বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ার জেরে স্ত্রী সুলতানা আক্তার ক্যামিলি ও তার প্রেমিক রবিউল করিম পিন্টু মিলে স্বামী এলিম সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যাকান্ড সঙ্ঘটিত করতে চাইলেও ব্যর্থ হন ক্যামিলি ও পিন্টু। পরে পিন্টু নিজেই কাজটি করার সিদ্ধান্ত নেনে। সেই অনুযায়ী ক্যামিলি রাতেই স্বামীকে দইয়ের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে দেন। পরদিন সকালে ক্যামিলির পরামর্শে পিন্টু তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় ঢোকেন। নিস্তেজ পড়ে থাকা এলিমকে চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে বাসার সিসি ক্যামেরা ও ডিভিআর নিয়ে পালিয়ে যাযন পিন্টু ও তার বন্ধু। ক্যামিলি ও তার প্রেমিককে গ্রেফতারের পর বের হয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্য তথ্য। গতকাল বুধবার রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
তিনি জানান, এই ঘটনায় এলিমের বাবা ফজল হক সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৬৮) দায়ের করেন। থানা-পুলিশের পর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা জেলার একটি টিম। তদন্ত ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আশুলিয়া জিরাবো জামগড়া এলাকা থেকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও নিহতের স্ত্রী মোসা. সুলতানা আক্তার ক্যামিলি (৩০) ও তার পরকীয়া প্রেমিক মো. রবিউল করিম পিন্টুকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়।
এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, ডিস ব্যবসায়ী এলিম সরকার (৪২) স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে আশুলিয়া থানাধীন কাঠগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ২৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষে এলিম সরকার স্ত্রী সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ২৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে ক্যামিলি ঘুম থেকে উঠে জরুরি প্রয়োজনে তার শ্বশুর ফজল হক সরকারের বাড়িতে যান। বাড়ির অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে ওইদিন সকাল ১০টার দিকে বাসায় ফেরেন কেমিলি। বাসায় ঢুকেই স্বামী এলিম সরকারের গলার নিচে একটি, পেটে ১১টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের একটি আঘাত দেখতে পান বলে প্রথমে জানান।
তিনিা বলেন, এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর পুলিশের পাশাপাশি পিবিআইও ঘটনা তদন্ত করছিল। প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। গ্র্রেফতারকৃত আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, রবিউল করিম পিন্টু আশুলিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করেন। এলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুতের মিটার লাগানোর কাজ করতে গিয়ে ক্যামিলির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বিষয়টি এলিম সরকার টের পেয়ে যান। পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এতেই বিপত্তি ঘটে। পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ার জেরেই এলিম সরকারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন কেমিলি ও তার প্রেমিক পিন্টু।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রথমেই আমরা আশুলিয়ার জামগড়া এলাকা থেকে পিন্টুকে গ্রেফতার করি। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী কেমিলিকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৯ সাল থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। ধরা খেয়ে যাওয়ার কারণেই স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী কেমিলি। যেহেতু ভুক্তভোগী এলিম আশুলিয়ায় ডিসের ব্যবসা করতেন। তাই ক্যামিলি হত্যাকান্ডের পর ঘটনাটি ডিস ব্যবসাকেন্দ্রিক ঝামেলায় ধাবিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি পারেননি তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত পিন্টুর এক বন্ধু পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম এখনই বলা যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।