পুনরায় যমুনা ব্যাংকের এমডি হলেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ
যমুনা ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে আরও ৫ বছরের জন্য পুনরায় নিয়োগ পেয়েছেন মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে পুনঃনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।
আবু হেনা মুক্তি : বৃহত্তর খুলনাঞ্চলের মানুষ ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আঁটঘাট বেঁধে রাজপথে নামা, আন্দোলনের চরম মুহূর্ত প্রদর্শন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় এ অঞ্চলের মানুষ জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ভোটদান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাঘা প্রার্থীকে হারিয়ে বিএনপির জয় এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের অনেকেরই উদাসীনতা ও এ অঞ্চলে কোনো পূর্ণ মন্ত্রী না থাকায় বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফসল খুলনায় গ্যাস আসছে না। অভিভাবকহীন এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যে এখনো পাইপলাইনে গ্যাস জোটেনি।
শিল্প ও বন্দরনগরী খুলনার ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি এ অঞ্চলের ১১টি জেলায় গ্যাসনির্ভর শিল্প গড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে পদ্মার এপার। প্রকল্পের পূর্ণ অর্থ বরাদ্দ রয়েছে, বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী আমদানিও হয়েছে, কিন্তু মাঠে বণ্টন ব্যবস্থা খুবই নাজুক। যেন কেউ দেখার নেই। নাগরিক নেতা অধ্যাপক এনায়েত আলী বিশ্বাস বলেছেন, খুলনাঞ্চল কি অভিভাবকহীন? নাকি বিএনপি অধ্যুষিত এ অঞ্চলে উন্নয়নে কর্তাব্যক্তিদের অনীহা?
সূত্র মতে, চরম অবহেলা ও দীর্ঘসূত্রতার শিকার হচ্ছে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পটি। আঞ্চলিক বৈষম্য এবং পরশ্রীকাতরতার ঘেরাটোপে অর্ধ দশক যাবৎ প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে। এক পা এগিয়ে দুই পা পিছিয়ে নেয়ার নীতিতে খুলনার সমন্বিত উন্নয়নের মৌলিক এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। এমনি অবস্থায় খুলনার মানুষের গ্যাসপ্রাপ্তি স্বপ্ন হিসেবেই রয়ে যাবে কি না তা এখন বড় প্রশ্ন। খুলনার জনপ্রতিনিধি এবং রাজনীতিকরা বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামে একত্মা ঘোষণা করে প্রতিশ্রæতি দিয়েছে বার বার। কিন্তু এক অজানা শুভঙ্করের ফাঁকিতে খুলনাঞ্চলের মানুষ বারবার আশাহত হচ্ছে। কার কাছ থেকে এর জবাব খুলনাবাসী নেবে তা তাদের জানা নেই।
২০০৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়ে ৩ বছরের মধ্যে ২০১১ সালে শেষ করার জন্য ৫৩২ কোটি টাকার বিতরণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। অথচ ২০১৬ সালের মধ্যেও কাজটি সমাপ্ত হচ্ছে না। কবে হবে ভবিতব্য জানে।
উল্লেখ্য, অনেক আগেই যমুনা সেতু পার হয়ে হাটিকুমরুল থেকে ভেড়ামারা হয়ে খুলনার উপকণ্ঠ পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন বসানোর কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ লাইন না থাকায় পদ্মার এপারের ১১টি জেলায় গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাস পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে আছে। জানা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনার প্রেক্ষিতে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনো কার্যত অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে।
কারণ হিসেবে জানা যায়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির গ্যাস বণ্টন লাইন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যে ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে প্রণীত হয়েছিল অর্থাৎ এডিবির অর্থায়নের বিষয়টি যে ডিজাইনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত হয় তা এখন পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্দরবন গ্যাস কর্তৃপক্ষ। মাঝপথে এই সিদ্ধান্ত পুরো প্রকল্পের ভবিষ্যতকে আরো দীর্ঘসূত্রতাসহ অনিশ্চয়তার অতল গহŸরে নিমজ্জিত করেছে। সূত্র বলছে, কোম্পানির বর্তমান এমডির এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে এডিবির ঋণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়বে।
খুলনাবাসী প্রত্যাশা করছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যারা খুলনাবাসীর উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়ে রাজনীতি করছেন তারা এ লক্ষ্যে সোচ্চার হবেনÑ কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। অর্ধদশক যাবৎ প্রকল্পটি কেন ঝুলে রয়েছে তার জন্য খুলনাবাসীর কাছে জবাবদিহি করবেন। একইভাবে যেসব কর্মকর্তা এবং কর্তাব্যক্তিদের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার দড়িতে ঝুলে রয়েছে তারা চক্রান্ত করছেন কি না তা খতিয়ে দেখবেন।
জানা যায়, ফিল্ড অফিস খুলনায় হলেও নেতৃস্থানীয় কর্তাব্যক্তিদের রাজধানীকেন্দ্রিক অবস্থান প্রকল্পটির দীর্ঘসূত্রতা ত্বরান্বিত করছে। পদ্মার এপারের প্রতি প্রকল্প কর্মকর্তাদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টিও এখন আলোচিত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। সরকারের শীর্ষমহলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে কমিটমেন্ট থাকলেও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের এ ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাশুল দিতে হচ্ছে কয়েক কোটি মানুষকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।