Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত গভর্নর কুমোর পদত্যাগ চান বাইডেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো একাধিক নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে স্বাধীন তদন্তে উঠে এসেছে। এ ঘটনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি মনে করেন, কুমোর পদত্যাগ করা উচিত। তবে কুমো এখনো বলছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তাই তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তারকা রাজনীতিবিদের মধ্যে কুমো অন্যতম। তিনি একাধিক নারীকে যৌন হয়রানি এবং ফেডারেল ও অঙ্গরাজ্যের আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে স্বাধীন তদন্তে পাওয়া গেছে। তাকে অভিশংসনের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। একাধিক দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনের মামলা তাকে মোকাবিলা করতে হতে পারে। একের পর এক নারীর অভিযোগের পর গত মার্চ মাসে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লাটিশিয়া জেমস গভর্নর কুমোর বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার ঘোষণা দেন। কুমো শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে একাধিক নারীর আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। ৩ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের তদন্ত দলের তদন্তে পাওয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ১৬৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল লাটিশিয়া জেমস বলেন, স্বাধীন তদন্তের পর তদন্ত দল একমত হয়েছে যে গভর্নর কুমো একাধিক নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা নারীদের বিরুদ্ধে কুমো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত তিন মাসব্যাপী তদন্ত দল অভিযোগকারী নারীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তদন্ত দলের পক্ষ থেকে গভর্নর কুমোকেও ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন সাক্ষ্য ও আলামতের বিস্তারিত তুলে ধরে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুমো অঙ্গরাজ্যের বর্তমান ও সাবেক নারী কর্মীদের যৌন হয়রানি করেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, সাহসী নারীরা এগিয়ে না এলে কিছুতেই তদন্ত করা সম্ভব হতো না। তদন্ত দলের অন্যতম সদস্য আইনজীবী জুন কিম বলেছেন, কোনো কোনো নারীকে কুমো অপ্রত্যাশিতভাবে স্পর্শ করেছেন। এমনকি তিনি অভিযোগকারী কোনো কোনো নারীর শরীরের স্পর্শকাতর অংশে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ স্পর্শ করেছেন, যা ছিল অভিযোগকারী নারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। পীড়নের শিকার নারীরা কুমোর আচরণে বিরক্ত হয়েছেন। অপমানিতবোধ করেছেন। তদন্তে তা উঠে এসেছে। কুমোর বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত দলের সদস্য হিসেবে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যবিষয়ক আইনের বিশেষজ্ঞ অ্যানি ক্লার্কও কাজ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর গভর্নর কুমো এক বিবৃতিতে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনা যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, প্রকৃত চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি আবার দাবি করেন, তিনি কখনো কোনো নারীকে অশালীনভাবে স্পর্শ করেননি। অনাকাক্সিক্ষত যৌনতামূলক কোনো কাজ তিনি করেননি। কুমো বলেন, ‘আমি ৬৩ বছর বয়সী একজন মানুষ। আমার সারা জীবনই জনসমক্ষে কেটেছে। আমি কখনো এমন লোক নই।’ কুমো নিজের পক্ষে সাফাই দিতে ৮৫ পৃষ্ঠার একটি বার্তা প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা যায়, তিনি নারী-পুরুষদের নানাভাবে চুমু দিচ্ছেন। স্পর্শ করছেন। কপাল, থুতনি ও হাতে চুমু দেয়া তার স্বভাবজাত বলে দাবি কুমোর। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, গভর্নর কুমোর পদত্যাগ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। কুমোর সঙ্গে কথা হয়নি এবং প্রতিবেদন নিজে দেখেননি উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, অঙ্গরাজ্য আইনসভায় গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব আনা হচ্ছে বলে তিনি জেনেছেন। সূত্র : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাইডেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ