Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তামিমের সিদ্ধান্তে মাশরাফির শ্রদ্ধা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। নিজের সিদ্ধান্তের কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বোর্ড প্রধান বাঁহাতি এই ওপেনারের সিদ্ধান্তে দিয়েছেন সায়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও ইতিবাচকভাবে দেখছেন তার দীর্ঘদিনের সতীর্থের সিদ্ধান্তকে। তার মতে, তামিমের সিদ্ধান্তের প্রতি সবার শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের জন্য বিবেচিত হওয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তামিম। তার এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাশরাফি। ফেসবুকে ব্যক্তিগত প্রোফাইলে তিনি লিখেছেন, তামিমের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই সংস্করণে খেলার বাইরে থাকায় সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে নামলে চাপে পড়তেন তিনি। যার প্রভাব পড়ত অন্যান্য সংস্করণেও।
তামিম না থাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ের বিবেচনায় থাকছেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার ও নাঈম শেখ। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলেও মাশরাফির মতে, ঘরের মাটিতে যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছে, সেখানে ব্যাটসম্যানদের বিচার করা কঠিন।
দৈনিক ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য মাশরাফির সে বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো...
‘তামিম নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা একজন ব্যাটসম্যান। পরিসংখ্যানও তাই বলে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সব যোগ্যতা তার আছে। ক্রিকেট বোর্ড, টিম ম্যানেজম্যান্ট সবাই তাকে দলে রাখবে এটা সবারই জানা। কেন তামিম এ সিদ্ধান্ত নিল, তার যুক্তিও আছে অনেক। প্রথম হলো, তামিমের চোট। তারপর এই দিয়ে প্রায় চারটা সিরিজ সে খেলতে পারেনি। তার মানে প্রায় ১৬টা ম্যাচ। এতে করে হঠাৎ কোনো ম্যাচ না খেলে মাঠে নামার পর নিজের ওপর নিজের বিশাল চাপ সৃষ্টি হবে। যা পরে ওয়ানডে বা টেস্টে তাকে বহন করতে হতে পারে।
কথা হলো, এখন যারা খেলছে, তারা তো রান করেনি। আবার সেখানেও কথা আছে। যে উইকেটে খেলা হচ্ছে, সেখানে (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ছাড়া আর কোনো দলের খেলোয়ারই ৫০ ছুঁতে পারেনি। ট্রু উইকেটে বিচার না করা একেবারেই অন্যায় হবে সৌম্য, লিটন বা নাঈমের সঙ্গে। সমস্ত কঠিন সিরিজগুলো সত্যিই এই ছেলেগুলো পার করছে। পুরোটাই ইতিবাচকভাবে দেখলে তামিমের সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গতভাবে সমর্থন করা খুব কঠিন কাজ না। প্রথমত, এটা একান্তই তামিমের সিদ্ধান্ত। এরপর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ছিল, তামিম সব সময় ড্রেসিং রুমে সাদর অভ্যর্থনা পেয়ে থাকে। কিন্তু ১৬টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ বা কোনো অনুশীলন ম্যাচ ছাড়া এবার তাকে কতটুকু স্বাগত জানানো হতো তা হয়তো তাকে ভাবিয়েছে।
আর কেউ না বুঝুক, তামিম নিজেও জানে, এখন ব্যাটসম্যানরা কেমন উইকেটে ব্যাটিং করছে, যেখানে তাদের ভুল থাকলেও তাদের খুব বেশি কিছু করার নেই। আজকের (বুধবার) উইকেট তো অস্ট্রেলিয়ার সময়ের উইকেট থেকেও ভয়ানক মন্থর। এরপর কী অপেক্ষা করছে কে জানে। আর এতকিছুর পরও তামিমকে দলে ঢোকার জন্য কারও খারাপ খেলার প্রয়োজনও নেই। এটা সবারই জানা। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে, তামিম তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে ভেবেই নিয়েছে, যেটাকে সম্মান জানানো উচিত।
টপ অর্ডারের অস্থিরতাও হয়তো কিছুটা কমবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,কোনো কোনো সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন পাল্টে দেয়, আমার কাছে মনে হয়, এই সিদ্ধান্তের কারণে, তামিম যখন ওয়ানডের পরবর্তী ম্যাচেই অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামবে, এই ছেলেগুলো (সৌম্য, লিটন বা নাঈম) তার জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবে। কারণ, কেউ করুক আর না করুক, তামিম নিজেই এই ছেলেগুলোর পরিশ্রমকে ন্যায়সঙ্গত প্রমাণ করেছে। আর তামিম এখনও অন্যতম সেরা এবং সেরাদের একজন থাকবে। এই সংস্করণে জোর করে খেলে অবশ্যই টেস্ট ও ওয়ানডের সেরা ব্যাটসম্যানকে কেউ হতাশ দেখতে চাইব না। তামিমের এখনও অনেক ম্যাচ জেতানোর বাকি আছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ মাসে বাংলাদেশের হয়ে কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি তামিম। গত ৩২ মাসে তিনি মাঠে নেমেছেন কেবল ৩ ম্যাচে। সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় তিনি বলেছেন, অনেক দিন ধরে এই সংস্করণে না খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা পেলে তা ন্যায্য মনে হতো না তার কাছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টি-টোয়েন্টি

১৪ নভেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ