Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনবাগে মানব পাচার মামলায় অভিযুক্ত পিতা-পুত্র গ্রেফতার

সেনবাগ (নোয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:২৬ পিএম

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের পরীকোট গ্রামের আইয়্যুব আলীর বাপের বাড়ি থেকে প্রায় ১৩ বছর আগে নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনা (২৫) কে পাচারের অভিযোগে পিতা ও পুত্রকে গ্রেফতার করেছে সেনবাগ থানা পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেনবাগ থানার এসআই সুবজ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স উপজেলার ডমুরুয়া ইউপির ১নং ওয়ার্ডের আইয়্যুবের বাপের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী মো. ইদ্রিস মিয়া (৫৭) ও তার ছেলে আবদুল্লাহ শাফী (২৩) কে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে নোয়াখালী বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।

এ ঘটনায় ১৭ নভেম্বর ২০২০ ইং নোয়াখালী নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানব পাচার, প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ৭/৯/১০ ও ১১ ধারায় পাচারের শিকার নারী নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনা বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে মামলা নং-৩। ওই মামলায় আসামী করা হয় পাচারের শিকার নারী জোসনার জেঠী আফরোজা বেগম প্রকাশ মুন্নি (৫৩), জেঠা ইদ্রিস (৫৮), জেঠাতো ভাই আবদুল্লাহ প্রকাশ শাফী (২৩) সহযোগী জান্নাতুল ফেরদাউস প্রকাশ কাজল (৫৪), মো. শহীদ উল্লাহ (৬৩), জয়নাল আবদিন (৫৮), ফেরদাউস আরা বেগম (৫৩), রাশেদুল করিম (৩২) ফাতেমাতুজ জোহুরা প্রকাশ ববি (৩৪) ও ফারজানা আক্তার প্রকাশ পলি (২৯) কে। মামলাটি দায়েরর পর আদালত মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিষ্টিকেশন (পিবিআইকে)।

এরপর বাদী পিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থা দিলে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সেনবাগ থানাকে নির্দেশ দিলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ইকবাল হোসেন মামলাটি তদন্ত করে ১১ আসামীর মধ্যে ৪ জনকে বাদ দিয়ে অপর ৭ জনের বিরুদ্ধে গত ২১/৪/২১ ইং মানব পাচার আইনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর বিজ্ঞ আদালত ৭ আসামীর বিরুদ্ধে গত ১৭ আগষ্ট ২০২১ ইং ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। আদালতের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সেনবাগ থানার এসআই সবুজ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স মানব পাচারকারী মো. ইদ্রিস ও তার ছেলে আবদুল্লাহ প্রকাশ শাফীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

জানাগেছে, ২০০৮ সালে ১৫ জুলাই পরীকোট গ্রামের আবদুল মালেক জমিদারের মেয়ে নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনাকে ১১ বছর বয়সে তার জেঠি আফরোজা বেগম প্রকাশ মুন্নি (৫৩) জেঠা মো. ইদ্রিস মিয়া (৫৮) ও তার ছেলে আদুল্লাহ শাফী (২৩) বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে ফেনী পৌরসভার রামপুর ১৮নং ওয়ার্ডের তাকিয়া রোডস্থ জয়নাল আবেদিনের নিকট ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। দীর্ঘদিন খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় পাচারের শিকার ১১ বছরের ওই শিশুটি বর্তমান বয়স ২৬ বছর। পাচারের ১৫ বছর পর শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের শিকার ওই শিশুটি বর্তমানে ২৬ বছরের যুবতী কৌশলে পালিয়ে গত ৭ নভেম্বর সেনবাগে গ্রামের বাড়িতে ফিরে এলে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই নারী ফিরে এলে পাচারকারীরা প্রথমে বিষয়টির ব্যাপারে ভুল স্বীকার করে ১২ শতাংশ জমিন পাচারের শিকার ওই নারীর নামে লিখে দেওয়ার কথা বলে আপোস মীমাংসা করলেও পরবর্তীতে তা অস্বীকার করে। এবং ওই নারীর পিতা-মাতা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করে হয়রানী করছে অভিযোগ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নোয়াখালী

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ