কলম্বোয় বৃহস্পতিবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তিন ম্যাচের সিরিজটি স্বাগতিকরা জিতে নিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম সিরিজে এসে ভারতকে হারাতে পারল তারা।
লঙ্কান বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। দুই অঙ্কে যাওয়া তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে সর্বোচ্চ কুলদিপ যাদবের ২৩। তাতে ৮ উইকেটে ৮১ রান তোলে তারা। এই রান ৩৩ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্য তাড়া করে ফেলে দাসুন শানাকার দল।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা। টি-টোয়েন্টিতে যা ভারতের বিপক্ষে যেকোনো বোলার সেরা বোলিং। পরে ব্যাট হাতে ৯ বলে ১৪ রান করে তিনিই ম্যাচ সেরা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ক্রুনাল পান্ডিয়ার সংস্পর্শে আসায় ভারতের আরও আটজন ক্রিকেটারকে যেতে হয়েছে আইসোলেশনে। একাদশের ভারসাম্য রাখতে হিমশিম খাওয়া ভারত আগের ম্যাচেই হেরেছিল ১৩২ রানে গুটিয়ে গিয়ে। ভুবনেশ্বর কুমারকেও আসতে হয়েছে ছয়ে ব্যাট করতে।
এবার তারা ফিরিয়ে আনল টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোরের স্মৃতি। ৬৩ রানেই ৮ উইকেট হারানোর পর নিজেদের সর্বনিম্ন ৭৪ রানের স্কোরের রেকর্ডটা ভাঙতে বসেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত কুলদীপ যাদবের ২৮ বলে ২৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে সেটি এড়িয়েছে ভারত। টি-টোয়েন্টিতে এটি এখন ভারতের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।
নিজেদের একটা রেকর্ড আজ ঠিকই ভেঙেছে শিখর ধাওয়ানের দল। ২০ ওভার ব্যাট করে এর আগে কখনোই এত কম রানে আটকে যায়নি তারা। সর্বশেষ ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নটিংহ্যামে ২০ ওভার ব্যাট করেও ভারত তুলতে পেরেছিল ১১৮ রান। সেবারও ৮ উইকেট হারিয়েছিল তারা।
সব মিলিয়ে ২০ ওভার ব্যাট করে সবচেয়ে কম রান তোলার রেকর্ডটি ইরানের। গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে পুরো ওভার খেলেও ৬১ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা। অবশ্য আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশগুলোর মাঝে এমন রেকর্ডে ভারতের ওপর আছে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১০ সালে পোর্ট অব স্পেনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা আটকে গিয়েছিল ৭৯ রানেই।
এদিন ভারতের হয়ে দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন মাত্র তিনজন। সর্বোচ্চ জুটিটিও ১৯ রানের- ষষ্ঠ উইকেটে ভুবনেশ্বর কুমার ও কুলদীপের। ভারতের ব্যাটিং ধসিয়ে দেওয়ার মূল কাজটা করেছেন লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৪ ওভারে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি মাত্র ৯ রান দিয়ে। শ্রীলঙ্কার হয়ে ভারতের বিপক্ষে এর আগে কখনোই কোনো বোলার এত কম রান দিয়ে এত উইকেট নেননি।
হাসারাঙ্গার উজ্জ্বল দিনে ২০ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। একটি করে নিয়েছেন দুষ্মন্ত চামিরা ও রমেশ মেন্ডিস। এ ছাড়া ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়েছেন আকিলা দনাঞ্জয়া।
ছোট লক্ষ্য তাড়াতেও শুরুতে হোঁচট খেয়ে বসেছিল শ্রীলঙ্কাও। ৩৫ রানে খুইয়ে বসে দুই ওপেনারকে। পরে দনঞ্জয়া ডি সিলভার দৃঢ়তায় জয়ের দিকে এগুতে থাকে স্বাগতিকরা। সেই সময় ফের নিজের ও লঙ্কান তৃতীয় উইকেট সামারাবিক্রমার শিকারী করেন রাহুল চাহার। সেটি কেবল উৎসব বিলম্বিতিই করেছে, দমাতে পারেনি।