Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুস্থতার জন্য ঘুম

| প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৪ এএম

সুস্থ থাকতে ভাল ঘুম চাই। প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুম কিংবা বেশী কোনটাই ভাল নয়। কতটুকু সময় ঘুমাবেন? অধিকাংশ গবেষকদের মতে, প্রতি রাতে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ৮ ঘন্টার বেশী ৬ ঘন্টার কম ঘুম ভাল নয়। পরিমিত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে। প্রতি রাতে নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যান। আরামদায়ক ঢিলে ঢালা পোশাক পরে ঘুমাতে যাবেন। যে পোশাক পড়ে আপনী আরাম বোধ করেন। সেটিই হতে পারে আপনার ঘুমানোর পোশাক। রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়বেন না। কিছুটা সময় নিন। হাটাহাটি করতে পারেন। তবে চা কফি (ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয়) পরিহার করুন। দিনে যা হয়েছে। তা সেখানেই শেষ। ঘুমানোর পূর্বে কোন বিষয় নিয়ে টেনশন করা যাবে না। বইপত্র পড়তে পড়তে ঘুমাতে পারেন।

বিছানা খুব বেশী নরম তুলতুলে হবার দরকার নেই। তবে বিছানাটা যেন আরাম দায়ক হয়। খুব বেশী উচু বা শক্ত বালিশ ব্যবহার করবেন না। ভরাপেটে যেমন ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। তেমনি খালি পেটে ঘুম হবে না। ক্ষুধা লাগলে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন। ঘুমের আগে গোসল করে নিতে পারেন। বিশেষকরে গরমের সময়টাতে। গোসলের পরে আরামদায়ক পরিপূর্ণ ঘুম হবার সম্ভাবনা প্রবল। মোবাইল ফোন দুরে রাখুন। সাইলেন্ট করে রাখতে পারেন। ঘুমের সময় অল্প আলোতে কিংবা অন্ধকারে মোবাইল ব্যবহার ক্ষতিকর। চোখ ও মস্তিস্কের উপর চাপ পরে। বিছানায় গা এলিয়ে চিন্তা ভাবনা করার অভ্যাস অনেকেরই। কাগজ কলম কাছে রাখুন। ভাবনাগুলো নোট করে ঘুমিয়ে পড়–ন। সঙ্গীর সাথে হাসি ঠাট্টা করতে পারেন। এত মনটা চনমনে ফুরফুরে হবে। মানসিক চাপ কমে যাবে। যা ভাল ঘুমে সহায়ক। প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় কিছুটা সময় ব্যায়াম করতে পারেন। দৈনিক ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হাটা শরীরের জন্য খুব উপকারী।

যে ঘরে ঘুমাবেন, সেখানটাতে ঘুমের পরিবেশ সৃষ্টি করে নিন। ঘরের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা দেখে নিন। এসি কমানো বাড়ানো লাগলে তা করুন। ফ্যানের স্পিড ঠিক করে নিন। অন্ধকারে মস্তিস্কে মেলাটরিন নি:সৃত হয়। মেলাটরিন ঘুমে সহায়তা করে। তাই ঘর অন্ধকার করে নিন। রাতে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাবার অভ্যাস যাদেও, তারা খুব কম পাওয়ারের ডিম লাইট রুমে অন করে রাখতে পারেন। ঘুমের আগে বেশীক্ষন টিভি দেখবেন না। ফেসবুক, টুইটার পরিমিত ব্যবহার করুন। মনযোগ দিয়ে নফল নামাজ পড়া, তাহাজ্জুদ পড়া রাতে ঘুমের একটি ভাল পদ্ধতি। ইয়োগা বা মেডিটেশন অনিন্দ্রা সমস্যার ভাল সমাধান। মেডিটেশন করতে পারেন। একদমই চোখের পাতায় ঘুম আসছে না। তাহলে কোন কাজে লেগে যান। কিছুক্ষণ পরে এমনিতেই চোখের পাতা জুড়ে ঘুম আসবে। ঘুমানোর পূর্বে নিজেকে রেডি করুন। যেমন ঘুমের পোশাক পড়া, দাঁত ব্রাশ, বিছানা পরিস্কার করা ইত্যাদি কাজ করে নিন। ঘুম আসুক বা না আসুক। নিদিষ্ট সময় ঘুমুতে যেতে হবে। নিদিষ্ট সময়ে উঠতে হবে। রাতে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন। পিৎজা, বারগার জাতীয় ফাস্টফুড একদমই বর্জন করুন। দিনের বেলায় ঘুম পরিহার করুন। দিনে ঘুম মানে রাতের ঘুমের বারোটা বাজানো। আমি আরাম করে ঘুমাব। আমি খুব সুখী মানুষ। কোন রকম দুশ্চিতা আমার নেই। এমনটাই ভাবুন। ঘুম কেন হচ্ছে না এই নিয়ে মাথা গরম করবেন না। এমন ভাবনাকে একদমই পাত্তা দিবেন না। ঘুমানোর আগে একটা সিগারেট না খেলে হয়ই না। একটু অ্যালকোয়েলে চুমুক দিলে ভালই লাগে। এমনটা যাদের অভ্যাস। তাদের জন্য দু:সংবাদ। ধুমপান, অ্যালকোয়েল ঘুমের ব্যঘাত ঘটায়। রাতে এসব খাওয়া পরিহার করুন। ইনসমনিয়া বা নিদ্রাহীনতার রোগ যাদের আছে। দিনেও তারা ওই খাবার না খেলে ভাল করবেন।

ঘুম হয় না। নিন্দ্রাহীনতা একটা সমস্যা। যাকে বলা হয় ইনসমনিয়া। ২২ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা এ সমস্যায় বেশী আক্রান্ত হন। ওষুধ খেয়েই নয়। একটু সচেতনতা, প্রত্যহিক রুটিনে পরিবর্তন এ সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হতে পারে। ভয়, শংকা, আতংক, দুশ্চিন্তা থেকে ইনসমনিয়া হতে পারে।

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ফ্রী ল্যান্স সাংবাদিক ও কলাম লেখক
[email protected]
বাসা-৪০,রোড-৩২/ডি,মিরপুর-১২
ঢাকা-১২০৯
০১৭১৫ ৩৬৪২০৩



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুস্থতার জন্য ঘুম

২৭ আগস্ট, ২০২১
আরও পড়ুন