Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরভদ্রাসন হরিরামপুরের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের কবলে

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৮:১৪ পিএম

ফরিদপুর চরভদ্রাসনে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙন কবল পড়ছে। আর মাত্র ২৫ মিটার ভাঙলেই বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। চিরতরে একটি উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে একটি ইউনিয়নের সর্ব শেষ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে সরকারি স্কুলটির ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষার্থী জীবন নিয়ে বড়ই উদগ্রীব এলাকাবাসী। শঙ্কিত শিক্ষক এবং অভিভাবকরাও।

চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে এ ভাঙন শুরু হয় ২০০০ সাল থেকে। চলতি বছরের জুলাই থেকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে আগস্ট থেকে ভাঙন শুরু হয়। দেখা এরই ধারাবাহিতায়, গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নদী ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। এক দিনেই পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায় অন্তত ১৭ শতাংশ ফসলি জমি। গত আগস্ট ও (২০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সবুল্লা শিকদারদের ডাঙ্গী ও হরিরামপুরর পদ্মার তীরবর্তী এলাকার কমপক্ষে ৮০ টি বাড়ী পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় মাতব্বর মোঃ শহীদ প্রমানিক ও সাবেক চেয়ারম্যান দিপু খান ইনকিলাবকে জানান, ১৯৭০ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি ১৯৯৭ সালে ভাঙনের মুখে পড়ে। নদীতে বিলীন হতে সময়ের ব্যপার মাত্র।

ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা এক শিক্ষার্থীর মা আমেনা বেগম (২২) বলেন, আমার ছেলে এই স্কুলে লেখাপড়া করে। স্কুলটি ভেঙ্গে যাওনের হাতে হাতে বহু ছাওয়াল মাইয়ার পড়ালেখা বন্ধ হইয়া যাইবো।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, গত জুলাইয়ের শেষের দিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তবে গত রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ভাঙনের দৃশ্য ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এখনই এ ভাঙন রোধ করা না গেলে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক নিয়ে চরম হতাশায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে সকলেই।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়টি। ভাঙনরোধে ফেলা জিও ব্যাগের প্রায় সবই গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নদীতে চলে গেছে। স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে জানান এই শিক্ষক।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত আগস্টে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে বালু ভর্তি অন্তত পাঁচ সহস্রাধিক জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু রোববারের (১৯ সেপ্টেম্বর) ভাঙনে ওই বালুর বস্তাগুলো সব বিলীন হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল মো. বাহাউদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, গত আগস্টে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি বস্তা ফেলেছিল। আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা জানান, নদী ভাঙনের ঘটনা শুনে তিনি শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চরভদ্রাসনের নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

উল্লেখ্য ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গীতে ভাঙন ঠেকাতে এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় খুব দ্রুত একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফরিদপুর

১১ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ