গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় দুই বছর আগে নিজেদের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন ময়না ও রাজমিস্ত্রি রুবেল। বিয়ের পর ঘর জামাই হয়ে শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন রুবেল। কিন্তু রুবেল পরকীয়ার জড়িয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। দাম্পত্য কলহের জের ধরে গত ১৯ আগস্ট দিবাগত রাতে স্ত্রী ময়নাকে গলা টিপে হত্যা করেন তিনি। এ ঘটনার পর আত্মগোপনে যায় রুবেল। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দল রুবেলকে গ্রেফতার করে। গতকাল রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, গত ১৯ আগস্ট রাত ১১টা থেকে পরদিন সকাল ৭টার মধ্যে যেকোনো সময় জামালপুর পৌরসভাধীন নয়াপাড়ার মোকছেদ আলীর মেয়ে মোসলিমা আক্তার ওরফে ময়না (৩৮) খুন হন। হত্যাকাণ্ডের পরপরই স্বামী রুবেল মিয়া আত্মগোপনে যান। ঘটনার পর নিহতের মা মোছা. সুরমেলী (৬৫) মেয়ের জামাই রুবেল মিয়াকে আসামি করে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। সিআইডির এলআইসি শাখার একটি চৌকস টিম ঢাকার ডেমরা থানাধীন ইসলামবাগ, বাশেরপুল এলাকা থেকে মামলার একমাত্র আসামি মো. রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে।
এদিকে, যৌতুকের দাবিতে হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে রকিবুল গাজী (৪০) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গত মঙ্গলবার সাভারের ধামসোনা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডির দাবি, নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন বাবরা হাচলা ইউনিয়নের উড়শীতে স্ত্রী দিপালী বেগমকে (৩৫) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন রকিবুল।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ৬ বছর আগে দিপালীর সাথে বিয়ে হয় রকিবুলের। বিয়ের সময় আসামি রকিবুল নগদ ৫ লাখ টাকা যৌতুক নেন। পরে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিলেন তিনি। দিপালীর পরিবারের সদস্যরা তা দিতে অস্বীকার করে। এরপর থেকে দিপালীর ওপর নির্যাতন চলছিল। এ কথা জানতে পেরে দিপালীর মা বসতবাড়ি বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দেন। মুক্তা ধর আরও বলেন, এই টাকা দিয়ে রকিবুল বাড়ি, ফার্নিচারের দোকান, কাঠের ডিজাইন করার মেশিন কেনেন। এসবের পর আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করেন রকিবুল। এই টাকা আদায়ের জন্য দিপালীর ওপর আবারও নির্যাতন শুরু করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কলহের জের ধরে রকিবুল স্ত্রী দিপালীকে তার মায়ের সামনে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে দিপালীর মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে যায়। আশপাশের মানুষ চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসক ডাকেন। তবে তার আগেই মারা যান দিপালী।
নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের পর মামলা হয়। ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তের এক পর্যায়ে আত্মগোপনে থাকা রকিবুলের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সিআইডির একটি টিম রকিবুল গাজীকে সাভারের ধামসোনা থেকে গ্রেফতার করে। মুক্তা ধর বলেন, যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে উত্তেজিত হয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন রকিবুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।