Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় নুরুন্নাহার হত্যা রহস্য উন্মোচন করল সিআইডি

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:৪১ পিএম

পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে জামাল ও নুরুন্নাহার। আর্থিক কারণে তাদের এ সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে। নুরুন্নাহার মাঝে মধ্যে টাকা পয়সার জন্য জামালকে অপমান অপদস্থ করত। দীর্ঘ টানাপোড়নের একপর্যায়ে নুরুন্নাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছর ২২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮ টায় জামাল ও ফারুক মহাজন নামে দু’ব্যক্তি নুরুন্নাহারকে হত্যা করে। আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে এমন তথ্য উঠে এসেছে। চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, আসামি জামাল খুলনা নিউ মার্কেট এলাকায় মানুষের ক্রয় করা মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করত। ওই এলাকার ইয়াছিন শেখের মাধ্যমে নুরুন্নাহারের সাথে পরিচয় হয় জামালের। নুরুন্নাহার ও তার বোন প্রায়ই জামালের মাধ্যমে ঐ এলাকার বিসমিল্লাহ হোটেলে খাওয়া দাওয়া করত। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

নুরুন্নাহারের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নারী লোভী জামাল অর্থের বিনিময়ে তার সাথে বিভিন্ন স্থানে সময় কাটাতে শুরু করে। অবৈধ এ সম্পর্কের কথা বলে নুরুন্নাহার একপর্যায়ে জামালকে ব্লাকমেইল করতে থাকে। টাকা না দিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো জামালকে।

এক পর্যায়ে অক্টোবর মাসে জামাল নুরুন্নাহারকে খুন করার পরিকল্পনা করে। গ্রামের পরিচিত দুলাভাই ফারুক মহাজনকে বিষয়টি খুলে বলে সে। নুরুন্নাহারকে হত্যার জন্য ফারুক মহাজনকে ৫ হাজার টাকা দিতেও রাজী হয় জামাল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ নভেম্বর জামাল সাইকেল নিয়ে নগরীর ৫ নং ঘাটে গিয়ে ফারুক মহাজনের সাথে দেখা করে। সেখান থেকে সিমেন্টের বস্তা সেলাই করা সুতা সংগ্রহ করে। এরপর ফোন করা হয় নুরুন্নাহারকে। তারা তিনজন একসাথে খুলনার সাচিবুনিয়া চৌরাস্তায় মিলিত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দোকান থেকে জুস, আপেল ও ঘুমের ঔষধ ক্রয় করা হয়। জুসে ঘুমের ঔষধ মেশানো হয়। যৌন মিলনের পর নুরুন্নাহারকে প্রথমে আপেল ও পরে জুস খাওয়ানো হয়। জুস খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়লেই সিমেন্টের বস্তা সেলাই করা সুতা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নুরুন্নাহারকে হত্যা করা হয়। এরপর যে যার মতো বাড়ি চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা লবনচরা থানাধীন খুলনা–বাগেরহাট মহাসড়কের খোলাবাড়িয়া ডেসটিনি লিমিটেডের পরিত্যক্ত জমিতে লাশ দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ লাশের সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে ওই দিন লবনচরা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা দায়ের করেন, যার নং ১৫। পরে মামলাটি খুলনা সিআইডির পরিদর্শক মোছাঃ মাহমুদা খাতুনের ওপর ন্যাস্ত হলে তিনি এ রহস্য বের করেন।

দীর্ঘ ৯ মাস পরে সিআইডি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন নুরুন্নাহার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে জামাল হাওলাদার ও ফারুক মহাজনকে আসামি করে আজ রোববার খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ