Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীমান্ত নদীভাঙন ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

| প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৭ এএম

চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত নদী ফেনী। এই নদী দুই দেশের সীমানা হিসেবে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে নদীটির বাংলাদেশের অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ বছর তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে বাংলাদেশ যেমন ব্যাপক হারে ভূখন্ড হারাচ্ছে, তেমনি তা ভারতের অংশে জেগে উঠছে। শুধু ফেনী নদী নয়, ভারতের সাথে সীমানা নির্ধারণকারী অন্যান্য নদীর ভাঙনও বছরের পর বছর ধরে চলছে। এতে বাংলাদেশের মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। এ নিয়ে বহু লেখালেখি হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। ভারত তার অংশে জেগে উঠা ভূমি বাঁধ দিয়ে সংরক্ষণ করলেও, বাংলাদেশ অংশে ভাঙনরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এতে প্রতিবছর বাংলাদেশ শত শত একর জমি হারাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশন থাকলেও দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনার ফল পাওয়া যাচ্ছে না। যৌথ নদী কমিশনে ভাঙন রোধে একমত হলেও বাস্তবে তার প্রতিকার করতে গিয়ে ভারতের বাধা ও অসহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন কমিশনের সদস্যরা। বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের এক সদস্য বলেছেন, ভারতের অংশের বেশিরভাগ জায়গা ভারত সুরক্ষিত করে ফেলছে। বাংলাদেশ অংশে তা করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ সুরক্ষিত করতে গেলে ভারতের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত নদ-নদীর সীমানা নির্ধারিত হয় মাঝ স্রোত বরাবর। ভাঙনে নদী যে দেশের দিকে সরে যায়, তার মাঝ স্রেঠু বরাবর সীমানাও সরে যায়। এতে যে দেশের দিকে সরে যায় সে দেশ ভূমি হারায়। বাংলাদেশ ভাটি অঞ্চলে পড়ায় নদীর ভাঙন এদিকেই বেশি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে ভারত। কারণ, ভারতের অংশে ভূখন্ড জেগে উঠছে। ভারতও তা দ্রুত তার দখলে নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে সুরক্ষিত করছে। অন্যদিকে, নদীভাঙনে বাংলাদেশ যাতে ভূখন্ড না হারায় এ জন্য যে ধরনের উদ্যোগ নেয়া দরকার তা নিতে পারছে না। ফলে বাংলাদেশ প্রতি বছরই ভূখন্ড হারাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। মিয়ানমারের সাথে রয়েছে ৩টি। ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৯৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৮০ কিলোমিটার নদীসীমান্ত। ভারত থেকে আসা মূল তিন নদ-নদী পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় সাধারণত ভাঙন বেশি দেখা দেয়। এ ভাঙন দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তে প্রবল। পদ্মা, তিস্তা, ইছামতি, কালিন্দি, বেতনা, ভৈরব, মাথাভাঙা, আত্রাই, মহানন্দা, করতোয়া, ডাহুক, সুরমা, কুশিয়ারা ইত্যাদি নদীতে প্রতিবছরই কম-বেশি ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত নদীর ভাঙনে এমনও হয়েছে যে, রাজশাহী ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও জনপদ বিলীন হয়ে গেছে। এতে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। দেশের মানচিত্র থেকে এসব ভূখন্ড হারিয়ে গেছে। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সীমান্ত নদীভাঙনে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১৫ হাজার হেক্টর জমি হারিয়েছে। এর মধ্যে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বিগত কয়েক বছরে প্রায় ৩ হাজারের বেশি একর ভূখন্ড হারিয়েছে। এখন ফেনী নদীর ভাঙনে ভূখন্ড হারাচ্ছে। এ এক ভয়ংকর চিত্র। অথচ নদীভাঙন থেকে ভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ভারতের বাধার মুখে পড়ার কথা বলে তারা যেন হাতগুটিয়ে বসে আছে। নদীভাঙন যে সীমান্তে হচ্ছে, তা নয়। প্রতিবছর আভ্যন্তরীণ নদীভাঙনও তীব্র হয়ে উঠেছে। চলমান বন্যার সময়ও আভ্যন্তরীণ নদ-নদীর ভয়াবহ ভাঙনে জনপদ ও স্থাপনা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও উদাসীনতায় দেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হলেও এর স্থায়ী সুরাহা হচ্ছে না।

আভ্যন্তরীণ নদীভাঙনে এক অঞ্চলের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অন্য অঞ্চলের মানুষের উপকার হয়। ভূখন্ড দেশের মধ্যেই থেকে যায়। পক্ষান্তরে সীমান্তনদীর ভাঙনের ফলে দেশের আয়তন কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভূমি অন্যদেশের হয়ে যায়। অথচ যেকোনো মূল্যে সীমান্তে আমাদের ভূখন্ড রক্ষা করা দরকার। এক্ষেত্রে, যৌথ নদী কমিশন হোক আর পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অন্য কর্তৃপক্ষ হোক, তাদের উচিৎ সীমান্ত নদীভাঙন ঠেকানো। এজন্য, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ থেকে শুরু করে ভাঙনরোধে অন্যান্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। ভারত যদি তার অংশে জেগে উঠা ভূমি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, আমরা কেন নদীভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারছি না? আমরা মনে করি, সীমান্ত নদীভাঙন ঠেকাতে যৌথ নদী কমিশন যদি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে বিষয়টি উপস্থাপন করতে হবে। বাস্তবে সীমান্তের ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যাতে হাতছাড়া না হয়, এমন দৃঢ়তা দেখাতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীমান্ত নদীভাঙন
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->