Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের সম্মানীর প্রায় ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:২৬ পিএম

গোপালগঞ্জে কাশালিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ সদস্যের ৫ বছরের সম্মানীর ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ।
এ ব্যাপারে মুকসুদপুর উপজেলার কাশালিয়া ইউপির ৬ জন সদস্য সোমবার (১৬ আগস্ট) গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী ৬ ইউপি সদস্যদের মধ্যে ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ ছাবু মিয়া বলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমাবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট ৪৬.০১৮.০৩২.০০.০২৩.২০১৫ (অংশ-১)-৫৩৪ নং স্মারকে ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্মানী ভাতা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে সদস্যদের সরকারী অংশ থেকে ৩ হাজার ৬ শ’ টাকা ও ইউপি অংশ থেকে ৪ হাজার ৪ শ’ টাকা দিতে বলা হয়। সে মোতাবেক আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারি অংশের টাকা পেয়ে আসছি। কিন্তু গত ৫ বছরে আমরা ইউপি অংশ থেকে কোন টাকা পাইনি। ২ বছর আগে কাশালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম মিয়া আমাদের সম্মানী ভাতা দেয়ার জন্য স্বাক্ষর নেন, কিন্তু ভাতা দেননি। তিনি স্বক্ষর নিয়ে ভাতা না দিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। আমরা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযোগকারীরা অভিযোগ পত্রে বলেছেন, জনপ্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে আমরা অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। এখন আর্থিক কষ্টে নিজেদের পরিবার পরিচালনা করাই দুরূহ হয়ে পড়েছে। চেয়ারম্যান আমাদের সম্মানী আজ-কাল দেব করে ৫ বছর কাটিয়ে দিয়েছে। ইউপি অংশের সম্মানীর একটি টাকাও চেয়ারম্যান আমাদের দেননি। ইউপি অংশে আমাদের প্রত্যেক সদস্যের বকেয়া সম্মানী পাওনা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সে হিসেবে ১২ ইউপি সদস্যের পাওনা দাড়িয়েছে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
৮নং ইউপি সদস্য সুমন্ত বাড়ৈ বলেন, আমরা চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম আগে ভাতা দেন। তারপর স্বাক্ষর দেব। তিনি ভাতা না দিয়েই স্বাক্ষর নিয়েছেন। কিন্তু আদ্যবধি কোন টাকা দেন নি। তিনি আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে ভাতার টাকা না দিয়ে প্রতারণা করেছেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম মিয়া একজন প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ৫ বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক প্রভাব খাঁটিয়েছেন। ইউপি সদস্যদের ভাতার ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা লুটে খেয়েছেন।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম মিয়া ইউপি সদস্যদের সম্মানী না দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ইউনিয়নে ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স কিংবা অন্য কোন খাত কোন ইনকাম নেই। তাই সদস্যদের সম্মানীভাতা দিতে পারিনি। একবার তাদের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা জোগাড় করতে না পেরে ভাতা দিতে পারিনি। এখানে আত্মসাতের কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে প্রভাবেরও কিছু নেই। আমর সম্মানী ভাতাও ৫ বছর ধরে বাকী রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন,এ ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। বিধি অনুযায়ী ইউপি সদস্যদের সম্মানী ভাতা দিতে হবে। ভাতা না দিয়ে আত্মসাত করার কোন সুযোগ নেই। ৫ বছর ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। অনেক দেরীতে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারপরও আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি।

 



 

Show all comments
  • [email protected] ১৮ আগস্ট, ২০২১, ১:১৩ এএম says : 0
    এ একটা জাতীয় পর্যায়ের দুর্নীতি বাজ এবং স্বীকৃতি প্রাপ্ত চোর
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ