পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুল পাওয়া গেছে। প্রশ্নপত্রের একটি সেটেই অন্তত ১৪টি ভুল ধরা পড়েছে। অন্য সেটে ১০০টি প্রশ্নের জায়গায় ৯৯টি প্রশ্ন দেয়া হয়েছে। একটি প্রশ্নের ২ নম্বর পৃষ্ঠায় ইংরেজি বিষয়ের প্রশ্নে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ৬ থেকে ১২ নং প্রশ্নের শূন্যস্থান পূরণের জন্য। অথচ সেখানে প্রশ্ন দেয়া হয়েছে ৬ থেকে ১১ পর্যন্ত। একইভাবে ৩ নং পৃষ্ঠায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ১৩ থেকে ১৭ নং প্রশ্নের শূন্যস্থানে সঠিক প্রিপজিশন বসাতে। সেখানে প্রশ্ন রয়েছে ১২ থেকে ১৮ পর্যন্ত। তার ঠিক পরেই ২২ থেকে ২৩ নম্বর প্রশ্ন থেকে সঠিক বাক্য নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে। অথচ ইংরেজি বিষয়ে সর্বমোট প্রশ্ন ছিল ২০টি। অ্যাকাউন্টিং অংশের ১৮ নম্বর প্রশ্নের সঠিক উত্তর বাছাইয়ে মোট পাঁচটি অপশন দেয়া হয়েছে। প্রশ্নটির সঠিক উত্তর হবে ‘ডি’ অপশন। প্রশ্নপত্রে এই অপশনটি বাংলায় লেখা হয়, ৫:৯:৫ এবং ইংরেজিতে লেখা হয়েছে ৬:৯:৫। প্রশ্নপত্রে সবচেয়ে বেশি ভুল হয়েছে মার্কেটিং বিষয়ে। এ বিষয়টিতে বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমেই প্রশ্ন করা হয়েছে। বাংলা মাধ্যমের প্রশ্নের বানানে অন্তত ৯টি ভুল পাওয়া গেছে। একটি সেটের ফিন্যান্স অংশে ৬ নম্বরের পরে ৭ নম্বর প্রশ্ন না দিয়ে ৮ নম্বর প্রশ্ন দেয়া হয়েছে। ফলে এই সেটটিতে একটি প্রশ্ন কম দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মনে করেন, কৌশল অবলম্বন করতে গিয়ে একটি সেটে একটি প্রশ্ন কম হয়েছে। বাকি ভুলগুলো হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন আসার কারণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল কাম্য না হলেও এবার যে ভুল হয়েছে তা অতীতে হয়েছে কি না জানা নেই। বিষয়টিকে সাধারণভাবে দেখার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক যেভাবে সাধারণ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করতে চেয়েছেন তা অনেকটা দায়িত্বহীনতার মধ্যে পড়ে। এক সময়ে এশিয়ার অক্সফোর্ড বলে খ্যাত এবং এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তোলার যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তার মান নি¤œগামী হওয়ার এ প্রবণতা দুঃখজনক। বলা বাহুল্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে এখনো স্বপ্নের শিক্ষাঙ্গন এখানে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষায় যদি প্রশ্নপত্রেই অমার্জনীয় ভুল হয়, তবে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়া ছাড়া আর কী গতি থাকতে পারে। সঙ্গতকারণেই আলোচ্য বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীরা ভুলের শিকার হয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের অভিভাবকরাও সন্তানদের উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। গত কিছুদিন ধরে বোদ্ধামহল দেশের শিক্ষামান নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুল তা আরো জোরালো করে তুলেছে। যে ধরনের ভুল প্রশ্ন হয়েছে তাকে কোনো বিবেচনাতেই সাধারণ ভ্রান্তি বলে চালিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। সাধারণভাবে যিনি বা যে গ্রুপ প্রশ্ন তৈরি করে থাকেন তাদের সকলেরই যোগ্যতা এক হবার কথা। যোগ্য লোকের এসব ভুলের কোনো ব্যাখ্যা দেয়া অর্থহীন। সঙ্গত বিবেচনা থেকেই এসব প্রশ্নের যারা শিকার হয়েছে তাদের নতুন করে সঠিক প্রশ্নে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়া অত্যন্ত জরুরি। সে বিবেচনায় অবিলম্বে আলোচ্য বিষয়ে হয়ে যাওয়া পরীক্ষা বাতিল করা উচিত।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অবারিত ও নিশ্চিত করা জাতীয় স্বার্থেই অপরিহার্য। মেধা যাচাইয়ের জন্য যে পরীক্ষা, তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। নকল, প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তরপত্র দেখায় অনিয়ম-দুর্নীতি ইত্যাদি কারণে মেধা যাচাই ব্যাহত হচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষাতেও যদি এ ধরনের ভুল থাকে, তবে মেধাবীরা বঞ্চিত হতে পারে। গ্রামাঞ্চল থেকে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসে তারা একটি স্বপ্ন নিয়ে আসে। তাদের পরিবারেরও একটা স্বপ্ন থাকে। তারা বঞ্চিত হলে তাদের ও তাদের পরিবারের স্বপ্নের মৃত্যু হয়। তাই এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ভুলের দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। কেন এবং কী কারণে এমনটা ঘটেছে বা ঘটতে পেরেছে অবশ্যই এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য থাকা জরুরি। এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্যও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রকৃত অর্থে ভর্তি পরীক্ষা যাতে সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টরা নজর দেবেন- এটাই প্রত্যাশিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।