নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেশের মানুষ খেলাধুলা বলতেই বুঝে নেয় ক্রিকেট নাহয় ফুটবল। সেখানে বক্সিং আবার কী? কিংবদন্তী বক্সার মোহাম্মদ আলীর নাম জানলেই পাঠ চুকে গেল! তবে এই ধারায় বদল আসতে শুরু করেছে। গতকাল বসুন্ধরার জেফ অ্যারেনায় বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটি (বিপিবিএস) আয়োজিত থান্ডার্ড এন্ড লাইটিং ফাইট নাইটে চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম। একে-তো পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে দর্শকের রমরমা উপস্থিতি তার ওপর মেইন ইভেন্টে শাহ মো. আদনান হারুনের মনজুড়ানো পারফরমেন্স!
প্রতিপক্ষ সৌরভ খন্দকারকে মুষ্ঠিযুদ্ধে কোন সৌরভ ছড়ানোর সুযোগ দেননি মিডল ওয়েটের বিজয়ী ও আদনান হারুন ফাইট ক্লাবের স্বত্ত্বধিকারী আদনান। তিনি রিংয়ে নামার পর থেকেই চারদিক থেকে আওয়াজ আসছিলো, ‘আদনান’, ‘আদনান’। বিপুল সমর্থকদের হতাশ করেননি বিপিবিএসের ভাইস চেয়ারম্যান। প্রতিপক্ষকে শুরু থেকেই একের পর এক পাঞ্চ ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নাকানিচুবানি খাওয়ান তিনি।
এক মুহুর্তের জন্যও তিনি সৌরভকে সৌরভ ছড়ানোর সুযোগ দেননি। রেফারির পক্ষ থেকে যখন জয়ের ঘোষণা আসে, তখন আদনানভক্তদের আটকে রাখা যায়নি। প্রিয় খেলোয়াড়কে শুভেচ্ছা জানাতে রিংয়ে উঠে পড়েন ভক্তরা।
ম্যাচ জিতে দারুন খেলোয়াড়সুলভ আচরন প্রকাশ করেন আদনান। প্রতিপক্ষ বক্সার সৌরভের হাত তুলে তিনি হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন, ‘সৌরভ তুমিই জিতেছো।’ আদনানের এই স্পোর্টসম্যানশিপে প্রতিপক্ষ সৌরভও হয়তো অনেকটা হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পেরেছেন। ম্যাচ শেষে নিজের কোচকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এছাড়া সমর্থন জোগানো ভক্তদেরও প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। আদনান বলেন, ‘এ জয়ের আনন্দ প্রকাশের কোন ভাষা নেই। পেশাদার বক্সিংয়ে সুযোগ করে দেয়ায় বিপিবিএসের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানকে ধন্যবাদ জানাই। যারা আমাকে অকুন্ঠ সমর্থন জুগিয়েছেন তাদের প্রতিও জানাই কৃতজ্ঞতা।’
ক্রীড়া সংগঠক আদনান হারুন একাধারে একজন সফল ব্যবসায়ী। হোটেল রেইনট্রির স্বত্ত্বধিকারী আদনান বিভিন্ন মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এর পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্তি, সবার জন্য শিক্ষা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের উন্নয়নে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা লক্ষ্যনীয়।
এছাড়া সাপোর্টিং ইভেন্টের ২০০ পাউন্ডের লড়াইয়ে অভিষিক্ত ফয়সাল কবিরকে মাত্র ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডে টিকেও পদ্ধতিতে হারিয়ে দেন হিরা মিয়া। ১৬০ পাউন্ডের ম্যাচে টিকেও পদ্ধতিতে মো.শাহরিয়ার হারিয়ে দেন দেবাশীষ বর্মনকে। ১১৫ পাউন্ডের খেলাটি হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। আমিনুল ইসলাম ও জয়নুল ইসলাম জয়ের মধকার ম্যাচটি হয়েছে ড্র।
চলতি মৌসুমেই (বাংলাদেশ বক্সিং লিগ ২০২১) এই আয়োজন থেমে যাবে না বরং প্রতি বছর এ খেলা চালিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিপিবিএসের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান। এছাড়া বিপুল দর্শক উপস্থিতিতে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন তিনি, ‘দেশে এতো বক্সিংভক্ত দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। আবেগ ধরে রাখতে পারিনি, তাই একাই আড়ালে গিয়ে কেঁদেছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।