মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। অন্যদিকে অঞ্চলটির ৮০ শতাংশ মানুষ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পদত্যাগ চেয়েছেন। প্যালেস্টিনাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভের এক নতুন জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন সরকারের পুলিশ কাস্টডিতে সম্প্রতি একজন অ্যাকটিভিস্ট নিহত হন। এছাড়া ফিলিস্তিনের মানুষ প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী দমন-পীড়ন করে। এসব কারণে আব্বাস প্রশাসনের ওপর মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে।
চলতি বছরের ২৪শে জুন রাতে ‘নিজার বানাত’ নামে এক অ্যাকটিভিস্টকে তার চাচাতো ভাইয়ের বাসা থেকে আটক করে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। প্রায় এক ডজন ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ঘরে ঢুকেই বানাতের মাথায় লোহার শাবল দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে কাস্টডিতে তার মৃত্যু হয়।
৪২ বছর বয়সী নিজার বানাত সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিলিস্তিনি দল ফাতাহর নেতাদের খোলাখুলি সমালোচনা করতেন এবং তার এই ব্যতিক্রমী ভূমিকার জন্য তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি মাহমুদ আব্বাসের রাজনৈতিক দল ফাতাহর নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই সংক্রান্ত পোস্টগুলো হাজার হাজার মানুষ দেখতো।
মঙ্গলবার প্রকাশিত জনমত জরিপে দেখা যায়, মে মাসে ইসরাইলের সঙ্গে ১১ দিন যুদ্ধের পর হামাসের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা বেড়েছে। পক্ষান্তরে পশ্চিমা সমর্থিত আব্বাস জনসমর্থনচ্যুত হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে জনমত জরিপ সংগঠনের (পিসিপিএসআর) প্রধান খলিল শিখাকি বলেন, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ওপর জনসমর্থন সর্বনিম্ন স্তরে। গত দুই দশক ফিলিস্তিনিদের জনমত পর্যালোচনাকারী এই গবেষক বলেন, বর্তমানের মতো কখনো তার জনপ্রিয়তা এত ধস নামেনি।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে গড়ে ওঠে ইসরাইল। দেশটির এই দখলদারি আজও অব্যাহত রয়েছে। বাধা দিলেই চলে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে এই ইসরাইলি নীতিই বাস্তবায়ন করে চলেছে মাহমুদ আব্বাসের সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। শাসন-শোষণ, ধড়পাকড় থেকে শুরু করে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সবই করছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে মাহমুদ আব্বাস দীর্ঘ ১৫ বছর পর ফিলিস্তিনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরাজয়ের ভয়ে আবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
তবে জনপ্রিয়তা ধস এবং নতুন করে নির্বাচন দিতে অস্বীকৃতি জানানো সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে ৮৫ বছর বয়সী মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনের নেতা হিসেবে স্বীকৃত। তারা ইসরাইলের সঙ্গে আব্বাসকে ফিলিস্তিনের শান্তি প্রক্রিয়ার অংশীদার হিসেবে মনে করেন।
মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ ফিলিস্তিনের ‘পশ্চিম তীর’ শাসন করে। তারা গাজাও শাসন করত। কিন্তু ২০০৭ সালে মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহর কাছ থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয় হামাস।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস বেশ কয়েকবার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে। সামরিক দিক দিয়ে মহা শক্তিশালী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রত্যেক যুদ্ধে হামাস কৌশলগত জয় পেয়েছে। এ কারণে ফিলিস্তিনের মানুষের কাছে তারা আশা আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
প্যালেস্টিনাইন সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্স জানিয়েছে, জরিপ করার জন্য তারা পশ্চিম তীর এবং গাজার মোট ১ হাজার ২৭০ জনের সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এতে ৭৮ শতাংশ মানুষ মাহমুদ আব্বাসের পদত্যাগ করা উচিত বলে মত দিয়েছেন। ৪৫ শতাংশ সাক্ষাৎকারদাতা বলেছেন, হামাসের হাতে ফিলিস্তিনের নেতৃত্ব যাওয়া উচিত। অন্যদিকে, ১৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষ ফাতাহ’র হাতে নেতৃত্ব থাকা উচিত। সূত্র : আরব নিউজ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।