পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ অর্ধশতাধিকের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষস্থল থেকে আটক করা হয়েছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১২জন নেতাকর্মী।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, নবগঠিত মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য পুলিশের কাছ থেকে নিয়মানুযায়ী অনুমতি নেয়া ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য অনুষ্ঠানের এক ঘন্টা আগে থেকেই পুলিশ শহীদ জিয়ার মাজারের আশে পাশে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে এবং নেতাকর্মীরা মাজারস্থলে জড়ো হওয়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, পুলিশ বিনা উস্কানিতে ঢাকা মহানগরীর নবগঠিত কমিটির একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে বানচাল করবার জন্যে অতর্কিতে নেতাকর্মীদের ওপর গোলাগুলি, লাঠিচার্জ এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
তবে পুলিশের তেজগাঁও জোনের ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা বিনা উসকানিতে পুলিশকে লক্ষ্য ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আত্মরক্ষার্থে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এসময় তিনিসহ ১৩জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশের ছোড়া গুলিতেই শহীদুল ইসলাম নামে এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
জানা যায়, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকেই চন্দ্রিমা উদ্যানে দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হতে থাকে। এসময় আগে থেকেই অবস্থান নিয়ে থাকা পুলিশ তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা শুরু করে, এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এই ঘটনার পর আবারও একত্রিত হয়ে মহানগর উত্তরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে জিয়ার কবরমুখী সড়কে যেতে থাকলে পুলিশ তাদের উদ্দেশ্যে টিয়ালশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ অর্ধশতাধিকের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়। এসময়ে নেতাকর্মীরা এদিক-ওদিকে ছুটতে থাকেন। পুলিশ ধাওয়া করে তাদের চন্দ্রিমা উদ্যানের সীমানার বাইরে বের করে দেয়। এতে শেরেবাংলা নগর, ফার্মগেইট এলাকার আশপাশের রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে বেশকিছু যানবাহন ভাঙচুরও করেন। ঘটনাস্থল থেকে ১২জন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি থানায় থানায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে সরকার এখন বিএনপিকে দমনে অতিমাত্রায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের নির্দয় হামলা সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। সরকারের পায়ের নীচের আর বিন্দুমাত্র মাটি অবশিষ্ট নেই বলেই তারা ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিরোধী দল দমনের মাধ্যমে নিজেদের ভয়াবহ দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী রুপ দিতে যারপর নাই মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ অতীত ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেনি বলেই তারা তাদের ভবিষ্যত ভাবতে পারছে না। আওয়ামী সরকারের সকল অপকর্মের হিসাব আদায় করতে দেশের আপামর জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। এহেন বাস্তবতায় গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবতায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিবাদ মোকাবেলায় ভূমিকা রাখতে আহবান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একই দিন যশোরে ছাত্রদলের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও সুবিধাবঞ্চিত ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় অনেক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
গ্রেফতার ১২ নেতাকর্মী: চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের সময় বিএনপি, কৃষক দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ১২ নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হলেন- বিএনপির এজিএম শামসুল হক, কৃষক দলের শাহজাহান সম্রাট, যুবদলের মো. রুবেল, ছাত্রদলের হাফিজ আহমেদ রাতুল, ইব্রাহিম, সোহাগ, রবিউল, জুম্মন, সোলেমান, মুক্তার, মুনির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মতিউর রহমান।
আহত হয়েছেন যারা: সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশতাধিকের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি। তারা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি হয়েছেন, অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- উত্তর বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির শামিমুর রহমান শামীম, উত্তরের ফেরদৌসি আহমেদ মিষ্টি, দক্ষিণের শহীদুল ইসলাম বাবুল, এড. মকবুল আহমেদ সরদার, যুবদল দক্ষিণের মো. শরীফ হোসেন, গোলাম মাওলা শাহীন, সাঈদ হাসান মিন্টু, আনন্দ শাহ, আর টি মামুন, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উত্তর যুবদলের বাপ্পি, সুমন, সুলেমান, জগলুল পাশা পাভেল, আশিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, জুয়েল, সাদেক শরীফ আহমেদ। ছাত্রদলের এমদাদুল হক ভূইয়া রাকিব, সাইফুল ইসলাম তুহিন, কাওসার মল্লিক, ইয়াসির ফেরদৌসী মুরাদ, রুবেল, ফারুক, মিন্টু, ইসরাফিল, আব্দুস সোবহান স্বপন, শহিদুল ইসলাম দিপু, শাখাওয়াত হোসেন, গোলাম আজম সৈকত। স্বেচ্ছাসেবক দলের শাহ আলম তপু, শামীম আহমেদ, নূরনবী ফরাজী মুক্তার, ডা. মাহফুজুর রহমান, আবুল কালাম, সাগর, রায়হান আহমেদ, সাহাবুদ্দিন সাবু, ইসমাইল হোসেন।
থিানা বিএনপির নেতাদের মধ্যে- মোহাম্মদ নাঈম, জামাল হোসেন টুয়েল, মো. ফিরোজ, মো. মারুফ, আল আমিন, এড. আক্তার উজ্জামান, গেলদার মো. হৃদয়, মো. কামাল হোসেন, সুমন সেরনিয়াবাদ, মো. শামিম, আনোয়ার, খলিল, রানা, রাজিব, সিএম আনোয়ার, মাহফুজুর রহমান সজিব, ইসমাইল হোসেন বাবু, আল আমিন, এল রহমান, মনিরুজ্জামান টগর, বোরহানুজ্জামান, জামান, মনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীর, রহিম। শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের শাহ আলম, কেএম সোহেল রানা, জসিম উদ্দিন, মো. রুবেল। জাসাসের মিজানুর রহমান, এসএম সাইফুল রাজু, জাকির হোসেন খালাসি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।