Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীতে ৮ঘন্টার মধ্যে শিশু নাফিজ হত্যার রহস্য উদঘাটন

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২১, ৯:৪৯ পিএম

সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া ইউনিয়নের আবিরপাড়া এলাকার মো. আবদুল্লাহ আল নাফিজ (৮) হত্যার রহস্য ঘটনার ৮ঘন্টার মধ্যে উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যাকান্ডে জড়িত সৎ মাকে গ্রেফতার করে বিচারিক আদালতের কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১ টি বালিশ, ১ টি কাঁথা , এক বোতল ভিক্সল। পারিবারিক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কলহকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সোনাইমুড়ী থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো.শহীদুল ইসলাম (পিপিএম)।

গ্রেফতারকৃত, নূরজাহান আক্তার নুপুর (২৩) মামলার বাদী উপজেলার সোনাইমুড়ীর আমিশা পাড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের আবির পাড়া এলাকার আজগর বেপারী বাড়ির মো.ওমর ফারুকের (৩৩) দ্বিতীয় স্ত্রী।

পুলিশ সুপার মো.শহীদুল ইসলাম জানান, গত শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোন এক সময়ে নূরজাহান আক্তার নুপুর তার স্বামীর আগের ঘরের শিশু সন্তান মো. আবদুল্লাহ আল ওরফে নাফিজকে হত্যা করে। খবর পেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ গত রোববার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহতের সৎ মা নুপুরকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর আটককৃত আসামি নুপুরকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে ভিকটিম নাফিজকে ঠিকমত খাওয়া দাওয়া না দিয়ে ঘটনার দিন বিকালে ঘরের মাঝ খানের রুমে খাটের ওপরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করিলে সে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। এরপর সে তাহার ওপরে একটি কাঁথা দিয়ে ঢেকে দেয়। পরে সে পাশের মামা শ্বশুরের ঘরে গিয়ে গল্পগুজব করছিল। তাছাড়া বিবাদী হত্যার ঘটনার সহিত জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করিয়া সিআরপিসি আইনের ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোকোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

তিনি আরও জানান, ফারুকের সাথে তার প্রথম স্ত্রীর সাথে ২০১৮ সালে ডিভোর্স হয়ে গেলে নাফিসকে তার বাবা তার কাছে নিয়ে আসে। প্রথম স্ত্রীকে তালাক প্রদানের কয়েকদিন পর ফারুক নুপুরকে বিয়ে করে। বিবাহের সময় ফারুক দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে তার আগের ঘরের একটি ছেলে থাকার কথা গোপন রাখে । দ্বিতীয় স্ত্রী প্রথম থেকেই তার স্বামীর প্রথম সংসারের ছেলে নাফিজকে সহ্য করতে পারতেন না। তাকে অকারণে মারধর করত। পরবর্তীতে ফারুক তার ছেলে সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়ার হানারবাগ এতিমখানায় রেখে লেখাপড়া করায় । ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে নাফিজ বাড়িতে আসলে নুপুর অকারণে তাকে মারধর ও গালমন্দ করত । গত শনিবার দুপুরের খাবার খেয়ে নাফিজ ঘরের মধ্যে রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। দুপুর ৩টার দিকে ফারুক ছেলেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিয়ে সৎ মায়ের সাথে ঘরে থাকার জন্য বলে সে পুকুরে মাছের খাবার দিতে যায় । পরবর্তীতে রাত রাত সাড়ে ৮টার দিকে সে বাড়িতে এসে ছেলেকে ডাকাডাকি করলে তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে প্রবেশ করলে ছেলের মরদেহ খাটের ওপর দেখতে পায় । পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত আসামিকে আটক করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।

এ সময় প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, সোনাইমুড়ী থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম ও সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নোয়াখালী

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ