পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্যবসার নামে নাজায়েজ সুদের বদলে দেশ-বিদেশ থেকে যারা হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগ করে লাভবান হতে চান তাদের জন্য এসেছে সুবর্ণ সুযোগ। দেশে চলছে শতভাগ হালাল ব্যবসার শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সুকুকে বিনিয়োগ। ট্রেজারি বন্ডের মতোই এই বন্ড শতভাগ নিরাপদ। ইসলামিম শরিয়াহ অনুযায়ী পরিচালিত হওয়ায় এই বন্ডে বিনিয়োগ করে একদিকে অর্থের নিরাপত্তা, অন্যদিকে রয়েছে লাভবান হওয়ার সুযোগ। দেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশি যে কেউ শরিয়াহভিক্তিক এই নিরাপদ বন্ডে পুঁজি খাটাতে পারেন। তবে সুকুকে বিনিয়োগের সময় আছে আজ বুধ ও কাল বৃহস্পতিবার।
জানা গেছে, ব্যবসার ক্ষেত্রে চুক্তি এবং দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে সুকুক ও প্রচলিত বন্ডের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক বন্ড সাধারণত ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়ার আইনি দলিল। প্রচলিত বন্ডে ইস্যুকারীর ঋণের দায়বদ্ধতার উপস্থাপন করে; অপর পক্ষে সুকুক সম্পত্তির মালিকানা নির্দেশ করে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান। সুকুক ইস্যুকারী চুক্তি অনুসারে মেয়াদ শেষে ফেস ভ্যালুতে বন্ড কিনতে বাধ্য থাকে। ফলে দেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের কাছে সুকুক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ইসলামী শরিয়াহর আলোকে গঠিত সমমূল্যের বিনিয়োগ সার্টিফিকেট ‘সুকুক’ বিশ্বের মুসলিম ও অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের কাছে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তারল্য ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো প্রকল্প অর্থায়নে ব্যাপক হারে সুকুক ব্যবহার করে। ইসলামিক আর্থিক সেবা শিল্প স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন ২০২০ আইএফএসবি ও মালয়েশিয়ার উপাত্ত অনুযায়ী, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক সুকুক স্থিতির পরিমাণ ৫৪৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র মতে, প্রচলিত আর্থিক বাজারে মুসলিম বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার আগ্রহ থাকলেও নানা সীমাবদ্ধতায় তারা তা করতে পারছেন না। বিশেষকরে প্রবাসীরা তাদের সঞ্চয়কে নিরাপদ একটি মাধ্যমে বিনিয়োগ করার সুযোগ খোঁজেন। আর এর সমাধান হিসেবে সুকুক (ইসলামিক বন্ড) আবির্ভূত হয়েছে। ইসলামি আর্থিক নীতিমালার সম্মতিতে মুনাফার জন্য ট্রেজারি বন্ডের অনুরূপ হচ্ছে ইসলামি বন্ড সুকুক। আর তাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক আশীর্বাদের নাম হয়ে উঠেছে ‘সুকুক’ বন্ড।
আর্থিক খাতের বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের জন্য সুকুক বেশ প্রতিশ্রুতিশীল ও নিরাপদ। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড এটি। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে সুদের বন্ডের চেয়ে ইসলামিক বন্ডের (সুকুক) চাহিদা অনেক বেশি। কারণ, শরিয়াহ্ আইন অনুযায়ী সুদ, জুয়া, ও ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বর্তমান বাজারে উচ্চ-মুনাফার সঞ্চয়ের মাধ্যম এমনিতেই সীমিত। সেই হিসেবে এই সুকুক নতুন বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অত্যধিক তারল্য যেহেতু আছে, তাই এই বিনিয়োগ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। একই সঙ্গে সুদবিহীন ঝুঁকিহীন নিরাপদ বিনিয়োগের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের প্রথম ইসলামী সুকুক বন্ড বেক্সিমকোর মতো স্বনামধন্য নামী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে। সুকুক বন্ড পুঁজিবাজারে বিশেষকরে ইসলামী পণ্য প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ। আগামীতে বেক্সিমকোর আর্থিক প্রতিবেদন দেখে অন্য প্রতিষ্ঠান বাজারে বন্ড আনার ব্যাপারে উৎসাহিত হবে।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর আবু আহমেদ ইনকিলাবকে বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ আগে থেকেই সুদকে এড়িয়ে চলতে চায়। এ জন্য ইসলামি ব্যাংকিং খুবই জনপ্রিয়। আর তাই দেশে আরও আগেই ‘সুকুক’ বন্ড দরকার ছিল। তবে দেরিতে হলেও সুকুক চালু করা হয়েছে। এটাকে ভালো উদ্যোগ উল্লেখ করে প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সুকুক চালু করা হয়েছে, যা খুবই জনপ্রিয় হবে। যদিও এটি এমনিতেই আমাদের দেশে জনপ্রিয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক উবায়দুর রহমান খান নদভী ইনকিলাবকে বলেন, শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সুকুক। মুসলিম দেশগুলোতে এটা বেশ প্রচলিত বা আস্থার নাম। বাংলাদেশে সুকুক চালু একটি ভালো উদ্যাগ বলে মনে করেন তিনি।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, শরীয়াহ্ আইন অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রচলিত আর্থিক বাজারে এতদিন বিনিয়োগের সুযোগ ছিল না। নানামুখী সীমাবদ্ধতায় দেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোতেও টাকা রাখা নিরাপদ মনে করছেন না অনেকে। অপরদিকে মুসলিম বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আগ্রহ থাকলেও সুদ ও ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেনসহ নানা সীমাবদ্ধতায় তারা তা করতে পারছে না। সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দীর্ঘদিন থেকে খুঁজছিল একটি সুদবিহীন ঝুঁকিমুক্ত হালাল বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ। আর এসব বিনিয়োগকারীদের সহজ সমাধান হয়ে এসেছে ‘সুকুক’ বন্ড। পাশাপাশি ব্যবসার জগত এবং দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক সুনাম ও সাফল্যের নাম ‘বেক্সিমকো’। এছাড়া বাংলাদেশসহ বিশ্ব এখন কয়লা চালিত বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করেছে। একইসঙ্গে সৌরবিদ্যুতের মতো জলবায়ু বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। তাই বেক্সিমকোর গ্রীন ‘সুকুক’ বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি আস্থার নাম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এস এম রাশিদুল ইসলাম।
বেক্সিমকোর গ্রীন সুকুক বন্ডের বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যারা ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ পছন্দ করে, তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র কম। এ কারণে ইসলামী ব্যাংকগুলোর এসএলআরের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে। একই সঙ্গে যারা সুদ নিতে চায় না, তাদেরও অনেক টাকা পড়ে আছে। এ ধরনের বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হওয়ায় তারা এখন শরীয়াহভিত্তিক সুকুক বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে। তিনি মনে করেন, এই সুকুক বন্ড ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে যে বিপুল অলস টাকা পড়ে আছে সেই টাকা বিনিয়োগে নিয়ে আসতে পারবে, যা জাতীয় উন্নয়ন ও পুঁজির সংস্থানে ব্যবহৃত হবে। তখন এই অলস টাকা দেশের শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অবদান রাখবে। দেশের পুঁজিবাজারে বেক্সিমকোকে দিয়ে শরীয়াহভিত্তিক বন্ডের সূচনা হলো। এই বন্ড থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। আশা করি ভবিষ্যতে দেশের বাইরে থেকেও এক্ষেত্রে আরও বড় বিনিয়োগ আসবে।
সূত্র মতে, সরকার সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কয়লা চালিত বিদ্যুৎ প্রকল্প বা কুইক রেন্টাল বাতিল করেছে। একইসঙ্গে সৌরবিদ্যুতের মতো জলবায়ু বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। আর এ ক্ষেত্রে সুকুক বন্ডের মাধ্যমে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চায় বেক্সিমকো। বেক্সিমকোর সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প ‘তিস্তা’ এবং ‘করতোয়া’ ২০৩৪ সাল পর্যন্ত কর আওতামুক্ত থাকবে। পাশাপাশি, শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা এবং কিছু ট্যারিফ ও ভ্যাট ছাড়ের সুবিধাও পাবে এই প্রকল্প। আটশ’ কোটি টাকা বেক্সিমকোর টেক্সটাইল বিভাগের বিদ্যমান পরিবেশবান্ধব কারখানার আধুনিকায়ন ও বিস্তৃতকরণ এবং নতুন জ্বালানিবান্ধব যন্ত্রপাতি কেনার পেছনে ব্যয় করা হবে।
বেক্সিমকো লিমিটেডের সূত্রে জানা গেছে, সুকুক নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন তারা। তিনি বলেন, অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সম্পদশালী ব্যক্তিবিশেষ, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই সুকুকের প্রাইভেট প্লেসমেন্টের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
সূত্র জানায়, সুকুক বন্ডে মুনাফা প্রদানের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ ভিত্তি হার ধরা হয়েছে। তবে সুকুকধারীরা অতিরিক্ত মুনাফাও পাবেন। বেক্সিমকো একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরে যে ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, তার সঙ্গে ভিত্তি হারের পার্থক্যের ১০ শতাংশ হিসাবে এই অতিরিক্ত মুনাফা দেয়া হবে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি কোনো বছর বেক্সিমকো ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, তাহলে ভিত্তি হারের সঙ্গে এর পার্থক্য হলো ১ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে সুকুকধারীরা ভিত্তি মুনাফা হার ৯ শতাংশের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থাৎ মোট ১০ দশমিক ৬ শতাংশ মুনাফা পাবেন।
ইসলামি শরীয়া সম্মত সুকুকটি বেক্সিমকোর একটি শরীয়াহ বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে। গতানুগতিক সুদ-ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি দেশের অসংখ্য ধর্মভীরু মানুষের মধ্যেই অস্বস্তি রয়েছে। তাদের পছন্দ ইসলামী পণ্য।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল মনে করেন বেক্সিমকোর সুকুক বন্ডের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ গতানুগতিক বন্ডের পরিবর্তে শরীয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ পছন্দ করে। তিনি বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকও শরিয়াহভিত্তিক এই বন্ডে বিনিয়োগ করেছে। সুকুক বহু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ যারা রিবা বা সুদ রয়েছে এই ধরনের লেনদেন বা আর্থিক কার্যক্রমে জড়াতে চান না। ফলে প্রচলিত সঞ্চয় মাধ্যমের বিকল্প হিসেবে সুকুক এই ঘরানার গ্রাহকদের জন্য বিনিয়োগের বড় সুযোগ। একই সঙ্গে বেক্সিমকো বন্ডের বিশেষ সুবিধা হলো-এটি বিনিময় বা রূপান্তরযোগ্য। ভবিষ্যতে চাইলে শেয়ার রূপান্তর করা যাবে। সুকুকধারীরা প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ সুকুক বেক্সিমকো লিমিটেডের সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করতে পারবেন। এক্ষেত্রে রূপান্তর হারের ওপর ২৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট রাখা হবে। বিনিময় করার নির্দিষ্ট দিনের আগের ২০ কার্যদিবসের গড় মূল্যই হবে রূপান্তরের হার। এস এম পারভেজ তমাল বলেন, যদি একজন সুকুকধারী শেয়ারে রূপান্তর করেন, আর যদি বেক্সিমকো ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, তাহলে তিনি ৩ বছরে আনুমানিক ২১ থেকে ২৭ শতাংশ রিটার্ন পেতে পারেন।
সূত্র মতে, সুকুকের প্রতিটি এককের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। একজন ব্যক্তিকে কমপক্ষে ৫০০০ টাকার সুকুক কিনতে হবে। ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশন পাঁচ হাজার টাকা ও ন্যূনতম লট ৫০টি। সুকুকটির সর্বনিম্ন প্রিয়ডিক ডিস্ট্রিবিউশন রেট ৯ শতাংশ। এটি একটি সম্পদভিত্তিক সুকুক, যা বেক্সিমকোর সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র, এর যন্ত্রপাতি ও টেক্সটাইল বিভাগের যন্ত্রপাতি দ্বারা সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি বেক্সিমকো তাদের কর্পোরেট গ্যারান্টি প্রদান করবে।
এই সুকুকের ক্রেডিট রেটিং করা হয়েছে দীর্ঘমেয়াদে ‘এ’। গ্রীন সুকুকের ট্রাস্টি ও ট্রাস্ট ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ। সিটি ব্যাংকের ক্যাপিটাল রিসোর্স লিমিটেড থাকবে ইস্যু উপদেষ্টা, যা ইস্যু আয়োজক ও ইস্যু ব্যবস্থাপক। অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড আছে যুগ্ম ইস্যু ব্যবস্থাপক হিসেবে। এইআইএল, এবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও এআইবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এক্ষেত্রে আন্ডার রাইটারের দায়িত্ব পালন করছে।
উল্লেখ্য, বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বাড়ানো ও বেক্সিমকোর দুটি সরকার অনুমোদিত সাবসিডিয়ারি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের (তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেড) বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের জুনে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিউকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠানটির তিন হাজার কোটি টাকার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ‘গ্রিন সুকুক’ অনুমোদন করে। পাঁচ বছর মেয়াদি সিকিউরড কনভার্টেবল অথবা রিডেম্বল অ্যাসেট ব্যাকড এই সুকুক বিএসইসি থেকে অনুমোদন পাওয়া প্রথম গ্রিন সুকুক। তিন হাজার কোটি টাকার এই গ্রিন সুকুকের ৭৫০ কোটি টাকা আইপিওতে উত্তোলনের জন্য বরাদ্দ। বাকি দুই হাজার ২৫০ কোটি টাকা প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। এই বন্ড ছাড়তে সরকার গত অক্টোবরে প্রথমবারের মতো নীতিমালা করেছে। দেশে ইসলামি ব্যাংকিং সেবাদাতা ব্যাংকগুলোর একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুদারাবা (মুনাফায় অংশীদারি), মুশারাকা (লাভ-লোকসান ভাগাভাগি), মুরাবাহা (লাভে বিক্রি), ইশতিসনা (পণ্য তৈরি), করজ হাসান (উত্তম ঋণ), সালাম (অগ্রিম ক্রয়) ও ইজারা (ভাড়া) সুকুক প্রচলিত আছে। সুকুক ছাড়ার দিক থেকে বর্তমানে মালয়েশিয়া বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর বেক্সিমকো তিন হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের মধ্যে পাবলিক অফারে ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য চাঁদা সংগ্রহ শুরু করে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ৩০ সেপ্টেম্বর সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের শেষ দিন।
দেশ-বিদেশে যারা নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন, তাদের জন্য নিরাপদ বিনিয়োগের নামই হচ্ছে সুকক। শরীয়াভিক্তিক পরিচালিত সুককে বিনিয়োগে করে নিজেদের পুঁজি নিরাপদ রাখুন, লাভবান হোন। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে নিজেকে শরীক করুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।