Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয় নাটোরের মাঝি আরজুকে

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২১, ৪:০০ পিএম

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয় নাটোরের সিংড়া থানাধিন আনন্দনগর গ্রামের নৌকার মাঝি আরজুকে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংএ ২৭ শে আগস্ট নিখোঁজ আরজু মাঝির হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
প্রেস ব্রিফিংএ জানানো হয় মৃত আরজু সিংড়া থানার আনন্দনগর গ্রামের আদম আলীর ছেলে। ২৮ শে আগস্ট শনিবারে গুরুদাসপুরের বালশা গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের পাশে আরজু মাঝির মৃতদেহ পাওয়ার পরে তার পিতা আদম আলী গুরুদাসপুর থানায় আরজু হত্যাকান্ডের একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর এলাকা থেকে ৩০ শে আগস্ট রাত পৌনে ১ টার দিকে আসামি বাইজিদ বোস্তামীকে (১৮) গ্রেফতার করে। সে বিলহরিবাড়ি এলাকার নাসির বোস্তামির ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংএ আরোও জানানো হয় আসামি বাইজিদ বোসÍামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সে তার ২ বন্ধু সহ বৃহস্পতিবার সিংড়ার বিলদহর এলাকায় তিশিখালী মাজারে যাবার জন্যে ৭০০ টাকা দিয়ে আরজু ফকিরের নৌকা ভাড়া করে। সেখান থেকে গুরুদাসপুরের হরদমায় গিয়ে আরো ২ বন্ধু নৌকায় উঠে এবং বিলসার দিকে যেতে বলে। তাদের দেখে ঘাবড়ে গিয়ে আরজু মাঝি তাদের নৌকায় উঠার কারন জিগ্যেস করে। তারা বলে বিলসায় গিয়ে সারারাত ধরে পিকনিক করবে। কিন্তু নৌকা হরদমা জোলার কাছে পৌঁছলে তারা আরজুকে নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে বাইজিদ তার সঙ্গীয় বন্ধুদের সাথে গাঁজা সেবন করতে বসে। একপর্যায়ে তারা নৌকা বাধার রশি দিয়ে আরজুকে নৌকার ছইয়ের সাথে বেধে ফেলে তখন ২ বন্ধু আরজুকে বলে তোর জীবনের দাম কত? তুই না অনেক শক্তিশালী ? তুই আমাকে তোর বাড়ির কাছে পেয়ে লাথি মেরেছিলি। মনে পড়ে সে কথা ? তখন আরজু তাদের পায়ের কাছে মাথা রেখে বলে আমাকে মাফ করে দে। আমার শিশু বাচ্চা আছে। তোদের সাথে আমার কোন বিরোধ নাই। আমি নৌকা চালিয়ে কোনরকমে জীবন চালাই। তখন তারা আরজুর কাছে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেবে বলে জানায়। কিন্তু আরজু মোবাইলে কারোও কাছেই টাকা চেয়ে পায় না। সেই সময় বাইজিদের বন্ধুরা বলে শালাকে শেষ করে দেই্। ওর জীবনের কোন দাম নাই। বাচায়ে রেখে লাভ নাই। এই বলে তাদের মধ্যে একজন আরজুর মাথায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মাথার পিছনে ৩-৪ টা কোপ দেয়। এরপর আরজু গোঙ্গিয়ে নিস্তেজ হয়ে গেলে তাকে পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যাকান্ড শেষ করে।
উল্লেখ্য আরজু মাঝি হত্যাকান্ডের ৭-৮ মাস পূর্বে সিংড়া থানাধিন চামারী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামে আরজু ও তার এলাকার লোকজনদের সাথে আসামি বাইজিদ ও তার বন্ধুদের এক মেয়ে ঘটিত বিষয়ে হট্টগোল হয়। তখন আরজু এবং তার লোকজন বাইজিদদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। তখন থেকেই তাদের মধ্যে শত্রুতা। হাতাহাতিও ঘটে। এই পূর্ব শত্রতার জের ধরেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে প্রেস ব্রিফিংএ জানানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুপিয়ে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ