুজোর আগে স্রেফ ভবানীপুর কেন্দ্রেই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনে। নন্দীগ্রামে ভোটের ফলাফল নিয়ে যখন হাইকোর্টে মামলা চলছে, তখন উপনির্বাচনে নিজের পুরনো কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হয়েছেন মমতা।
২৬ এপ্রিলের পরে ৩০ সেপ্টেম্বর। পাঁচ মাসের ব্যবধানে ফের ভবানীপুরে ভোট দিতে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছিলেন রাজ্যে ফের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে। আর গতকাল ভোট দিতে যখন আসেন, নিজেই ভবানীপুরের ভোট প্রার্থী তিনি। এদিনের ভোট মুখ্যমন্ত্রিত্বের ভবিষষ্যতের নির্ণায়ক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি ভোটেই ভোটকেন্দ্রে ঢোকেন ঘড়ি ধরে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ। এপ্রিল মাসে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই নিজের তৈরি করা নিয়ম ভেঙেছিলেন। মিত্র ইন্সটিটিউশানে ভোট দিতে ঢুকেছিলেন তখন, ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ৩টে ৫০ মিনিট। গোটা প্রক্রিয়াটা সারতে ছয় মিনিট সময় নিয়েছিলেন তিনি। ভোট দিয়ে বেড়িয়ে এসে সেই চিরচেনা ভঙ্গিতে জয়ের চিহ্ন দেখিয়ে ছিলেন দুই আঙুল তুলে। ২১ এর বিধানসভা ভোটে তিনি জয় হাসিল করে নিয়েছিলেন হাসতে হাসতেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের ক্ষত তখনও সারেনি। চলাফেরাও তাই ছিল হুইল চেয়ারেই। কমিশনের তরফেও বিশেষ র্যাম্পের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল নিয়ম মেনেই। এই র্যাম্প অবশ্য প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা সুনিশ্চিত করার জন্য। গতবার দেহরক্ষীর সহযোগিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই র্যাম্পে উঠেই ইভিএম-এর বোতাম টেপেন। এবার অবশ্য গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে চেনা মিত্র ইন্সটিটিউটে ঢুকে যান তিনি। গতবার অর্থাৎ এপ্রিল মাসে এই ভোট কেন্দ্রে আসার আগে মমতা সেদিন ঝড় তুলেছিলেন উত্তর কলকাতার প্রচারে।
এবার অবশ্য আবহাওয়া আলাদা। মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজেই প্রার্থী। আর এবারের ভোট প্রচারে তিনি লাগাতার আক্রমণ শানিয়েছেন মোদি-শাহ ও বিজেপিকে। এমনকি রেওয়াত করেননি কংগ্রেসকেও। কারণ এবার আর বাংলা দখল নয়। মমতার নজর দিল্লির মসনদে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভবানীপুর মমতার গড়। ২০১১-র উপনির্বাচনে এ কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন তিনি। ২০১৬-তে ব্যবধান অর্ধেকে নেমে আসলেও ভোটে জেতার মার্জিন নেহাত কম ছিল না। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মার্জিন আরও বাড়ান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের দুর্গ ভবানীপুরে জয় কার্যত সময়ের অপেক্ষা, তা বিলক্ষণ জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সে কারণেই ময়দানে ‘খেলোয়াড়’দের নামিয়ে ঘরে বসেই ‘খেলা’ পরিচালনা করলেন মমতা। মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দিতে আসার সময়ও মমতার চোখে মুখে ছিল আত্মবিশ্বাসের সুর। সাংবাদিকদের দিকে বেশ কয়েকবার হাতও নাড়েন তিনি। ভোট দিয়ে বেরিয়ে তৃণমূল প্রার্থী হাসিমুখে উঠে গেলেন গাড়িতে। একদলের ক্যাপ্টেন মাঠে-ময়দানে ঘুরে নজর কাড়ার চেষ্টা করলেন। অন্যদলের ননপ্লেয়িং ক্যাপ্টেন কয়েক মিনিটের জন্য মাঠে নেমেই ক্যামেরার ফোকাস নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন। কে জিতবেন, অপেক্ষা আর ৩ দিনের!
গতকাল ভবানীপুর ছাড়াও উপনির্বাচন হয়েছে জঙ্গীপুর ও শমসেরগঞ্জ আসনে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জঙ্গীপুরে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেসের প্রার্থীরা মুসলিম। ৯ জন এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। অন্যদিকে শমসেরগঞ্জে প্রতিদ্ব›দ্বী ৬ জন। এসব নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে ভবানীপুর আসনের মতোই আগামী রোববার। সূত্র : জি নিউজ, নিউজ১৮, হিন্দুস্তান টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।